সোমবার ● ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » পতাকার উত্তোলন নীতিমালা বাস্তবায়নে প্রশাসনের নজরদারী প্রয়োজন
পতাকার উত্তোলন নীতিমালা বাস্তবায়নে প্রশাসনের নজরদারী প্রয়োজন
অন্তর মাহমুদ,মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মাটিরাঙ্গায় পালন করা হয়েছে মহান ২১ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস৷
১৬ ডিসেম্বর ও ২৬শে মার্চ’র মতো ২১শে ফেব্রুয়ারীতে সরকারী প্রতিষ্ঠান ছাড়াও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানে দেশ জুড়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার নিয়ম রয়েছে ৷ মাটিরাঙ্গা উপজেলায় সেই সব নিয়মনীতি কতটা পালন হয়েছে তার চিত্র ফুটে উঠেছে এবারের ২১ ফেব্রুয়ারীতে ৷
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে,নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে উপজেলা পরিষদের সামনের প্রধান সড়কে রাত সোয়া ১২টার দিকে ব্যবসায়ীদের পক্ষে পতাকা টানানো হয়৷ অন্য দিকে শহরের বিভিন্ন প্রান্তরে ব্যবসায়ী ২ থেকে ৩ হাত দন্ডের মধ্যে কোন রকম পতাকা বেঁধে রাখতে দেখা গেছে ৷ এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা অনেকে বলেন, পতাকার টানানোর আবার নিয়ম কিসের ? বছরের পর বছর এইভাবেই তো পতাকা উত্তোলন করে আসছি ৷ কই কোন সমস্যা তো দেখছিনা ৷
মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মূলপর্ব হচ্ছে শহীদ মিনারে রাত ১২টা ১ মিনিটে পুষ্পমাল্য অর্পণ,শহীদদের উদ্দেশ্যে ১ মিনিট নীরবতা পালন, শহীদ দিবসে সূ্র্যেদয়ের সাথে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে পতাকা অর্ধনমিত ভাবে উত্তোলন করা এবং সুর্যাস্তের সাথে সাথে পতাকা নামিয়ে ফেলা ৷
এ দিকে পতাকা টানানোর বিষয়ে সাধারণ মানুষকে স্বচ্ছ ধারণা প্রদান ও সচেতন করার দায়িত্ব প্রশাসনের উল্লেখ করে ভাষা দিবসের আলোচনা সভায় মুক্তিযোদ্ধারা পতাকার কিছু নির্দেশনা আলোকপাত করেন৷ তাদের মধ্যে-পতাকার আদর্শ মাপ ১০:৬ ৷ সঠিক মাপ ও সঠিক রঙ এর পতাকা তৈরি করে সোজা ১২ হাত লম্বা দন্ডের চূড়ায় উড়াতে হবে ৷
সুর্যান্তের পূর্বে পতাকা নামাতে হবে,পতাকা শোক দিবস ছাড়া অর্ধনমিত উড়ানো যাবে না৷
২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে, ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা যাবে৷ এ ছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারী ভাষা দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ভাবে উত্তোলন করা হবে৷ মোটর গাড়ী, নৌযান এবং উড়োজাহাজ ব্যতীত অন্যান্য ক্ষেত্রে শুধুমাত্র সূর্যোদয় হইতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ‘পতাকা’ উত্তোলিত থাকিবে৷ যেক্ষেত্রে মোটর গাড়ীতে ‘পতাকা’ প্রদর্শন করা হয়, সেইক্ষেত্রে গাড়ীর চেসিস অথবা রেডিয়েটর ক্যাপের ক্ল্যাম্পের সহিত পতাকা দন্ড দৃঢ়ভাবে আটকাইতে হইবে৷ পতাকায় কোন কিছু লিখে বা অঙ্কন করে উড়ানো যাবে না৷ ভবনে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো ১০ ফুট/৬ ফুট, ৫ ফুট/৩ ফুট, ২.৫ ফুট /১.৫ ফুট ৷
মোটরগাড়ীতে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো ১৫ ইঞ্চি/৯ ইঞ্চি, ১০ ইঞ্চি/৬ ইঞ্চি ৷
আমাদের দেশের আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই ৷ আপনার বাড়ির ছাদে, গাড়ির পাশ্বে পচে গলে নষ্ট হলেও, অবমাননা করা হলেও কেউ কিছু বলতে আসবে না, কারণ আমাদের কাছে এইধরনের বিষয় তুচ্ছ ৷ কিন্তু আসলেই কি তাই ?
ফিনল্যান্ড, জার্মানি এবং ডেনমার্কে জাতীয় পতাকার অবমাননা অবৈধ ও শাসত্মিযোগ্য অপরাধ৷ আরব বিশ্বের অনেক দেশেই জাতীয় পতাকায় ইসলামিক স্বাক্ষর রয়েছে ৷ এসব দেশে জাতীয় পতাকার মর্যাদাকে অগ্রাধিকার দেয়া হয় এবং জাতীয় পতাকার নূনতম অবমাননাকে ইসলামের অবমাননা হিসেবে বিবেচিত হয়৷ ভারতেও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিখ্যাত ব্যক্তিকে পতাকার অবমাননার জন্য শাস্তি পেতে হয়েছে ৷ আমাদের দেশের মানুষ কেন হবে উদাসিন ? নীতিমালা অবমাননার শাস্তি ২০১০ সালের জুলাই মাসে এই আইন সংশোধিত হয় ৷ এই সংশোধনীতে সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত শাস্তি এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে বিধান রাখা হয় ৷