রবিবার ● ১৫ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের বসত ঘরে আগুন
প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে নিজের বসত ঘরে আগুন
উখিয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের উখিয়ায় পি.এফ জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নিজের ঝুঁপড়ি ঘরে নিজে আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের উত্তর বড়বিল এলাকার এ ঘটনা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করতে দেখা গেছে। পাওয়া গেছে পরষ্পর বিরোধী বক্তব্য।
১৪ নভেম্বর সরেজমিনে জানা যায়, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের মাস্টার শফিকুর রহমানের দীর্ঘদিনের সাথে একই এলাকার রহিম আলী মধ্যে পি.এফ জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
দীর্ঘদিনের ভোগ দখলীয় জমিতে জোর পূর্বক দালান নির্মাণে কাজে বাঁধা দিলে রহিম আলী নিজের ঘর থেকে সমস্ত মালামাল বের করে নিজেই অগ্নিসংযোগ করে মিথ্যা মামলা ফাঁসানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক মোহাম্মদ ইসমাইল।
ইসমাইল বলেন, রহিম আলী স্থানীয় বিচার শালিস কিছুই মানে না। স্থানীয় প্রভাবশলী দুই কুচক্রী মানুষের ইন্ধনে পরিকল্পিত ভাবে এই ষড়যন্ত্র করছে বলে তিনি দাবী করেন।
বয়োবৃদ্ধ মতিউর রহমান নামে স্থানীয় এক গ্রামবাসী জানিয়েছেন, মূলত: এটা পূর্ব থেকে মাস্টার শফিকুর রহমান গংয়ের জায়গা। এটা নিয়ে সম্প্রতি বিরোধ সৃষ্টি হলে দুইজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি মীমাংসার চেষ্টা করে। কিন্তু রহিম আলী তা না মেনে জোর পূর্বক দালান ঘর নির্মাণ শুরু করে। খবর পেয়ে, জায়গার মালিক মাস্টার শফিকুর রহমান গং দালান নির্মাণে বাঁধা প্রদান করে চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে মতিউর রহমান বলেন, দালান নির্মাণ কাজ বাঁধা দেয়ার কিছুক্ষণ পরপরই নিজ বাড়িতে নিজেই আগুন ধরিয়ে দেয় রহিম আলী ।
খুইল্যা মিয়া আরেকজন জানায় রহিম আলী প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে নিজের ঘর নিজেরা আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষ হয়রানি করার জন্য ঘৃণ্য কাজটি করছে।
নামে প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, পুড়ে যাওয়া ঘরে কোন ফার্ণিচার কিংবা মালমালের কোন বিন্দু মাত্র চিহ্ন নেই। হাড়ি-পাতিল পুড়ে গেলে কালো হয়নি। আগুন লাগলে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে ফোন না করে তারা প্রথমে পুলিশ স্টেশনে কেন গেল ? নিশ্চয় পরিকল্পিত ভাবে সব মালামাল সরিয়ে নিজের বাড়িতে নিজে আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাসাঁনোর জন্য মিথ্যা অভিযোগটি করেছে।
অভিযুক্ত উত্তর বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শফিকুর রহমান জানান, জায়গা জমির বিরোধ থাকলেও ঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আমাদের পরিবারের কেউ জড়িত নয়। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ।
অপরদিকে বাড়ির মালিক ও অভিযোগকারী রহিম আলী বলেন, আমার বাপ-দাদার দিনের শত বছরের ভোগ দখলীয় পি.এফ জায়গার উপর নির্মাণাধীন সেমি পাকা ঘরটি ভেঙ্গে দেয় এবং ২০/২৫জনের স্বশস্ত্র সংঘবদ্ধ দল মাষ্টার শফিকুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, ফরিদ আলম, নুর মোহাম্মদ প্রকাশ্যে দিন-দুপুরে আমাদেরকে মারধর করে স্বর্ণালংকার লুট করে এবং কাঁচা বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে চলে যায়। আমি ন্যায় বিচারের স্বার্থে থানায় আশ্রয় নিই।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ও তদন্ত কর্মকর্তা কার্তিক পাল বলেন, তবে এখানে দুই পক্ষের জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের নিয়ে সুযোগ নিচ্ছে তৃতীয় পক্ষ। কোথাও আকস্মিক ভাবে বাড়ি ঘর পুড়ে গেলে প্রথমে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়ার কথা কিন্তু এক্ষেত্রে তারা খবর দিয়েছে পুলিশে। তাছাড়া পুড়ে যাওয়া ফার্ণিচার কিংবা কাপড়-চোপড় পুড়ে থাকার কথা। সে রকম কিছু আমাদের চোখে পড়েনি। তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।