সোমবার ● ১৬ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » কচুরিপানায় থমকে গেছে কৃষকের স্বপ্ন
কচুরিপানায় থমকে গেছে কৃষকের স্বপ্ন
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: শষ্য ভান্ডার খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে এবারের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ভেসে আসা কচুরিপানার প্রাদুর্ভাবের কারণে থমকে গেছে কৃষকের স্বপ্ন। এসব কচুরিপানা পরিস্কার করতে কৃষকরা হিমশিম খাচ্ছে। আসন্ন বোরো মৌসুমে ধানচাষ নিয়ে তারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জানা যায়, এবারে আত্রাইয়ে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় কৃষকের সকল স্বপ্ন ম্লান হয়ে যায়। একাধিকবার তারা আমন চাষের প্রস্তুতি নিয়েও ব্যর্থ হন। পরপর দু’বারের বন্যায় তাদের সকল স্বপ্ন তছনছ হয়ে যায়। উপরোন্ত এ বন্যায় নদীর বিভিন্ন বাঁধের ভাঙন দিয়ে প্রচুর পরিমান কচুরিপানা প্রবেশ করে মাঠে। মাঠে এসব কচুরিপানা প্রবেশের পর তা আর বের হয়নি। ফলে এ কচুরিপানাগুলো আবদি জমিতে আটকা পড়ে যায়। উপজেলার কাঁন্দওলমা, বাঁকিওলমা, বিপ্রবোয়ালিয়া, পবনডাঙ্গা, নবাবেরতাম্বু, খনজোর, মধুগুড়নই, ভোঁপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মাঠ ঘুরে দেখা যায় ওই মাঠগুলোতে প্রচুর পরিমান কচুরিপানা আবাদি জমিতে আটকে পড়েছে। ফলে এসব কচুরিপানা পরিষ্কার করে জমিগুলো বোরো চাষের উপযোগী করতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কাঁন্দওলমা গ্রামের কৃষক ওহিদুর রহমান বলেন, আমাদের অনেক জমিতে কচুরিপানা আটকে পড়েছে। বিশেষ করে যে জমিগুলোতে আমরা বোরো বীজতলা তৈরি করতাম এ জমিগুলোও এখন কচুরিপানার নিচে পড়ে রয়েছে। এ কচুরিপানা পরিষ্কার করতে আমাদের অতিরিক্ত অনেক অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক মো. আজাদ প্রামানিক বলেন, আমাদের মাঠে যেমন কচুরিপানা, তেমনি ঘাস জন্মেছে। কচুরিপানা ও ঘাস মারা ওষুধ দিয়ে কোন কাজ হচ্ছে না। এখন বোরো চাষের উপযোগী করতে আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৩ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। এভাবে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় করে আমরা আবাদ করি। কিন্তু সময়মত আমাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় আমরা লোকসানের শিকার হই।
এ ব্ষিয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, আত্রাই বোরো ধানের জন্য বিখ্যাত একটি এলাকা। এ উপজেলায় প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়। এবারে বন্যায় কৃষকের অপূরনীয় ক্ষতি হয়েছে। সেই সাথে আবাদি জমিগুলোতে কচুরিপানা আটকে থাকায় আরও তাদের জন্য আর্থিক ক্ষতিকর। তবে তাদের সরকারীভাবে কিছুটা সহযোগিতা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকদের প্রণোদনা সহায়তার আওতায় নেয়া হয়েছে।