বুধবার ● ২ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » আইন অমান্য করে ঝিনাইদহের অবৈধ ইট ভাটায় প্রতিদিন পুড়ছে দেড় হাজার মণ কাঠ
আইন অমান্য করে ঝিনাইদহের অবৈধ ইট ভাটায় প্রতিদিন পুড়ছে দেড় হাজার মণ কাঠ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: আইন অমান্য করে ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ইটের ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। দেখার কেউ নেই, হাজার হাজার মণ কাঠ পাহাড়ের মত উঁচু করে রেখে একে একে পুড়িয়ে ফেলা হচ্ছে। শৈলকুপা উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ২২টির মত ইটভাটা, এর মধ্যে ৪টি ইটভাটায় ড্রাম চিমনি রয়েছে, বাকিগুলো ফিক্সড চিমনির। শৈলকূপায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র পায়নি কোনো ইটভাটা। এসব ভাটায় প্রতিদিন আনুমানিক দেড় হাজার মণ কাঠ পুড়বে বলে জানা গেছে। সরোজমিন ঘুরে দেখা যায়,ইট ভাটার মৌসুম শুরু হওয়ায় কাঠ পোড়ানোর প্রতিযোগীতায় নেমেছে ভ্টাা মালিকরা। উপজেলার প্রতিটি ভাটায় প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়ে থাকে। এভাবে প্রতিদিন কাঠ পুড়তে থাকলে পরিবেশের উপর মারাত্বক পভাব পড়বে জেনেও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্তা ব্যক্তিরা উদাসীন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে প্রকাশ্যে কিভাবে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে তা নিয়ে জনমনে নানান প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ভাটা মালিক আব্দুল মান্নান জানান,একটি ভাটায় জলানি হিসেবে প্রতিদিন গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ ব্যবহার হয়ে থাকে। তার ভাটায় প্রতিদিন ২০০ মণ কাঠ লাগে। তবে কয়লা দিয়েও ইট পোড়ান বলে জানান তিনি। হাটফাজিলপুর এলাকার এক ইটভাটার মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তার ভাটায় প্রতিদিন ৩০০ মণ জলানি কাঠ লাগে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, সব ভাটাতে কাঁচা ইট পোড়ানোর জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে হাজার হাজার মণ কাঠ। ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ পোড়ানোর নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের যশোর আঞ্চলিক অফিসের উপপরিচালক হারুন অর রশীদ জানান, ভাটায় কাঁচা ইট পোড়ানোর কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। জিকজার ভাঁটা ছাড়া সরকারিভাবে কোন ভাটার অনুমোদন দেওয়া হয় না। তিনি জানান, ২০১৪ সাল থেকে জিকজার ভাঁটা ছাড়া ড্রাম চিমনি ও ১২০ ফিট লম্বা ফিক্সড চিমনির ভাঁটা অবৈধ। এব্যাপারে শৈলকুপার এসি ল্যান্ড পার্থ প্রতিম শীল বলেন এভাবে কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ বে-আইনী। হাই কোর্টের নিষেধাজ্ঞা না থাকলে অবশ্যই ভাটাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৫ কোটি টাকা হাতিয়ে চম্পট দিল ‘অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশন’
ঝিনাইদহ :: ‘জলবায়ু পরিবর্তনে জীববৈচিত্র, প্রাণী জগৎ ধ্বংস হতে চলেছে, এই দুর্বিসহ বিপর্যয়ের ভয়াবহতা রক্ষা এবং প্রভাব মোকাবেলা ও পরিবেশ উন্নয়নে সচেতন করা সহ ফ্রী গাছের চারা বিতরণ’র জন্য এসেছিল তারা। আর চলে গেল কয়েক কোটি টাকারও বেশী হাতিয়ে। টাকার পরিমান ৫ কোটিরও বেশী বলে সদস্যদের ধারণা। কিন্তু এসবের কিছুই জানেন না সরকারের কোন দপ্তর। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোরও ছিলনা কোন নজরদারী। পড়ে আছে অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের শাখা অফিস, আঞ্চলিক অফিস, প্রধান কার্যালয়। এসব কার্যালয়ে ঝুলছে বড় বড় তালা, কোথাও কোথাও এখনো আছে চোঁখ ধাধানো ‘অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশন’র বড় বড় সাইনবোর্ড। তবে নেই পিয়ন, অফিস সহকারী, সুপার ভাইজার, ফিল্ড সুপার ভাইজার, ম্যানেজার, ম্যানেজমেন্ট অফিসার, নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক, লাপাত্তা হয়েছে সবাই। এদের কার্যক্রম ছিল ঝিনাইদহ সহ মাগুরা এবং কুষ্টিয়া জেলাতেও। চলতি বছরের শুরুর দিকে যখন করোনা ভাইরাসের আবির্ভাব, চারিদিকে ভয় আর উদ্বেগ আতঙ্ক শুরু হয়েছে। মার্চ মাসের দিকে কাজকর্মহীন হয়ে ক্রমেই মানুষ যখন অসহায় ঠিক তখনই সমাজসেবা (!) হিসাবে হাজির হয় ‘অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশন’ নামের একটি বে-সরকারী সংগঠন। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন ওরফে রানা মন্ডল ঝিনাইদহের হড়িনাকুন্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের মান্দিয়া গ্রামের মৃত আইজুদ্দিন মন্ডলের ছেলে। আর তার স্ত্রী উম্মে মোমেনিন ওরফে ইভা এই অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের পরিচালক। সংগঠনটি ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহরের কবিরপুরে চোখঁ ধাধানো সাইনবোর্ড লাগিয়ে দ্বিতলায় অফিস নিয়ে জনবল নিয়োগ দিয়ে শুরু করে সদস্য সংগ্রহ। শৈলকুপার শেখপাড়া বাজারে একটি বহুতল ভবনের চারতলাতে খোলা হয় অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়। আর হরিণাকুন্ডু উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের মান্দিয়া বাজারে খোলা হয় প্রধান কার্যালয়। উপজেলা শহরের পাশে লোহাপট্টিতে খোলা হয় আরোও একটি অফিস। শৈলকুপা শাখা অফিস ও শেখপাড়ার আঞ্চলিক কার্যালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারী সহ নিয়োগ করা হয় সুন্দরী নারীদের। গাছের চারা বিতরণ, সেলাই প্রশিক্ষন ও প্রশিক্ষন শেষে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন বিতরন আর স্বল্প সূদে দীর্ঘ মেয়াদী লোন এবং বয়স্ক ভাতার কথা বলে শুরু করে ইউনিয়নে ইউনিয়নে সদস্য সংগ্রহ আর সঞ্চয় নেয়া। ১টি গাছ আর জৈব সারের প্যাকেট দিয়ে নেয় ৫০ থেকে ১শ টাকা। সেলাই প্রশিক্ষণ বাবদ নেয় ২’শ ৭০ টাকা। আর লোন নেয়ার সদস্য বাবদ ৩’শত টাকা। উপজেলা জুড়ে এভাবে গত ৯মাসে ৫০ হাজার থেকে কমপক্ষে ১লাখ সদস্য সংগ্রহ করা হয়। সদস্যদের কাছ থেকে এভাবে অর্থ আদায় করা হয়েছে ২কোটি ২৭ লক্ষ থেকে কমপক্ষে ৩কোটি টাকা। শুধু ঝিনাইদহ নয় একযোগে মাগুরা, কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ এই ৩টি জেলাতে এই কথিত ফাউন্ডেশন অনুরুপ কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে। কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা ও মিরপুর থানা, মাগুরা জেলা সদরের ইছাখাদা এবং ঝিনাইদহের শৈলকুপা ও হরিণাকুন্ডু উপজেলাতে ছিল কার্যক্রম। তবে সঞ্চয় সংগ্রহের পর বর্তমানে সকল অফিসই গুটিয়ে নিয়েছে। তবে তার নিজ উপজেলা হরিণাকুন্ডুতে প্রধান কার্যালয় সহ আরোও একটি অফিস থাকলেও সেখানে ছিল না কোন সদস্য সংগ্রহ বা সঞ্চয় জমা কার্যক্রম। ৩জেলা থেকে লাখ লাখ সদস্য সংগ্রহ করে কমপক্ষে ৫কোটি টাকারও বেশী হাতিয়ে নিয়েছে সংগঠনটি। এই প্রতিষ্ঠানে যাদের বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের কাছ থেকে ৫হাজার, ১০ হাজার সহ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। প্রথম মাসের বেতন পেলেও ৮মাসের বেতন দেয়া হয়নি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। অনুসন্ধান ও বিভিন্ন সরকারী প্রতিষ্ঠানে অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের অবগতি পত্রে দেখা যায়, তারা লিখেছে ‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাকৃতিক জীবও বৈচিত্র এবং প্রাণী জগত ধ্বংস হতে চলেছে। এ দূর্বিসহ বিপর্যয়ের ভয়াবহতা রক্ষায় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় ও পরিবেশ উন্নয়নে অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের বাস্তবায়নে গাছের চারা লাগানো, গাছ সংরক্ষন ও পরিবেশ উন্নয়নে জনগনকে সচেতন করাসহ বর্ষা মৌসুমে বিনামূল্যে গাছের চারা বিতরনের জন্য আপনার নিয়ন্ত্রনাধীন এলাকায় সদস্য তালিকাভূক্ত করা হচ্ছে এ ব্যাপারে আপনাকে অবগতি করিলাম’। শুধুমাত্র অবগত করে দীর্ঘদিন বিভিন্ন উপায়ে আর্থিক কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও গোয়েন্দা সংস্থা সহ সরকারী কোন প্রতিষ্ঠানেরই নজরদারী ছিল না সাইনবোর্ড সর্বস্ব এ প্রতিষ্ঠানটির উপর। অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনে ফিল্ড অফিসার হিসাবে কর্মরত শৈলকুপা পৌর এলাকার আউশিয়া গ্রামের তুহিন হোসেন, হরিহরা গ্রামের পিকুল হোসেন সহ কর্মরতরা জানান, লোক মারফত তারা জানতে পারেন অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনে চাকুরীর সুযোগ আছে। বেশ কিছুদিন ঘুরাাঘুরির পর চলতি বছরের শুরুতে তিনি সহ আরো ২০ নারী পূরুষ প্রত্যেকের ৫ হাজার টাকা জামানত রাখার শর্তে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। মার্চ মাস থেকে শুরু হয় সদস্য সংগ্রহ। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধার কথা সাধারন মানুষকে জানালে দু-এক মাসের মধ্যে তাদের সদস্য সংখ্যা দাড়াই ৫০ হাজারের বেশী। প্রথমে সদস্যদের আস্থা অর্জনে তাদের মাঝে ৫০ টাকার বিনিময়ে নিজ নার্সারী থেকে বিতরন করা হয় এক ফুটেরও কম উচ্চতার একটি করে গাছের চারা। এরপর সদস্যদের সংগঠিত করা হয় সেলাই প্রশিক্ষন ও প্রশিক্ষন শেষে বিনামূল্যে সেলাই মেশিন এবং স্বল্প সূদে ১ থেকে ১৫ লাখ টাকা লোন ১০ বছর মেয়াদী এ কথা বলে। এছাড়া বয়স্কদের বয়স্ক ভাতা। ৫০ হাজার সদস্যের কাছ থেকে সেলাই প্রশিক্ষনে নেওয়া হয় ২৭০ ও লোন কর্যক্রমে ৩’শত টাকা নেয়া হয়। এভাবে অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশন কয়েক মাসে শৈলকুপা থেকেই ২ কোটি টাকারও বেশী হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হয় বলে জানান নিয়োগ প্রাপ্তরা। বর্তমানে তাদের কথিত এমডির কাছে জামানতের টাকা ও বেতন চাইলে উল্টো মামলার ভয় দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তুহিন সহ ভূক্তভোগীরা। অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের সেলাই প্রশিক্ষনের কাটিং মাস্টার হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত সাতগাছী গ্রামের ঝর্ণা খাতুন জানান অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনে তিনি ৫ হাজার টাকা জামানত রেখে ১৩ হাজার টাকা বেতনের চাকরী প্রাপ্ত হন। কোন বেতন না দিয়ে এ প্রতিষ্ঠান লাপাত্তা। চাকুরী ও প্রশিক্ষনার্থীরা কিছুদিন আগে উপজেলার শেখপাড়াতে অরণ্য কেয়ারের আঞ্চলিক অফিস ঘেরাও করলে স্থাণীয় প্রভাবশালী তোজাম মন্ডল ও রেজাউল খা’র সহযোগীতায় তাদের দাবী পূরন না করে এ প্রতারক চক্রটি অফিস গুটিয়ে নিতে সক্ষম হয় বলে তিনি অভিযোগ করেন। বর্তমানে তাদের সব অফিসের কর্যক্রম বন্ধ বলে তিনি জানান। ৫নং কাচেরকোল ইউনিয়নের উত্তর মির্জাপুর গ্রামের মোর্তজা হোসেনের স্ত্রী আফরোজা খাতুন জানান অরণ্য কেয়ার নামের একটি প্রতিষ্ঠান লোন সেলাই প্রশিক্ষনের নামে তাদের ইউনিয়নের আনুমানিক ৩ হাজার নারী পূরুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে এখন পলাতক। এসব টাকা চাইলে তাদের দেওয়া হচ্ছে মামলার হুমকি। অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের অবগতি পত্র নিয়ে শৈলকুপার ৫নং কাচেরকোল ইউনিয়নের সচিব অসীম কুমার সরকার জানান, কয়েক মাস আগে অরণ্য কেয়ার নামের একটি ফাউন্ডেশন তাকে একটি চিঠি দিয়ে চেয়ারম্যান মহোদয়কে দিতে বলে। এরপর তারা কি কার্যক্রম করেছে তা তিনি জানেন না। সমাজসেবা অধিদপ্তর বা সমবায় অধিদপ্তর বা সরকারের কোন দপ্তরের অনুমোতি না থাকলেও সমাজসেবার নামে সদস্য সংগ্রহ ও তাদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া প্রসঙ্গে অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন ওরফে রানা মন্ডল জানান, তার কোন অর্থ সম্পদ নাই। শুধুমাত্র বাবার তিন বিঘা জমি সম্বল। ঢাকায় অরণ্য এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ নামে একটি কোম্পানি রয়েছে যার চেয়ারম্যান তার স্ত্রী। অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশন এ প্রতিষ্ঠানের সহযোগী প্রতিষ্ঠান। তিনি জানান, ঝিনাইদহ সমাজ সেবা অফিসে সমাজসেবার উপর কাজ করতে অনুমতির আবেদন করলে তারা তাকে ফিরিয়ে দেন। এরপর তিনি অনুমতি না পেয়ে ঝিনাইদহের শৈলকুপা, মাগুরা জেলা ও কুষ্টিয়ার বিভিন্ন সরকারী অফিসে অবগতি পত্র দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের উপর সচেতন করতে সদস্য সংগ্রহ শুরু করি ও গাছের চারা বিতরন করি। শৈলকুপাতে তার ২০হাজার সদস্য রয়েছে বলে জানান। পরে এদের কাছ থেকে সেলাই প্রশিক্ষনের নামে ৩’শত ৫০ টাকা নেওয়া হয়। এভাবে তিনি শৈলকুপা থেকে ১০ লাখ টাকা পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন। বর্তমানে তার কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ বলে অফিস বন্ধ রেখেছেন। তার প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তা কর্মচারী তার কাছে কোন টাকা পাবে না বলে তিনি দাবি করেন। আগামী বর্ষা মৌসূমে জলবায়ুর উপর তিনি আবারো কাজ শুরু করবেন বলে জানান। তার প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজমেন্ট অফিসার হিসাবে কুষ্টিয়ার নুসরাত ফারহানা ও ম্যানেজার হিসাবে মেহেরপুর জেলার বলিয়ারপুরের গ্রামের পলক হুসাইন নামে এক যুবক কর্মরত ছিল। অরণ্য কেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেন রানা দাবি করেন, তিনি ঢাকার কবি কাজী নজরুল স্কুল থেকে এসএসসি, নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি, সিটি কলেজ থেকে বিএসসি করেন। এরপর দেশের বাইরে সিঙ্গাপুর গিয়ে সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালেখা শেষ করেন। এরপর দেশে ফিরে তিনি বগুড়া জেলায় জনকন্ঠ পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেন ৩ বছর। বর্তমানে সমাজ সেবার পাশাপাশি বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের হড়িনাকুন্ডু উপজেলার আইন বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় পার্টির হরিণাকুন্ডু আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতি সহ নানা সমাজসেবামূলক কাজ করে আসছেন। আনোয়ার হোসেন রানা অবশ্য স্বীকার করছেন সেলাই প্রশিক্ষন ও গাছের চারা বিতরন করে ১০ লাখ টাকা আয় করেছেন যার সিংহ ভাগই তিনি সদস্যদের মাঝে খরচ করেছেন। আর শৈলকুপা উপজেলাতে তার সদস্য সংখ্যা ২০ হাজার বলে জানান। তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায় শৈলকুপাতেই এ প্রতিষ্ঠানের সদস্য সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশী। এছাড়া মাগুরা জেলা ও কুষ্টিয়ার ইবি থানা ও মিরপুর থানাতে তার সদস্য সংখ্যা ৩০ হাজার বলে স্বীকার করেন। ঝিনাইদহ জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল লতিফ সেখ জানান, জনগন কে সচেতন হতে হবে, করোনার এই সময়ে কোন ধরণের নিবন্ধন অনুমতি না নিয়ে এভাবে অর্থ কালেকশন বৈধ নয়, এটা গুরুত্বর অপরাধ। তিনি বলেন জেলার আইনশৃঙ্খলা সভা সহ এনজিও সমন্বয় সভাতে বিষয়টি তুলবেন। এই কর্মকর্তা জানান, প্রত্যন্ত এলাকাতে হওয়ায় সেভাবে তদারকি করতে পারেননি, তাছাড়া আপনাদের মাধ্যমে জানলাম, এটাও একধরনের তদারকি, দ্রুত তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঝিনাইদহ এনএসআই এর উপ-পরিচালক শরিফুল ইসলাম খান জানান, তিনি নতুন এসেছেন, অফিস অবগত করেনি, তথ্য জেনে তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।
ঝিনাইদহে ধরা পড়ল মেছবাঘের শাবক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপার সারুটিয়া গ্রামে দেখা মিলেছে বিলুপ্ত প্রায় মেছবাঘ শাবকের। মঙ্গলবার বিকালে শৈলকুপার সারুটিয়া গ্রামের দক্ষিন মাঠে লোকালয়ে বাঘ শাবকটির ঘুরতে দেখা যায়। এসময় স্থানীয় কৃষকেরা বন্য শাবকটি ধরে ফেলে। বর্তমানে বাচ্চাটি সারুটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নোয়াব আলীর বাড়িতে হেফাজতে রয়েছে। তিনি জানান, কেউ যাতে এটি মেরে ফেলতে না পারে তা জন্যে রেখে দিয়েছেন। তবে এটি বনবিভাগের মাধ্যমে নিরাপদ হেফাজতে না নিলে যে কোন সময় মারা যেতে পারে বলে আশংকা সচেতন বাসিন্দাদের। ধারণা করা হচ্ছে, শৈলকুপার সারুটিয়া এলাকাটি বিলুপ্তপ্রায় মেছো বাঘের জন্য অনেকটা নিরাপদ ও তাদের খাবার রয়েছে এখানে। তবে স্থানীয় জনগন সচেতন না হলে, হুমকির মুখে পড়বে তাদের বিচরণক্ষেত্র। শৈলকুপা উপজেলা বনকর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না তবে দ্রুত খোঁজ নিবেন।
ঝিনাইদহে শুরু হয়েছে মধুবৃক্ষ খেজুর গাছের রস সংগ্রহ
ঝিনাইদহ:: ঝিনাইদহের ছয়টি উপজেলার গাছিদের মধ্যে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে বেশ আগে ভাগেই শেষ হয়ে গেছে খেজুর গাছ তোলা ও ঝোড়া। এ কারনে মহেশপুরের গাছীরা এখন মহা ব্যাস্ত। আগাম খেজুর রস সংগ্রহ করতে জেলার ছয়টি উপজেলার গ্রামীন জনপদের সর্বত্রই মধুবৃক্ষ খেজুর গাছ ঝোড়া শেষ কয়েছে। গাছিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন গাছ থেকে আগে ভাগে রস সংগ্রের উপযোগী করে গড়ে তুলতে। আর মাত্র কয়েকদিন পর থেকেই গ্রাম বাংলার গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতিক মধু বৃক্ষকে ঘিরে গ্রামীন জনপদে শুরু হবে এক উৎসব মুখর পরিবেশ। মধু বৃক্ষ থেকে গাছিরা সংগ্র করবে সুমিষ্ট খেজুর রস ,তাতে তৈরি হবে লোভনীয় নলেন গুড় ও পাটালী। রস জ্বালিয়ে ভিজানো পিঠা ও পায়েস খাওয়ার ধুম পড়বে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীন জনপদে। দানা, ঝোলা ও নলেন স্বাদ ও ঘ্রানই আলাদা। গ্রাম বাংলার রসনা তৃপ্তিতে খেজুরের গুড়-পাটালীর কোন বিকল্প নেই। শীত মওসুমে গ্রাম বাংলার এক নতুন আমেজের সৃষ্টি হবে। এক সময় মহেশপুর উপজেলা খেজুরের রস,গুড় ও পাটালি উৎপাদনে জেলার প্রসিদ্ধ ছিল। অতীতে এখানকার খেজুর রসের যে যশ ছিল এখন তা দিনে দিনে হারাতে বসেছে। গ্রাম বাংলার সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক এ খাতে সরকারী কোন পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় বর্তমান আর আগের মত রস,গুড় উৎপাদন হয় না। সুঘ্রান নলেন গুড় উপজেলার নির্দিষ্ট কয়েকটি গ্রাম ছাড়া পাওয়া যায় না। তা আবার চাহিদা তুলনায় অত্যন্ত কম। তার পরও যে রস ,গুড় ও পাটালী তৈরি হয় তা দিয়ে শীত মওসুমে রীতিমত কাড়াকাড়ি শুরু হয়। এ বছরও ব্যাতিক্রম হবে না বলে ধারনা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই শহরের লোকজন গ্রামের গাছিদের সাথে যোগাযোগ শুরু করেছেন। আবার কেউ কেউ গাছিদের নিকট অগ্রীম টাকা তুলে দিচ্ছেন ভাল রস,গুড় ও পাটালী পাওয়ার আশায়। অগ্রীম টাকা পেয়ে অনেক গাছি রস সংগ্রের উপকরণ কিনছেন। উপজেলার শংকরহুদা ও বাথানগাছী গ্রামের গাছি আজগার আলী ও করিম বলেন, এবছর একটু আগে ভাগেই গাছ ঝোড়া বা কাটা শেষ করেছি। এখন গাছের রস সংগ্রহ চলছে। তারা আরও বলেন ভাটার কারনে অনেক খেজুর গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এখন তেমন একটা বেশি খেজুর গাছ না থাকায় গাছিরাও খেজুর রস সংগ্রহের জন্য তেমন আগ্রহ দেখান না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হসান আলী জানান,এ উপজেলায় প্রায় ৫ হেক্টর জমিতে খেজুরের চাষ করা হয়। বিভিন্ন চাষে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকি কিন্তু দঃখ্যজনক হলো বরাদ্দ না থাকায় আমরা খেজুর চাষিদের সহযোগীতা করতে পারিনা। তারপরেও আমরা চেষ্টা করছি। মহেশপুরের খেজুরের রস একটি ঐতিহ্য তাই ঐতিহ্য ধরে রাখতে বেশি বেশি খেজুর খাছ রোপনের মাধ্যমে ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা চাষিদের উদ্বুদ্ধ করছি এবং আগামীতে আমরা চেষ্টা করবো খেজুর চাষিদের সহায়তা করতে।
‘সারা বিশ্বের ঐক্য এইডস্ প্রতিরোধে সবাই নিব দায়িত্ব’ প্রতিপাদ্যে ঝিনাইদহে বিশ্ব এইডস দিবস পালিত
ঝিনাইদহ :: ‘সারা বিশ্বের ঐক্য এইডস্ প্রতিরোধে সবাই নিব দায়িত্ব’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ঝিনাইদহে বিশ্ব এইডস দিবস পালিত হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের আয়োজনে মঙ্গলবার সকালে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে সিভিল সার্জনের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আরিফ-উজ-জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার সাঈদ, সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: হারুন-অর-রশিদ, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: জাকির হোসেন, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শামীম কবির, ভারপ্রাপ্ত আরএমও ডা: লিমন পারভেজ, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার আব্দুর রহমান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মেডিকেল অফিসার ডা: তালাত তাসনিম। বক্তারা, এইডস্ প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি স্বাস্থ্য কর্মীদের আরও দ্বায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।