রবিবার ● ১৪ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » কচুরিপানা দিয়ে তৈরী ফুলদানি, ফুলের টব, ঝুঁড়িসহ নানা দ্রব্য সামগ্রী যাচ্ছে বিদেশে
কচুরিপানা দিয়ে তৈরী ফুলদানি, ফুলের টব, ঝুঁড়িসহ নানা দ্রব্য সামগ্রী যাচ্ছে বিদেশে
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধা ফুলছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারীদের নান্দনিক এবং শৈল্পিক নিপুণতায় এই জলজ কচুরিপানাও এখন মূল্যবান হয়ে উঠেছে। কচুরিপানা থেকে উৎপাদিত নানা মূল্যবান শৌখিন সামগ্রীর মধ্যে ফুলদানি, ফুলের টব, মাদুর, ঝুঁড়িসহ ঘর সাজানোর অন্যান্য জিনিস এখন উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে। এমনকি কচুরিপানা থেকে তৈরী এসব সামগ্রী আমেরিকাসহ নানা দেশেও যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার মদনেরপাড়া গ্রামের সুভাষ চন্দ্র ঢাকা থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এসে শুরুতেই ভাষারপাড়া গ্রামে কচুরিপানা শুকিয়ে তা থেকে নানা সামগ্রী তৈরীর বিষয়ে ওই এলাকার কয়েকজন নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়। এরপর ভাষারপাড়া, কঞ্চিপাড়া, মদনেরপাড়া ও সদর উপজেলার দারিয়াপুর এবং তালতলা গ্রামের ২শ’ ৫০ জন নারীকে নিয়ে কচুরিপানার এসমস্ত নানা সামগ্রী তৈরীর কাজ শুরু করেন।
৪টি গ্রামের ২শ’ ৫০ জন দরিদ্র নারী যুক্ত হয়েছে এই কাজের সঙ্গে। ভাষারপাড়া গ্রামে কচুরিপানা নিয়ে কর্মরত নারীদের সাথে কথা বললে জানা যান, বাড়ির কাজ, নিজের কাজ এছাড়া ছাত্রীরা পড়ালেখার অবসরে কচুরিপানা দিয়ে ফুলদানি তৈরীসহ নানা সামগ্রী তৈরীতে নিয়োজিত। তারা দিনে ৫-৬টা পর্যন্ত ফুলদানি তৈরী করতে পারে। এতে তাদের প্রতিদিনের আয় হয় ২শ’ থেকে ২শ’ ৫০ টাকা। এই আয়ের টাকা দিয়ে সংসারের খরচ যোগাচ্ছে এবং তার পাশাপাশি এক সময়ের পরিত্যক্ত কচুরিপানাকেও আয়মূলক শিল্প সামগ্রীতেও পরিণত করছে।
এব্যাপারে এই কাজের উদ্যোক্তা সুভা চন্দ্র জানান, তার পুঁজি অল্প। এ কারণে অর্থাভাবে তিনি এই শিল্পের প্রয়োজনীয় ও বিকাশ ঘটাতে পারছেন না। কচুরিপানার এই ঘর সাজানো জিনিসের যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। বিদেশেও চাহিদা কম নয়। তবে এজন্য ব্যাংক থেকে ক্ষুদ্র ঋণসহ প্রয়োজনীয় সরকারি সহযোগিতা পেলে ওই কচুরিপানা থেকে উন্নতজাতের হস্তশিল্প তৈরী করে এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীদের স্বাবলম্বী করে তুলতে তা যথেষ্ট কার্যকর ভুমিকা রাখবে।
ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারমান জেএম সেলিম পারভেজ জানান, তিনি এ কাজ কোনদিন দেখেননি। শুকনো পানা এক সময় আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হতো। গো-খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন সেই পানা দিয়ে তৈরী হচ্ছে ফুলদানিসহ অন্যান্য জিনিস। এতে এই এলাকার নারীদের যেমন উপকার হচ্ছে, তেমনি গ্রামের তৈরী সামগ্রী দেশ থেকে রপ্তানি হচ্ছে আমেরিকার মতো উন্নত দেশে। এটা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।