রবিবার ● ২০ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » চট্টগ্রামের সোনালী অতীত রয়েছে : ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী
চট্টগ্রামের সোনালী অতীত রয়েছে : ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী
চট্টগ্রাম :: চট্টগ্রাম চারশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ব বাণিজ্যের গেটওয়ে উল্লেখ করে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেছেন, চট্টগ্রামের সোনালী অতীত রয়েছে। ভবিষ্যতের হিসেবে অর্থনৈতিক দিক থেকে চট্টগ্রামের গুরুত্ব আরও বেশি। চট্টগ্রাম মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত এবং এর উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আজ ২০ ডিসেম্বর রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক মিলনায়তনে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ভারতীয় রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যের শুরুতে বলেন, আমি বাংলা বুঝতে পারলেও এখনো সঠিকভাবে বাংলা বলতে পারি না। বাংলাভাষা শিখছি, সামনে পুরোপুরি শিখে যাবো।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রামে নিযুক্ত ভারতের সহকারী হাই কমিশনার অনিন্দ্য ব্যানার্জী ও ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সালাহ উদ্দিন মো. রেজা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের পর রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
এক প্রশ্নের জবাবে দোরাইস্বামী বলেন, বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসন ভারতও চায়। মিয়ানমার থেকে আসা লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। এটা প্রশংসার দাবি রাখে। রোহিঙ্গাদের এখানে রাখার জন্য যে সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে তা চমৎকার।
তিনি বলেন, এটা একদম পরিষ্কার আমরা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, দ্রুত ও টেকসই প্রত্যাবাসন চাই। সবক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতা থাকবে। তাদের ফিরিয়ে নেয়া বাংলাদেশের সমাজ ও অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে ভারত ও বাংলাদেশের অবস্থানের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই বলেও মন্তব্য করেন দেশটির রাষ্ট্রদূত দোরাইস্বামী।
সীমান্তে হত্যা নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে বিক্রম দোরাইস্বামী বলেন, সীমান্তে অবৈধ অর্থনৈতিক কর্মকা-ের কারণে বেশিরভাগ দুর্ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনার ৯৫ শতাংশ ঘটে ভারতের সীমান্ত এলাকায়। ৮৭ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে রাত দশটার পরে। এসময় অবৈধ অনুপ্রবেশও ঘটে। এসব ঘটনা বন্ধে সীমান্তে বৈধ অর্থনৈতিক কর্মকা-ের উদ্যোগ নেয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব আলী আব্বাস চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব পরিদর্শন করে মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। দ্বিপাক্ষিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্কের উন্নয়ন হবে।
সভাপতির বক্তব্যে তিনি চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী জাদুঘর করার প্রস্তাব দেন রাষ্ট্রদূতের কাছে এবং আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে খাজা বাবার ওরসে বাংলাদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীদের ভিসা সহজ করার আহবান জানান।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাষ্ট্রদূতের সহধর্মিনী মিসেস সঙ্গীতা দোরাইস্বামী, চট্টগ্রামস্থ ভারতের সহকারী হাইকমিশন কার্যালয়ের দ্বিতীয় সচিব শুভাশিষ সিনহা, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি মনজুর কাদের মনজু, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, ক্লাবের অর্থ সম্পাদক দেবদুলাল ভৌমিক, সাংস্কৃতিক সম্পাদক রুপম চক্রবর্তী, ক্রীড়া সম্পাদক দেবাশীষ বড়ুয়া দেবু, গ্রন্থাগার সম্পাদক রাশেদ মাহমুদ, সমাজসেবা ও আপ্যায়ণ সম্পাদক আইয়ুব আলী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মিন্টু চৌধুরী, কার্যকরী সদস্য স ম ইব্রাহীমসহ ক্লাবের জ্যেষ্ঠ সদস্য এবং বিভিন্ন অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীরা উপস্থি ছিলেন।