রবিবার ● ৩ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » খাগড়াছড়িতে মিঠুন চাকমার স্মরণসভা
খাগড়াছড়িতে মিঠুন চাকমার স্মরণসভা
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি :: ইউপিডিএফ এর প্রচার ও প্রকাশনা বিভাগ নিরন চাকমা প্রেরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, “বিপ্লবীর মৃত্যু নেই, বেঁচে থাকে অনন্তকাল বিপ্লবের চেতনায়” এই স্লোগানে ইউপিডিএফ’র অন্যতম সংগঠক ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাবেক সভাপতি শহীদ মিঠুন চাকমা’র ৩য় শহীদ বার্ষিকীতে খাগড়াছড়িতে স্মরণসভা করেছে ইউনাইটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
আজ রবিবার ৩ জানুয়ারি সকাল ১০টায় “শত শহীদের আত্মত্যাগের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে নারীর সম্ভ্রম ও জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষা তথা পূর্ণস্বায়ত্তশাসন আন্দোলন জোরদার করি” এই আহ্বানে ইউপিডিএফের খাগড়াছড়ি সদর ইউনিটের উদ্যোগে খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় এ স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ(পিসিপি)-এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অমল ত্রিপুরার সঞ্চালনায় শহীদ মিঠুন চাকমার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান ইউপিডিএফ সংগঠক অংগ্য মারমা ও প্রকাশ চাকমা।
এতে আরো উপস্থিত ছিলেন, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিপুল চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রিপন চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের প্রতিনিধি এন্টি চাকমা।
এরপর মিঠুন চাকমাসহ সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন, ইউপিডিএফ সংগঠক অংগ্য মারমা।
তিনি বলেন, মিঠুন চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশের নিপীড়িত জনগণের মুক্তির লক্ষ্যে আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন ও ভূমি বেদখলের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে গিয়ে মিথ্যা মামলা, জেল-জুলুম, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার হয়েও তিনি দমে যাননি। লড়াই-সংগ্রামে অবিচল থেকেছেন।
তিনি আরও বলেন, মিঠুন চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রামের নিপীড়ন-নির্যাতন ও জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষা তথা পূর্ণস্বায়ত্তশাসনের লড়াইয়ে একজন নিবেদিতপ্রাণ সংগঠক ছিলেন। লড়াই-সংগ্রামে তাঁর অবদান চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। মিঠুন চাকমা যে চেতনায় লড়াই সংগ্রাম করে গেছেন সে চেতনার কোন মৃত্যু নেই।
তিনি পার্বত চট্টগ্রামে জাতীয় অস্তিত্ব রক্ষা ও অন্যায় দমনপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করার মাধ্যমে মিঠুন চাকমার লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
অংগ্য মারমা অভিযোগ করে বলেন, শাসকগোষ্ঠী মিঠুন চাকমাকে হত্যা করেও ক্ষান্ত হয়নি। তারা মিঠুন চাকমার খুনি-সন্ত্রাসীদের জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। শাসকগোষ্ঠীর মদদে এই সন্ত্রাসীরা অবাধে খুন, গুম, অপহরণসহ নানা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। মিঠুন চাকমাকে হত্যার ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও প্রশাসন এখনো চিহ্নিত হত্যাকারীদের গ্রেফতার করেনি। উপরন্তু সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে রাখা হয়েছে।
তিনি অবিলম্বে মিঠুন চাকমার হত্যাকারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় ও মদদ দেয়া বন্ধ করার দাবি জানান।
এছাড়া জেলার পানছড়ি ও গুইমারায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের স্থানীয় শাখার উদ্যোগে শহীদ মিঠুন চাকমার শহীদ বার্ষিকীতে স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন স্থানে মিঠুন চাকমার শহীদ বার্ষিকী পালিত হয়েছে বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা আদালত থেকে মামলায় হাজিরা দিয়ে শহরের অপর্ণা চৌধুরী পাড়ার নিজ বাড়িতে ফেরার পথে বাড়ির প্রবেশ গেট এলাকা থেকে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী মোটর সাইকেলযোগে এসে মিঠুন চাকমাকে তুলে নিয়ে যায় এবং দক্ষিণ পানখাইয়া পাড়া এলাকায় রাস্তার মাঝে মাথায় ও বুকে গুলি করে হত্যার পর ফেলে রেখে যায়।