সোমবার ● ৩০ নভেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » রাউজানে দাবী আদায়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের ২য় দিনের কর্মবিরতি
রাউজানে দাবী আদায়ে স্বাস্থ্য সহকারীদের ২য় দিনের কর্মবিরতি
আমির হামজা, রাউজান :: স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক এবং স্বাস্থ্য সহকারীদের ১৩ তম গ্রেড প্রদান করে নিয়োগবিধি সংশোধনসহ বেতন বৈষম্য নিরসনের দাবিতে সারাদেশের মতো বাংলাদেশ হেলথ্ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা শাখা কর্ম বিরতি কর্মসূচী পালন করেছে। গতকাল রবিবার সকাল থেকে দুপুরে পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত কর্ম বিরতি শেষে এক সমাবেশ করেন তাঁরা। নিয়োগ বিধি পরিবর্তন, গ্রেড পরিবর্তন, এবং টেকনিক্যাল পদ মর্যাদার দাবীতে সারা দেশের ন্যায় চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলায়ও টিকাদান কার্যক্রম সহ সকল ধরনের কাজ থেকে স্বাস্থ্য সহকারী, স্বাস্থ্য পরিদর্শক কর্মবিরতি সহ অবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের ১৪ উপজেলা রাউজান, রাংগুনিয়া, হাটহাজারি, ফটিকছড়ি, সীতাকুণ্ড, মীরসরাই, সন্দীপ, বোয়ালখালী, পটিয়া, বাশঁখালি,আনোয়ারা, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগড়া সহ সকল উপজেলায় কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচী চলছে। চট্টগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য সহকারী এসোসিয়েশন এর সভাপতি মোঃ মহিউদ্দীন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিজান উদ্দীন স্বাক্ষরিত প্রেস ব্রিফিং এ কথা জানান তাঁরা।
গতকাল শনিবারও কর্ম বিরতি পালন করে প্রত্যেক উপজেলার শতাধিক স্বাস্থ্য সহকারী। রাউজানে রোববারের কর্মবিরতি ও সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনটির চট্টগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মিজান উদ্দিন, কেন্দ্রীয় দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ হুমায়ূন রশিদ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈকত দাশ, স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ সাহাব উদ্দীন প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন ১৯৯৮ সালে স্বাস্থ্য পরিদর্শক, সহকারি স্বাস্থ্য পরিদর্শক ও স্বাস্থ্য সহকারীদের বেতন বৈষম্য নিরসনের ঘোষণা দিলেও এতদিনেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। আমাদের পেছনের গ্রেডে যারা ছিলনা, তারাও এখন আমাদের চেয়ে এগিয়ে। অথচ করোনাকালীন সময়েও আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছি। এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এই কর্ম বিরতি অব্যাহত থাকবে।
বিনা পয়সায় জিডি, সাথে চকলেটে আপ্যায়ণ এএসপির উদ্যোগ
রাউজান :: মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই কোনরকম খরচ ও হয়রানি ছাড়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে পারছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান উপজেলার সাধারণ মানুষ। একই সঙ্গে আগত সেবা প্রার্থীদের আপ্যায়ণও করা হয় চকলেট দিয়ে। জনবান্ধব এই উদ্যোগটি গ্রহণ করেছেন চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (রাউজান- রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) মো. আনোয়ার হোসেন শামীম।
সার্কেল কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে আসা সেবাপ্রার্থীদের নিকট হতে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে অনেক পুরনো। সাধারণ মানুষকে এসব হয়রানি থেকে মুক্ত করতেই সার্কেল এএসপির উদ্যোগে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও রাউজান থানায় এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এখন থেকে যে কোন সেবাপ্রার্থী ব্যক্তি থানায় উপস্থিত হয়ে এই ফর্ম সংগ্রহ ও পূরণ করার মাধ্যমে কোন টাকা খরচ ছাড়াই জিডি করতে পারছেন। যারা এই ফর্ম পূরণ করতে অপারগ এবং যারা শিক্ষক, নারী, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী, অথবা সিনিয়র সিটিজেন (ষাটোর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তি), তাদের জিডি ফর্মটি পূরণ করার কাজটি করে দিবেন থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা নিজে।
গত বৃহস্পতিবার অনার্স পরীক্ষার সনদ হারানোর জিডি করতে রাউজান থানায় আসা চট্টগ্রামের হাজী মুহম্মদ মহসিন কলেজের শিক্ষার্থী কাজী রবিউল হোসাইন রাকিব বলেন ভাবতেও পারিনি এত ঝামেলামুক্তভাবে এবং দ্রুত জিডি করা যায়। পুলিশ যদি এই কাজ অব্যাহত রাখতে পারে তাহলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবার পাশাপাশি পুলিশের সম্মানও বাড়বে।
মোবাইল হারানোর জিডি করতে মুরগি বিক্রি করে ৫০০ টাকা নিয়ে রাঙ্গুনিয়া থানায় এসেছিলেন গৃহবধূ কোহিনূর বেগম। তিনি বলেন জিডি করতে এক টাকাও লাগেনি । উল্টো পুলিশ জিডির ফর্ম পূরণ করে দিয়েছে। চকলেটও দিছে হাতে।
রাউজান থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন সার্কেল স্যারের উদ্যোগ রোজ বাস্তবায়ন হচ্ছে থানায়। এতে সেবা প্রার্থীরা দারুণ খুশি।
এ প্রসঙ্গে উদ্যোগ গ্রহণকারী এএসপি মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন মানুষের জন্য হয়রানিমুক্ত পুলিশি সেবা নিশ্চিত করতেই উদ্যোগটি নেওয়া হয়েছে। জনবান্ধব পুলিশের যে অগ্রযাত্রা, তারই অংশ হিসেবে তিনিসহ থানায় কর্মরত অন্য সকল কর্মকর্তা ও সদস্যদের নিজস্ব অর্থায়নে সাধারণ মানুষের জন্য এই জিডির ফর্ম সরবরাহ ও চকলেট উপহারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।