বুধবার ● ৩ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » ৯ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা দেনাসহ শূন্য তহবিল নিয়ে গাইবান্ধা পৌর মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ
৯ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা দেনাসহ শূন্য তহবিল নিয়ে গাইবান্ধা পৌর মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ
স্টাফ রিপোর্টার :: ৯ কোটি ৬৮ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা দেনা কাঁধে নিয়ে গাইবান্ধা পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন মেয়র মতলুবর রহমান ও পৌর পরিষদের কাউন্সিলররা। আজ ৩ মার্চ বুধবার পৌর মিলনায়তনে জেলার সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
মতবিনিময়কালে পৌরসভার অতিরিক্ত সচিব রেজাউল হক জানান, বর্তমান মেয়র মতলুবর রহমান ও তাঁর পৌর পরিষদ ৯ কোটি ৬৮ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকার দায়দেনা নিয়ে শূন্য তহবিলে এই পৌরসভার দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
তিনি জানান, শুধু বিদ্যুৎ বিল খাতেই বকেয়া রয়েছে ৮ কোটি টাকা। এসময়ে পৌরসভার তহবিল বলতে এলজিএসপি’র অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল খাতে শুধুমাত্র ৩ কোটি ৪২ লক্ষ ৯১ হাজার টাকা (যা ঠিকাদারদের উন্নয়ন কাজের বিল পরিশোধের জন্য) পৌরসভার জন্য বরাদ্দকৃত তহবিলে বিদ্যমান রয়েছে।
এসময় বক্তব্য রাখেন পৌরসভার মেয়র মতলুবর রহমান, কাউন্সিলর আফরোজা খানম মিতা, মমতা সরকার, সাবিনা ইয়াসমিন, শেখ শাহীন, মহিউদ্দিন আহমেদ রিজু, কামাল হোসেন, রকিবুল হাসান সুমন, আব্দুস সামাদ রোকন, শহিদ আহমেদ, আবু বকর সিদ্দিক স্বপন, আসাদুজ্জামান হাসু ও হুমায়ুন কবির স্বপন।
মতবিনিময় সভায় উল্লেখ করা হয়, অধিগ্রহণকৃত পৌরপার্কের জমি, অবকাঠামো ও মেরামত বাবদ সড়ক ও জনপথ বিভাগের কাছ থেকে ৬ কোটি ১২ লক্ষ ৫৩ হাজার ৮শ ২৯ টাকা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ চেক বাবদ গ্রহণ করে, যা ২৬ জানুয়ারি জনতা ব্যাংকে পৌরসভার একটি হিসাবে (হিসাব নং-৭৯৫) জমা হয়। কিন্তু পৌরপার্কের উন্নয়নে ওই টাকা ব্যয় না করে সামাজিক অনুষ্ঠান, নানা অনুদান প্রদান, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জ্বালানি, আপ্যায়ন, লেবার ও সুইপারের বেতনসহ অন্যান্য অনির্ধারিত খাতে এই অর্থ ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়াও করোনাকালিন ৭৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ও উক্ত পৌর পার্কের টাকা থেকে সমন্বয় করা হয়েছে।
এমনকি পৌরসভার ষাঁটলিপিকার কর্মরত মিলন সরকারের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবে ১৩ লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা পৌরসভার চেকে জমা করা হয়েছে। উল্লেখিত টাকা একজন পৌর কর্মচারীর ব্যক্তিগত হিসাবে কি বাবদ জমা করা হয়েছে, তার ব্যয়ের কোনো বিবরণ উল্লেখ নেই এমনকি বর্তমান পৌর পরিষদের কাছে ওই টাকার খরচ বাবদ কোনো ভাউচারও জমা দেয়া হয়নি। এজন্য বর্তমান পৌর মেয়র উক্ত কর্মচারীকে কারণ দর্শানো নোটিশ জারি করেছেন যার পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
বিভিন্ন খাতে ঋণ বাবদ ৪৫ লক্ষ ৮ হাজার টাকা ব্যয় দেখানো হয়েছে। এছাড়া পৌরসভার অন্যতম আয়ের উৎস পুরাতন বাজারের মতো একটি সমৃদ্ধ বাজারের টোল আদায় থেকে ৫ মাসের আয় বাবদ দায়িত্ব প্রদানকালে ওই খাতে পৌরসভার তহবিলে জমা পাওয়া গেছে মাত্র ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা। অথচ বর্তমান দায়িত্ব গ্রহণের ৭ দিনের মধ্যেই ওই বাজার থেকে আয় হয়েছে ১ লক্ষ ৭ হাজার টাকা এবং ১৫ দিনে আয় হয়েছে ১৫ লক্ষ টাকা। পুরাতন বাজার এ বছর ইজারা দেয়া হয়েছে ৮৫ লক্ষ ৫১ হাজার ৫শ ৮১ টাকা। অথচ ওই বাজার থেকেই এ বাবদ বার্ষিক আয় হয়েছে গড়ে ৮ লক্ষ টাকা।
পৌর মেয়র মতলুবর রহমান মতবিনিময়কালে বলেন, তিনি স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক একটি পৌরসভা গড়ে তুলতে চান। এব্যাপারে সাংবাদিকসহ পৌরবাসীদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি উল্লেখ করেন, বিগত সময়ের আয়-ব্যয়ের সমুদয় হিসাব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অডিট করা হবে এবং তা পরবর্তীতে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে।