বুধবার ● ৩০ ডিসেম্বর ২০২০
প্রথম পাতা » জাতীয় » করোনা মহামারীর মধ্যে দুর্ণীতির মহামারী: বাজারে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে সরকার- সাইফুল হক
করোনা মহামারীর মধ্যে দুর্ণীতির মহামারী: বাজারে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে সরকার- সাইফুল হক
ঢাকা :: বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেছেন করোনা মহামারীর মধ্যে দুর্ণীতির মহামারী, ধর্ষনের মহামারী, টাকা পাচারের মহামারী, বাজার সিন্ডিকেট করে বাজারে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
তিনি আজ বুধবার ৩০ ডিসেম্বর বাম গণতান্ত্রিক জোটের আহ্বানে আয়োজিত গণতন্ত্রের কালো দিবস পুরানা পল্টন মোড়ে মিছিলপূর্ব সমাবেশে এসব কথা বলেন।
দুই বছর পূর্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে ভোট ডাকাতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সেই নির্বাচনকে ভুয়া নির্বাচন এবং ভুয়া নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গঠিত সরকারকে ভুয়া সরকার বলে অভিহিত করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক ক্ষোভের সাথে বলেন, প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া সরকার গণতন্ত্রের কাল দিবসকে গণতন্ত্রের বিজয় দিবস হিসেবে পালন করে নির্লজ্জ সরকার। তিনি বলেন, এই সরকার ভোট কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি করে নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা দিয়েছে। সাইফুল হক আরো বলেন, এই সরকার অটোপ্রমোশনের সরকার, দুই বছর আগে ভোট ডাকাতির মধ্যে দিয়ে নিজেদেরকে অটোপ্রমোশন দিয়েছে। তিনি বলেন, এই সরকার ২০১৮ সালে ৩০ ডিসেম্বর বিভিন্ন বাহিনী, আমলাদের ব্যবহার করে ভোট ডাকাতি করে বাংলাদেশের সাংবিধানিক মর্যাদাকে ভুলুন্ঠিত করেছে। গণমানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার অপরাধে আপনাদের বিরুদ্ধে কোটি কোটি মানুষ মামলা করতে পারে কিন্তু আপনারা এমন আইন করেছেন আপনাদের বিরুদ্ধে সামান্য সমালোচনা করলে ডিজিটাল নিরাপত্ত্বা আইনে মামলা করে দেন। তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা ১৭ কোটি মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে মানুষকে অমর্যাদা করেছেন, অসম্মান করেছেন, মানুষ এখন কোন আদালতে মামলা করবে! এজন্য বলতে চাই এ সরকারের কোন কার্যকারিতা নাই। রাষ্ট্র একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গেলে রাজনৈতিক অস্থিত্ব লাগে, নৈতিক অস্থিত্ব লাগ, জনগণের সম্মতি লাগে। এ সরকার জনগণের মতামত উপেক্ষা করে, জনগণের অধিকার ভুলুণ্ঠিত করে রাষ্ট্র যন্ত্রকে দমনমূলক প্রতিষ্ঠানে পরিনত করেছে। তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, বাজারের আগুন আর মানুষের মনের আগুন যদি এক সাথে হয় এই সরকার দিক হারিয়ে মরবে।
এসময় অবিলম্বে ভোট ডাকাতির নির্বাচন বাতিল, ক্ষমতাসীন অবৈধ সরকারের পদত্যাগ এবং একইসাথে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানান। ঘোষিত দাবি আদায়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে নেতৃবৃন্দ দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর ভোট ডাকাতির নির্বাচনের আয়োজক ও আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত অবিহিত করে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগের দাবিতে আগামী ৬ জানুয়ারি ২০২১, বুধবার আগারগাঁওস্থ নির্বাচন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করার কর্মসূচি ঘোষনা দেন বামজোট নেতারা।
বাম গণতান্ত্রিক জোট কালো দিবস পালনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দেয়। পল্টন মোড়ে মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের কেন্দ্রীয় সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকী, বাসদ মার্কসবাদী’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আ ক ম জহিরুল হক, ইউসিএলবি’র সম্পাদকম-লীর সদস্য নজরুল ইসলাম, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি’র কেন্দ্রীয় নেতা শহীদুল ইসলাম সবুজ, ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী)’র কেন্দ্রীয় নেতা সিরাজুম মুনীর, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক।
সভা পরিচালনা করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা কমরেড আকবর খান।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের এই দিনে সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে কালো পতাকা বিক্ষোভ মিছিল কয়েক দফা পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। মৎস্য ভবনের সামেন পুলিশি বাধা অতিক্রম করে বিক্ষোভ মিছিল শাহবাগে গেলে দ্বিতীয় দফায় বাধা দেয় পুলিশ। সেখানে পুলিশের আক্রমণে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারন সম্পাদক কমরেড সাইফুল হকসহ গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি আহত হন।