রবিবার ● ২৯ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মানিকছড়িতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
মানিকছড়িতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার মানিকছড়িতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত মডেল কেয়ারটেকার এর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যাবহার ও একাধিক ভূয়া কেন্দ্র হতে বেতন ভাতা উত্তোলন করে সরকারি অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
মো. আবুল কাশেম (ভারপ্রাপ্ত)মডেল কেয়ারটেকার নিজেকে মডেল কেয়ারটেকার হিসেবে দাবি করে আসছেন যা তার নামের ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্টসহ প্রমানিত।
জানা যায়, উপ-পরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন খাগড়াছড়ি বরাবরে মো.ফয়েজ উল্লাহ অভিযোগে উল্লেখ করেন, করোনার কয়েক মাস পূর্বে তিনি লেমুয়া জামে মসজিদে কেন্দ্র শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। মো. কাশেমের কথামত শিক্ষক হিসেবে প্রতি মাসের বেতন উত্তোলন করে তাকে প্রদান করলে তিনি মাসিক ১থেকে দেড় হাজার টাকা করে ফয়েজ উল্লাহকে প্রদান করতেন। এভাবে ফয়েজ উল্লাহ প্রায় ২৪হাজার টাকা পাওনা থেকে যান। ফলে মো. কাশেম পাওনা টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল হিসেবে ফয়েজ উল্লাহ থেকে একটি ব্লাংক চেক নিয়ে রাখেন। চেক কেলেংকারীর বিষয়ে তৎকালীন ইফা খাগড়াছড়ির উপ-পরিচালক মো.ইউসুফ আলী তদন্ত সাপেক্ষে ফয়েজ উল্লাহ’র নিকট থেকে নেয়া ব্লাংক চেক ফেরত ও পাওনা টাকা হতে ২০হাজার টাকা বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেও তা অমান্য করেন ভারপ্রাপ্ত মডেল কেয়ারটেকার মো. কাশেম। অদ্যাবধি তিনি চেক ও টাকা প্রদান করেন নাই।
এদিকে, মানিকছড়ির মধ্য লেমুয়া সমাজবাসীর গণস্বাক্ষরে উপ-পরিচালক ইসলামিক ফাউন্ডেশন খাগড়াছড়ি’র বরাবরে সাবেক ইমাম মো. আবুল কাশেমের নামে সহজ কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রটি বর্তমান নিয়োগ প্রাপ্ত ইমাম’র নামে বরাদ্দ দেয়ার আবেদন করায় নানা অনিয়ম চোখে পড়ে।
অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, বিগত ২৫জুন’২০২০ ঈদুল ফিতরের নামাজের পর নানা অনিয়মের কারণে লেমুয়া এলাকাবাসী মো. কাশেমকে ইমামতি ও কেন্দ্রের শিক্ষক পদ থেকে অব্যাহতি দেন। নিজে ইমামতির দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার পর কেন্দ্র শুণ্য হলে ফিল্ড সুপার ভাইজার ইউসুপ বাহারের সহযোগিতায় তার কেন্দ্রটি বহাল দেখিয়ে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছেন।
চেঙ্গুছড়া গুচ্ছগ্রাম জামে মসজিদের ইমাম নুরুজ্জামান গত ১৭আগষ্ট’১৯ইং থেকে মানিকছড়ি এলাকা ত্যাগ করে মাটিরাঙ্গার পাঞ্জাবি টিলা এলাকায় চাকরির সুবাদে অবস্থান করছেন। কাশেমের যোগসাজশে মানিকছড়িতে ইফা’র সহজ কোরআন শিক্ষা কেন্দ্র নিজের নামে দেখিয়ে প্রতি মাসে বেতন ভাতা উত্তোলন করে ভাগাভাগী করে আসছেন।
এসকল অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত মডেল কেয়ারটেকার মো. কাশেমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমি ইসলামিক ফাউণ্ডেশন মানিকছড়ি উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মডেল কেয়ারটেকার।
ফয়েজ উল্লাহ’র নিকট আমি টাকা পাওনা রয়েছি। তাই ২০হাজার টাকা দেইনি। চেক নিতে তাকে অফিসে আসতে বললে সে আসেননি।
ভূয়া কেন্দ্রের বিষয়ে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। কাকে কোথায় কখন নিয়োগ দেয়া হবে তা কর্তৃপক্ষের ব্যাপার।
তৎকালীন উপ-পরিচালক মো. ইউসুফ আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, ফয়েজ উল্লাহর সাথে মো. কাশেমের বেতন ভাতা নিয়ে চেক কেলেংকারীর বিষয়ে আমি এলাকায় গিয়ে তদন্ত করেছি। চেক ও নগদ ২০হাজার টাকা ফয়েজ উল্লাহকে পরিশোধে ফিল্ড অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কারো ব্যাক্তিগত চেক অন্য কেউ রেখে দেয়া অন্যায়।
মো. আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের শিক্ষক ও ভারপ্রাপ্ত মডেল কেয়ারটেকার পদে বহাল থাকায় উর্ধতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামানা করেছেন এলাকাবাসী। চলবে……