শুক্রবার ● ৪ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » ঢাকা বিভাগ » ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সরকার সাপের মুখে চুমো খাচ্ছে, ব্যাংয়ের মুখেও চুমো খাচ্ছে : সাইফুল হক
ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সরকার সাপের মুখে চুমো খাচ্ছে, ব্যাংয়ের মুখেও চুমো খাচ্ছে : সাইফুল হক
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি :: বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির আজ এতটা অধঃপতন ঘটেছে যে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ আদর্শ ও নীতিনিষ্ঠ রাজনীতি ও রাজনীতিকেরা এখন উপহাসের বস্তুতে পরিণত হয়েছে। দেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে কালোটাকার মালিক, ব্যবসায়ী, মাফিয়া সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রন ও দৌরাত্ম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশ ও জনদরদি রাজনীতি এখন কোনঠাসা। রাজনীতি এখন দ্রুত অর্থবিত্ত গড়ে তোলার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। জনসেবার পরিবর্তে রাজনীতি এখন ব্যবসায়ে নিপতিত হয়েছে। জবাবদিহীতাহীন আমলাতন্ত্রের সাথে এদের অশুভ আঁতাত এখন দানবীয় শক্তি হয়ে উঠেছে। ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও সুশাসনকে এরা নির্বাসনে পাঠিয়েছে। গণপ্রতিরোধ-গণজাগরণের পথে এদেরকে পরাজিত করতে না পারলে দেশ ও জনগণের কোন ভবিষ্যত নেই।
আজ বিকালে নারায়নগঞ্জ শহীদ মিনারে জেলা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সদ্যপ্রয়াত প্রাক্তন সভাপতি গোলাম ইয়াজদানি খান মিনুর শোক সভায় তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
সাইফুল হক আরো বলেন, দেশ পরিচালনায় বর্তমান সরকারের রাজনৈতিক ও নৈতিক শক্তি না থাকায় দেশে একটা আধানৈরাজ্যিক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সরকার দেশকে যেন নিয়তির উপর ছেড়ে দিয়েছে। তাই এই সরকারের হাতে দেশ ও দেশের মানুষ নিরাপদ নয়। নিরাপদ নয় গণতন্ত্র ও দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যত। তিনি বলেন, যেকোন ভাবে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে সরকার সাপের মুখেও চুমো খাচ্ছে, আবার ব্যাংয়ের মুখেও চুমো খাচ্ছে। সরকারের এই দ্বিচারী ভূমিকা, মদদ ও প্রশ্রয়ের কারণেই আজ সাম্প্রদায়িক ফ্যাসিস্ট শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারছে এবং বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরুদ্ধে আস্ফালন দেখাতে পারছে। তিনি এসব অপরাজনীতি ও কর্তৃত্ববাদী দুঃশাসনের
প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক শক্তির রাজপথে বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নারায়নগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি মাহমুদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও পার্টির জেলা কমিটির সাধারণ স¤পাদক আবু হাসান টিপুর পরিচালনায় এই সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি এড. মন্টু ঘোষ, সিপিবির নারায়নগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি হাফিজুর রহমান, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের পলিট ব্যুরোর সদস্য হানিফুল কবির, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, বাসদ নেতা প্রদীপ সরকার, প্রয়াত গোলাম ইয়াজদানী খান মিনুর সহোদর জাফরউল্লাহ খান চেঙ্গিস, তাঁর কন্যা তারান্নুম খান মিশু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সহিদুল আলম নাননু, রাশিদা বেগম প্রমূখ।
সভার শুরুতেই কমরেড গোলাম ইয়াজদানি খান মিনু’র সংগ্রামী স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে পুম্পমাল্য অর্পণ করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় ও জেলা কমিটি, জেলা বাম গণতান্ত্রিক জোটের শরীক সংগঠনসমূহ ও বিভিন্ন শ্রেণী ও গণসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
এরপর তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। শোক সভায় নেতৃবৃন্দ কমরেড মিনুর সংগ্রামী জীবনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, এদেশের মেহনতি মানুষের সংগ্রামের মধ্যেই তিনি বেঁচে থাকবেন। তিনি আমাদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবেন।