বুধবার ● ২৭ জানুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » ক্যাপসিকাম চাষে ব্যাপক সাফল্য দেখছে কৃষকরা
ক্যাপসিকাম চাষে ব্যাপক সাফল্য দেখছে কৃষকরা
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: বর্তমানে জনপ্রিয় সবজি’র মধ্যে ক্যাপসিকাম অন্যতম। ক্রমেই বড় শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ছে প্রত্যন্তপল্লীর মাঠে ঘাটে। শৈলকুপা কৃষি অফিসের উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মসলেহ উদ্দিন তুহিন ও শিক্ষিত বেকার যুবক নেওয়াজ শরিফের তত্ত্বাবধানে গড়ে তোলা বাহারী ক্যাপসিকাম ক্ষেত নিয়ে স্থানীয়দের আগ্রহের শেষ নেই। বাস্তবতার স্বপ্ন রাঙাতে পৌর এলাকার পাঠানপাড়া গ্রামে দৃষ্টিনন্দন ৪০ শতাংশ জমিতে দোল খাচ্ছে ক্যাপসিকামের আবাদ। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় থেকে নৃবিজ্ঞানে পাশ করা ছাত্র উপজেলায় প্রথম মিষ্টি মরিচ চাষে ঝুঁকে পড়ায় আগ্রহী হচ্ছে আরো অনেকে। সরেজমিন পরিদর্শনে নেওয়াজ শরিফ জানায়, করোনাকালীন মহামারীর মধ্যে একদিকে অর্থাভাব অন্যদিকে বেকারত্বের ফাঁদে পড়ে তার সহযোগি বন্ধু রাশেদুল আলম বনির সাথে আলোচনা করে আদর্শ চাষী হওয়ার স্বপ্ন দেখে। প্রথমে তার বাবা শরিফুল ইসলাম রাজি না হলেও একপর্যায়ে ছেলের স্বপ্ন পূরনের জন্য ৫ হাজার চারা লাগানোর উপযোগি জমি তৈরিতে সাহায্য করেন। বিজ্ঞান ভিত্তিক একটি উন্নত প্রজাতির কৃষি খামার গড়ে তোলার লক্ষেই তার সামনে হাসছে সবুজ ক্যাপসিকাম। আগামী ফেব্রুয়ারি মার্চ মাসের মধ্যেই ক্ষেতে থেকে সম্পূর্ণ ক্যাপসিকাম সংগ্রহ করা যাবে। সে বিবেচনায় তাইওয়ানের এ জাত থেকে অন্তত ৫ টন ফল উত্তোলনের লক্ষমাত্রা রয়েছে। যার স্বাভাবিক বাজার মূল্য ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বেঁলে দোয়াশ মাটির এ মিষ্টি মরিচ থেকে ৪ মাসে বিশাল অংকের টার্গেটকে কাজে লাগিয়ে সে হতে চায় সফল চাষী। পরিচ্ছন্ন পরিপাটি ক্ষেতের চারিদিকে বেষ্টনী, রয়েছে সেচ ব্যবস্থা ও পাহাড়াদার। মেধা শ্রম ও সাধনার সমন্বয় ঘটিয়ে নেওয়াজ শরিফ জানায়, চাকুরির বাজার খুব কঠিন তাছাড়াও করোনাকালীন অবসরে তার সৃজনশীল চিন্তা ছড়িয়ে দিতে চায় অন্যান্য শিক্ষিত বেকার যুবকদের মাঝে। তার বিশ^াস সাবলম্বী হওয়ার জন্য শুধু চাকুরিতে নয় কৃষিতেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা যায়। একারনে যথার্থভাবে লেখাপড়াকে কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষি খামার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে তার নিরন্তর যাত্রা শুরু হয়েছে। দেশে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে, মিষ্টি মরিচের আকার ও আকৃতি বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। তবে সাধারণত ফল গোলাকার ও ত্বক পুরু হয়। দেশীয় প্রচলিত সবজি না হলেও বর্তমানে এর চাষ প্রসারিত হচ্ছে। বিশেষ করে বড় বড় শহরের আশেপাশে সীমিত পরিসরে কৃষক ভাইয়েরা এর চাষ শুরু করেছে। যা অভিজাত হোটেল ও বিভিন্ন বড় বড় মার্কেটে বিক্রি হয়ে হচ্ছে। এ ছাড়া মিষ্টি মরিচের বিদেশে রপ্তানীর সম্ভাবনাও প্রচুর। সারা বিশ্বে টমেটোর পরেই দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সবজি হচ্ছে মিষ্টি মরিচ বা ক্যাপসিকাম। প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ’সি’ সমৃদ্ধ মিষ্টি মরিচ খাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা যেতে পারে। শৈলকুপা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আকরাম হোসেন জানান, অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ক্যাপসিকাম চাষের উপযোগি সময়। আগে থেকে তৈরি করে রাখা বীজতলায় ১০ সেমি. দূরে দূরে লাইন করে বীজ বুনতে হবে। ৭-১০ দিন পর চারা ৩-৪ পাতা হলে মাঝারি আকারের পলিথিন ব্যাগে চারা স্থানান্তর করতে হবে। প্রতিটি বেড চওড়া ২.৫ ফুট মাঝখানে নালা রাখা দরকার। সাধারণত ৩০ দিন বয়সের চারা তৈরি করা বেডে ১.৫ ফুট দূরে দূরে লাইনে রোপণ করা হয়। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত রাতের তাপমাত্রা অনেক কমে যায় বলে পলিথিনের ছাউনি দিয়ে রাখলে ভেতরের তাপমাত্রা বেশি থাকে। যেহেতু, ক্যাপসিকাম খরা ও জলাবদ্ধতা কোনটাই সহ্য করতে পারে না, তাই প্রয়োজন অনুসারে জমিতে সেচ দিতে হবে। কোন গাছে ফল ধরা শুরু হলে খুঁটি দিতে হবে যাতে গাছ ফলের বারে হেলে না পড়ে। জমি সব সময় আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। তিনি বলেন পাঠানপাড়া গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক নেওয়াজ শরিফের ক্ষেতটি নিয়মিত দেখভাল করা হয়। এখান থেকে বহু যুবক কৃষিকর্মীর সাথে পরামর্শ করে অনুপ্রানিত হবে মনে মনে করি।
যশোরের দুজনকে অপহরন: আটক-৫
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে শহরের আরাপপুর এবং মুজিব চত্বর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মুক্তিপণদাবিকারী সন্ত্রাসী গ্রুপের প্রধান লিখনসহ ৫ জন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো, বসির বিশ্বাসের ছেলে লিখন বিশ্বাস (২৬), শাহাদত লস্করের ছেলে মিরাজ লস্কর (২০), জিন্নাহ বিশ্বাসের ছেলে তুহীন বিশ্বাস (২৩) ও কামরুল হোসেনের ছেলে রিপন হোসেন। এদের সবার বাড়ি ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গিলাবাড়িয়া গ্রামে। এর আগে রাকিবুল ইসলাম (২৫) নামে আরো একজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কামাল উদ্দিন জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীরা গত ২৩/০১/২১ ইং তারিখে খুলনা মিলিটারি কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্রী যারীন ইয়াসমিন (১৮) তার বন্ধু শামীম আহমেদ (১৮) ঝিনাইদহ শহরের মহিষাকুন্ড এলাকায় পৌর পার্কে বেড়াতে আসেন। সেসময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ৬/৭ জন সন্ত্রাসী যুবক তাদের পথরোধ করে জোরপূর্বক একটি পরিত্যক্ত ভবনে নিয়ে জিম্মি করে রাখে। তারা সেখানে তাদের মারধর করে, ছুরি দেখিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে একলাখ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে বিকাশের মাধ্যমে কিছু টাকা নিয়ে নেয়। সন্ত্রাসীরা যারীনকে শ্লীলতাহানি করার চেষ্টা করে এবং তাদের সাথে থাকা সমস্ত টাকা পয়সা নিয়ে ছিনিয়ে নেয়। মেয়েটির স্কুল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এই সংবাদ পেয়ে ওই রাতেই ঝিনাইদহ র্যাব-৬ এর একটি বিশেষ দল ঘটনাস্থল থেকে ভিকটীম: যারীন ইয়াসমীন (১৮) ও শামীম আহমেদকে (১৮) উদ্ধার করে এবং ওই দিনই র্যাব রাকিবুল ইসলাম (২৫) নামে এক মুক্তিপণদাবিকারী সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করে। এরপর বাকিদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব এর পিছনে কারা জড়িত তাদের খুজে করে বাকিদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় যারীন ইয়াসমীন বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলা নং-৩২, তারিখ ২৪/০১/২১ ইং, ধারা-৩৪১/৩২৩/৩৮৫/৩৮৭/৩৪২/৫০৬ পেনাল কোড। উল্লেখ্য গ্রেফতারকৃত লিখন বিশ্বাস মুক্তিপণদাবীকারী সন্ত্রাসী গ্রপের প্রধান এবং উক্ত ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ছিল।
হরিণাকুন্ডু উপজেলা আ’লীগের আরো ৩ নেতা বহিস্কার
ঝিনাইদহ :: ভোটের দিন যতই এগিয়ে আসছে ততই বিভেদ আর কোন্দল বাড়ছে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু আওয়ামীলীগে। এক সপ্তাহ যেতে না যেতেই আরো বহিস্কার হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের ৩ নেতা। দলীয় সুত্রে জানা গেছে, হরিণাকুন্ডু পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোঃ ফারুক হোসেনের বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগে শাসকদলের ৩ নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এনিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ৬ নেতাকে বহিষ্কার করলো জেলা আওয়ামী লীগ। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আছাদুজ্জামান আছাদ। ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সাজেদুর রহমান টানু মল্লিক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য রবিউল ইসলাম পিলু মল্লিক ও হরিণাকুন্ডুু পৌর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মানুনর রশিদ আজাদ মল্লিককে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, এই তিন নেতা আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন বলে তদন্তে প্রমাণ পেয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগ। এই ৩ ব্যক্তি নৌকার বিপক্ষে ভোট করতে ভোটারদের উৎসাহিত করছেন বলে জেলা আওয়ামী লীগ তাদের বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী (জগ মার্কা) সাইফুল ইসলাম টিপু মল্লিকের সাথে আওয়ামী লীগের কোন সম্পর্ক নেই বলেও জানানো হয়।