সোমবার ● ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহন
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহন
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে সুন্দরবনকে ভালোবাসুন’ স্লোগান নিয়ে বাগেরহাটের শরণখোলায় পালিত হয়েছে ‘সুন্দরবন দিবস’। দিবসটি উপলক্ষ্যে রবিবার দুপুরে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন খুঁড়িয়াখালী বাজারের শোভাযাত্রা শেষে প্রদীপন সাইক্লোন শেল্টারে আলোচনা সভা অনষ্ঠিত হয়। সভায় সুন্দরবন দিবসকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান বক্তারা।
বনবিভাগের ব্যবস্থাপনায় এবং সুন্দরবন সহব্যবস্থাপনা কমিটি (সিএমসি) ও ওয়াইল্ড টিমের সহযোগীতায় দিবসটি পালিত হয়। সিএমসির সহসভাপতি এম ওয়াদুদ আকনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন শরণখোলা রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) মো. জয়নাল আবেদীন।
অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন সিএমসির কোষাধ্যক্ষ ফরিদ খান মিন্টু, পিপলস ফোরামের সভাপতি জাহাঙ্গীর জমাদ্দার, সাবেক সভাপতি আবুল আসলাম তুহিন, সদস্য রফিকুল ইসলাম প্রমূখ। এছাড়া, কর্মসূচীতে বনকর্মী ও পেশাজীবী নারী-পুরুষরা অংশগ্রহন করেন।আপর দিকেমোংলায় সুন্দরবন দিবস-২০২১ উপলক্ষে মোংলা উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ,বাদাবন সংঘ, সুন্দরবন জাদুঘর ও পশুর রিভার ওয়াটার কিপার মোংলা বাগেরহাটের এর আয়োজনে রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে রবিবার দুপুরে বিশ্ব ঐতিহ্য, বাংলাদেশের ফুসফুস, অফুরন্ত জিবন জিবিকার উৎস সুন্দরবন সুরক্ষায় সচেতনতামূলক র্যালী ও শপথগ্রহণ, সকাল ১১টায় চৌধুরীর মোড়ে মানববন্ধন, বিকেল ৪টায় পৌর কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার চত্বরে ”সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি” শীর্ষক শিশু চিত্রাংকন এবং ”বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন” শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতা, বিকেল সাড়ে ৪টায় শহীদ মিনার চত্বরে”সুন্দরবন, বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু” শীর্ষক আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে।
মেয়েকে সাথে নিয়ে ভোট দিলেন এমপি
বাগেরহাট :: বাগেরহাটে মেয়েকে সাথে নিয়ে ভোট দিয়েছেন বাগেরহাট-২ (বাগেরহাট-কচুয়া) আসনের বারবার নির্বাচিত সাবেক এমপি অধ্যাপক মীর সাখাওয়াত আলী দারু। ১৪ ফেব্রুয়ারী (রবিবার) বাগেরহাট পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের নাগের বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে তিনি ভোট দেন। বাগেরহাট-২ আসনের তিন বারের নির্বাচিত সাবেক এ এমপি এলাকার মানুষের কাছে ছিলেন ব্যাপক জনপ্রিয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন মীর সাখাওয়াত আলী দারু এমপি থাকালিন তার আসনে ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতা ও বয়সের ভারে নতজানু অধ্যাপক মীর সাখাওয়াত আলী দারু হুইল চেয়ারে বসে একমাত্র কণ্যা মীর জেনিয়া সাখাওয়াতকে সাথে নিয়ে ভোট দেন।
মীর জেনিয়া সাখাওয়াত বলেন, আমার বাবা ছিলেন বাগেরহাট সদর আসনের তিন বারের নির্বাচিত এমপি। এলাকার উন্নয়নে ব্যাপক কাজ করেছেন তিনি। ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠনে তিনি ছিলেন অগ্রগামি। তিনি তার কর্মজীবনে নিজের জন্য কিছুই করেননি। সব সময় এলাকার অসহায় মানুষের জন্য চিন্তা করতেন। সুখে-দুখে সব সময় মানুষের পাশে থাকতেন। শারীরিক অসুস্থতার জন্য তিনি কথা বলতে না পারলেও তিনি সারা জীবন আওয়ামী লীগের জন্য নিঃস্বার্থ ভাবে কাজ করে গেছেন। আজ ভোট দেওয়ার পর তার চেহারায় ছিলো আনন্দের হাসি। আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতিক সব সময় তার জন্য ভালোলাগা ও ভালোবাসার প্রতিক।
উল্লেখ্য, তিনবার এমপি অধ্যাপক মীর সাখাওয়াত আলী দারু এমপি থাকাকালিন নিজের জন্য কিছুই করেনি কখনো। বাগেরহাট-২ আসন নয় বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকায় তিনি অসংখ্য, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি এলাকার শত শত বেকার যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। তিনি ২০০০ সালে এমপি থাকাকালিন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শারিরীক ভাবে গুরুত্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার স্ত্রী ফরিদা আক্তার বানু বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। একমাত্র মেয়ে মীর জেনিয়া সাখাওয়াত কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের নেত্রী।
বাগেরহাটে খিরাই চাষে বাম্পার ফলনে চাষির মুখে খুশির হাঁসি
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের ফকিরহাটে বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলী বিলে অর্গানিক পদ্ধতিতে খিরাই চাষ সহ ঘেরের পাড়ে নানা প্রকার সবজির চাষ করে বিপ্লব ঘটিয়েছেন এক মাদ্রাসার শিক্ষক। খিরাই সহ নানা প্রকার সবজির ফলনও বাম্ফার হয়েছে। এই বিলের শতাধিক চাষি তাদের মৎস্য ঘেরের পাড়ে বিভিন্ন প্রকার শীতকালিন সবজির চাষ করে কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিসের নানা প্রকার পরামর্শ হাতে কলমে প্রশিক্ষন সহ নানা উপকরণ সামগ্রী বিতরন করায় এ অঞ্চলে কৃষিতে বিপ্লব ঘটানো সম্ভব হয়েছে। ইদুর নিধন বা দমনে কৃষি বিভাগ যদি আলাদা কোন প্রকল্প গ্রহন করেন, তাহলে কৃষিতে আরো অগ্রগতি করা সম্ভব হবে বলে অভিজ্ঞ মহলের মত।
জানা গেছে, উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের ধনপোতা গ্রামের মরহুম নকিমুদ্দিন শেখ এর ছেলে ও ভবনা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ আবু দাউদ শেখ, করোনা কালিন সময়ে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় চাকুলী বিলে মাত্র ৬০শতাংশ জমিতে গত বছরের ১৪ নভেম্বর বেতাগা দিবসের দিন সকালে শীতকালিন খিরাই রোপন করেন। এরপর তিনি দীর্ঘ পরিচর্যার পর ৩০ডিসেম্বর প্রথম খিরাই তোলা শুরু করেন। প্রথম দিকে প্রতিদিন ৭/৮মন খিরাই তুলে যা মনপ্রতি ৮/৯শত টাকায় বিক্রি করা শুরু করেন। বিষ ও রাসায়নিক মুক্ত খিরাই উৎপাদন করায় বাজারে এর চাহিদা অনেক গুন বেড়ে যায়। তিনি এপর্যন্ত প্রায় দেড় বিঘা জমিতে রোপনকৃত খিরাই দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকার বেশি বিক্রয় করেছেন। যা নজির বিহীন।
একটি মাদ্রাসার ১জন সহকারী শিক্ষক হওয়া সত্বেও তিনি খিরাই চাষে যে সফলতা দেখিয়েছেন তা সত্যিই প্রসংশনীয়। শুধু তাই নয়, খিরাই ফসলের মধ্যে লুনা জাতের বেগুনের চাষও করেছেন তিনি। শীতকালিন সবজি খিরাই উঠে গেলে সেই জমিতে রোপনকৃত লুনা জাতের বেগুন চাষও ভাল হয়েছে। বেগুনের চারায় এখন অল্পঅল্প ফুল আসতে শুরু করেছে। বেগুনের ফসলও ভাল হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এছাড়াও তিনি চাকুলী বিলে তাঁর নিজস্ব ৫বিঘার মৎস্য ঘেরের পাড়ে বেগুন, টমেটো, সিম,ওলকপি, ফুলকপি ও লাউ সহ নানা প্রকার সবজির চাষ করে বাম্পার ফলন পেয়েছেন। এর আগে তিনি ঘেরের পাড়ে করোলা চাষ করেছিলেন। তিনি সত্যিই একজন সফল চাষি বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন।
সবজি চাষি ও সহকারী শিক্ষক মোঃ আবু দাউদ শেখ বলেন, করোনা কালিন সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তিনি সবজি চাষে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। প্রতিটি ফসলও ভাল হয়েছে। ইচ্ছা থাকলেই সব কিছুই করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, সরকার চাষিদের স্বাবলম্বি করার জন্য যে কার্যক্রম গুলি পরিচালনা করেছেন সেগুলি খুব ভাল, কিন্তু ইদুর নিধন বা দমনের জন্য কৃষি বিভাগ যদি আলাদা কোন প্রকল্প গ্রহন করেন তাহলে কৃষিতে আরো অগ্রগতি করা সম্ভব হবে।
এছাড়াও বেতাগা ইউনিয়নের মাসকাটা বিল, ধনপোতা বিল, লখপুর ইউনিয়নের লখপুর বিল, বল্লবপুর বিল, ভবনা বিল, বাহিরদিয়া-মানসা ইউনিয়নের লালচন্দ্রপুর বিল, হুচলা বিল, সাতবাড়িয়া বিল, পিলজংগ ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বিল সহ বিভিন্ন বিলে অবস্থিত মৎস্য ঘেরের পাড়ে বিপুল পরিমানে সবজির চাষ করা হয়েছে।
চাষিরা বলেন, ঘেরের পাড়ে ভেরির উপরে উর্বর জমিতে সবজির চাষ ভাল হয়। সে কারনে তারা ভেড়ী বা ফাতারির উপরে সবজির চাষ করে থাকেন এবং নিচু জমিতে মাছ ও ধানের ফসল করে থাকেন।