রবিবার ● ২০ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » ফেব্রুয়ারিতে টিকা এলেও সবাই নাও পেতে পারে : রাঙামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভায় সিভিল সার্জন বিপাশ খীসা
ফেব্রুয়ারিতে টিকা এলেও সবাই নাও পেতে পারে : রাঙামাটি জেলা পরিষদের মাসিক সভায় সিভিল সার্জন বিপাশ খীসা
রাঙামাটি :: রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এর মাসিক সভা আজ রবিবার ২০ ডিসেম্বর সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন নবনিযুক্ত জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী। পরিষদের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাঃ আশরাফুল ইসলাম এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের নবনিযুক্ত সদস্যরা যথাক্রমে সদস্য বাদল চন্দ্র দে, সদস্য প্রিয় নন্দ চাকমা, সদস্য ঝর্ণা খীসা, সদস্য আব্দুর রহিম, সদস্য প্রবর্তক চাকমা, সদস্য অংসুই ছাইন চৌধুরী, সদস্য আসমা বেগম, সদস্য বিপুল ত্রিপুরা, সদস্য দিপ্তীময় তালুকদার, সদস্য নিউচিং মারমা, সদস্য ইলিপন চাকমা, সদস্য রেমলিয়ানা পাংখোয়া, সদস্য সবির কুমার চাকমা, সদস্য হাজী মুছা মাতব্বর’সহ হস্তান্তরিত বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সিভিল সার্জন ডাঃ বিপাশ খীসা রাঙামাটি জেলার করোনা পরিস্থিতির উপর সংক্ষিপ্ত বিবরণ সভায় উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, রাঙ্গামাটিতে সর্বশেষ (১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত) করোনা পজিটিভ আছেন ১১১৬জন। ইতোমধ্যে ১০২৬জন সুস্থ হয়েছেন। মোট মৃত্যু ১৬জন। আক্রান্তের হার ২০.০৫%, সুস্থতার হার ৯১.৯৪% এবং মৃত্যুর হার ১.৪৩%। রাঙামাটি পিসিআর ল্যাবে রোগী পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৫৬৬টি। তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। ফেব্রুয়ারিতে টিকা এলেও সবাই নাও পেতে পারে। সেক্ষেত্রে করোনা থেকে রক্ষায় মাস্ক পরিধানই একমাত্র সমাধান।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক কৃঞ্চ প্রসাদ মল্লিক জানান, বর্তমানে বোরো মৌসুম চলছে এবং টার্গেট অনুযায়ী চাষাবাদ চলছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা চাষীদের নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করছে।
জেলা শিক্ষা অফিসার উত্তম খীসা জানান, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০২১ সালের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এসাইনমেন্ট এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এবার লটারীর মাধ্যমে ভর্তি কার্যক্রম চলবে।
সমাজসেবা বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, চলতি অর্থ বছরের সকল ভাতা পাওয়া গেছে যা বৃদ্ধ, বিধবা, প্রতিবন্ধী’সহ অন্যান্য ভাতা প্রাপ্তদের একাউন্টে জমা হয়েছে। তিনি বলেন, রাঙামাটিতে প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণ কর্মসূচির মাধ্যমে ৯৭২১জন প্রতিবন্ধী শনাক্ত হয়েছে। জেলায় ১৪৪জন মুক্তিযোদ্ধা মাসিক ১২ হাজার টাকা করে সম্মানী ভাতা পাচ্ছেন। বর্তমানে ১০টি উপজেলা এবং ২টি পৌরসভায় মোট ২৩৫৭১জন মাথা পিছু ৫০০ টাকা হারে বয়স্ক ভাতা পাচ্ছেন।
বিসিক প্রকল্পের এজিএম মোঃ ইদ্রিস হোছাইন জানান, রাঙামাটি জেলায় ১০টি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে ৭টি ট্রেডে (তাঁত ও তাঁতে বস্ত্র বুনন, সেলাই, বাটিক ছাপা, কাঠের কাজ, বাঁশ ও বেতের কাজ, কম্পিউটার, প্লাস্টিক ব্যাগ ও পুঁতি শিল্প) প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে। চলতি বছরে সর্বমোট ৪১০জনকে এসব ট্রেডে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে।
হর্টিকালচার সেন্টার বালুখালী, বনরুপা, নানিয়ারচর ও কাপ্তাইয়ের উদ্দ্যান তত্ববিদরা জানান, নার্সারিতে টার্গেট অনুযায়ী বিভিন্ন প্রজাতি গাছের চারাকলাম উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রয় কার্যক্রম চলছে।
এছাড়া, সভায় হস্তান্তরিত বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ তাদের বিভাগের স্ব স্ব কার্যক্রম উপস্থাপন করেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অংসুই প্রু চৌধুরী বলেন, জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী যার যার অবস্থান থেকে এ জেলার উন্নয়নে সবাইকে কাজ করে যেতে হবে। তিনি বলেন, সরকার আমাদের নিয়োগ দিয়েছেন জনকল্যাণের স্বার্থে। তাই সমন্বয়ের মাধ্যমে এ জেলার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে আমাদের সকলকে কাজ করে যেতে হবে। সবাই পরিবর্তন চায়, গতানুগতিকভাবে কাজ করে পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। বছরওয়ারী পরিমাপের মাধ্যমে আমরা আমাদের কাজের মূল্যায়ন করবো। শিক্ষা, কৃষি এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা কি পরিবর্তন করতে পেরেছি এগুলোর মূল্যায়নের মাধ্যমে আমরা এ জেলার গুণগত কি পরিবর্তন করতে পেরেছি তার মূল্যায়ন করবো। তিনি আরও বলেন, খবরদারী করার জন্য নয় বরং জনমুখী প্রশাসন পরিচালনার মাধ্যমে আমরা জেলার উন্নয়নে ব্রতী হবো। হস্তান্তরিত বিভাগগুলি যদি আমাদেরকে সহায়ক শক্তি হিসাবে ভাবে তাহলে সম্মিলিত চেষ্টায় এ জেলার গুণগত পরিবর্তন করা সম্ভব।
উল্লেখ্য, এবছরের মার্চ মাসে কোভিড ১৯ এর কারণে পরিষদের পূর্ণাঙ্গ সভা বন্ধ থাকার পর এ প্রথম হস্তান্তরিত বিভাগের সকল কর্মকর্তাদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ সভা অনুষ্ঠিত হয়।