বুধবার ● ২ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » বিশ্বনাথে আমনের বাম্পার ফলনের সুবাস পাচ্ছেন কৃষকরা
বিশ্বনাথে আমনের বাম্পার ফলনের সুবাস পাচ্ছেন কৃষকরা
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: ফসলের মাঠজুড়ে বাতাসে দুলছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন আমন ধান। এবার আমনের বাম্পার ফলনের সুবাস পাচ্ছেন কৃষকরা। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার কৃষক পরিবারগুলো ভাসছে এখন ধানের মৌ মৌ গন্ধে। মাঠে মাঠে আনন্দে ধান কাটছেন চাষিরা। আমনের বাম্পার ফলন আর নবান্নের আনন্দে আজ বিশ্বনাথের মাঠ-ঘাট ভরে উঠেছে সোনালি ফসলে।
বিশ্বনাথের হাওড়জুড়ে পাকা ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালি স্বপ্ন। কৃষাণ-কৃষাণীর মনে বইছে আনন্দের বন্যা। উপজেলাজুড়ে আমন ধানের বাম্পার ফলনে আবারও বাঁধ ভাঙ্গা আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছেন কৃষক-কৃষাণীরা। দিগন্তজোড়া সোনালি ফসলের মনোরম দৃশ্য এখন গোটা উপজেলাজুড়ে। শুরু হয়েছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ। ফসল কাটার মহোৎসবে ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছেন এখানকার কৃষকরা। শীতের সকাল থেকে পড়ন্ত বেলা পর্যন্ত মাঠে মাঠে ফসল কর্তনের চিরাচারিত দৃশ্য দেখা যাচ্ছে গ্রামজুড়ে। একদিকে কৃষকরা ধান কেটে বাড়ির আঙিনায় জড়ো করছেন, অপরদিকে গরু বা মেশিন দিয়ে একই সঙ্গে মাড়াইয়ের কাজ সম্পন্ন করে নেওয়া হচ্ছে। মাড়াই শেষে বাতাসে ধান উড়িয়ে বাকি কাজটুকু সম্পন্ন করে গোলায় তোলার কাজে এখন কৃষাণীরা ব্যস্ত থাকবেন। চলবে উপজেলার গ্রামে গ্রামে মাঠের পর মাঠ সোনালি ফসল ঘরে তোলার মহোৎসব। বাতাসে ছড়ানো আমনের মৌ মৌ গন্ধ আর কৃষক-কৃষাণীদের ফসল ঘরে তোলার কর্মব্যস্ততা এখানে এক অন্যরকম আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করবে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে এ বছর আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৩ হাজার ২শ ৫ হেক্টর জমি। এর মধ্যে আমন রোপণের সময় তিন দফা বন্যার মুখে পড়েন কৃষকরা। বার বার পানিতে তলিয়ে যায় বীজতলা। পরে পানি নামলে চারা উৎপাদন করেন কৃষকরা। রোপণকৃত চারার মধ্যে রয়েছে বিআর ১১, ব্রি ধান ৫১, ৫২, ৩২, ৩৪ ও ৩৯, বীনা ৭, ১১, ১৬ ও ১৭ এবং নতুন জাতের ব্রি ধান ৮৭ ও ৭২। এর মধ্যে ব্রি ৮৭ জাতের ধানের ফলন সবচেয়ে ভালো হয়েছে। অন্য বছর ইঁদুর আর পোকা-মাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই দেখা দিলেও এবছর এগুলোর উপদ্রব ছিল কম।
বাউসী গ্রামের কৃষক মতিন মিয়া বলেন, ‘বন্যা ও বৃষ্টির কারণে আমন চাষাবাদ নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় ছিলাম। যে প্রত্যাশায় এতো পরিশ্রম, এবার তা পূর্ণ হয়েছে। আশা রাখি খরচ পুষিয়ে লাভ হবে।’ কারিকোনা গ্রামের কৃষক শহিদ মিয়া বলেন, ‘তিন দফা বন্যার পানিতে বীজতলা তলিয়ে যাওয়ার পরও এবার আমন ধানের ভালো ফলন হয়েছে।’
উপজলো কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, ‘বন্যায় প্রাথমিকভাবে চারা উৎপাদনের সময় কিছুটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছিল। নষ্ট হয় বীজতলাও। পরে আর কোনো সমস্যা হয়নি। বৃষ্টি থাকায় ধানের গাছও বড় হয় দ্রুত। এ বছর ভালো ফলন হওয়ায় সাময়িক ক্ষতিটা পুষিয়ে নিতে পারবেন কৃষকরা।’