শনিবার ● ২০ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » গুনীজন » রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দাফন সম্পন্ন
রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের দাফন সম্পন্ন
মো. ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী প্রতিনিধি :: নোয়াখালীর কৃতি সন্তান, বরেণ্য রাজনীতিবিদ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের ৬ষ্ঠ জানাজা শেষে লাখো মানুষের শ্রদ্ধায় চির নিদ্রায় শায়িত হলেন।
গতকাল শুক্রবার (১৯ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টা ৩৫মিনিটের দিকে কোম্পানীগঞ্জের মানিকপুর গ্রামের পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
এদিকে জানাজায় অংশ নেয়ার জন্য দুপুরের পর থেকেই কবিরহাট সরকারি ডিগ্রি কলেজ ও বসুরহাট সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে জনসমাগম বাড়তে থাকে। দুপুর ৩টায় কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ । সেখানে তার তৃতীয় নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়। এর পরেই অ্যাম্বুলেন্সে করে মওদুদ আহমদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সরকারি মুজিব কলেজ মাঠে। সেখানে জানাজা শেষে নিজ বাড়ির দরজায় এই খ্যাতিমান রাজনীতিককে এলাকার সর্বোস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা ও ৬ষ্ঠ জানাজা শেষে সমাহিত করা হয়।
এর আগে, সিঙ্গাপুরে ১টি জানাজা ও ঢাকায় দুটি জানাজা শেষে দুপুর ৩টা ১০মিনিটের দিকে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার যোগে কবিরহাট ডিগ্রি কলেজ প্রাঙ্গণে মওদুদ আহমদের মরদেহ আনা হয়।
শুক্রবার সকালে রাজধানীতে দুই দফা জানাজার পর তার নিজ এলাকা নোয়াখালীর কবিরহাটও কোম্পানীগঞ্জে আরো ৩টি জানাজা শেষে তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে বাবা-মায়ের পাশে সমায়িত করা হয়।
জানাজায় অংশ নেন, নোয়াখালী ৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধরী, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য তাবিথ আউয়াল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, জেলা বিএনপির সভাপতি গোলাম হায়দার বিএসসি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুর রহমান, কবিরহাট পৌরসভার মেয়র জহিরুল হক রায়হান, কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবদুর রহিম চেয়ারম্যান,সাধারণ সম্পাদক লিটন চৌধুরী, , কবিরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মঞ্জুসহ দলীয় নেতাকর্মি ও সর্বস্তরের জনগণ।
অপরদিকে, মুজিব কলেজ মাঠে জানাজায় অংশ নেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্যাহ বুলু, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মো.শাহজাহান, সাবেক বিরোধী দলীয় চিপ হুইপ জয়নাল আবদিন ফারুক, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাল উদ্দিন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান রিপন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই সেলিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম সিকদার, বসুরহাট পৌরসভা বিএনপির সভাপতি আবদুল মতিন লিটনসহ দলীয় নেতাকর্মিও সর্বস্তরের জনগণ।
এ সময় মরহুমের জন্য দোয়া চেয়েছেন মরহুমের স্ত্রী সাবেক সংসদ সদস্য হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ।
উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার মওদুদের মরদেহ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। ঢাকায় পৌঁছানোর পর বিমানবন্দর থেকে মরদেহ ঢাকার একটি হাসপাতালের হিমঘরে নেয়া হয়।
মওদুদ আহমদের ব্যাক্তিগত সহকারি মমিনুর রহমান সুজন জানান, ঢাকার আনুষ্ঠানিকতা শেষে হেলিকপ্টার যোগে মরদেহ কবিরহাট উপজেলায় নিয়ে আসা হয়। বাদ জুম্মা কবিরহাট সরকারি কলেজ মাঠ,বিকেল সাড়ে ৪ টায় বসুরহাট সরকারি কলেজ মাঠ, ৬ টা ১০ মিনিটে মানিকপুরের নিজ বাড়ীর দরজায় জানাজা শেষে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে সমায়িত করা হয়।
জানাগেছে,মৃত্যুর আগে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বাবা-মায়ের কবরের পাশে সমায়িত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে গেছেন। তার ইচ্ছা অনুযায়ী পরিবারের পক্ষ থেকে সে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে মওদুদ আহমদের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশের পাশাপাশি তার নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের মানুষ শোকাহত পরিবেশ সৃষ্টি হয় । অনেকে ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস নিয়ে তার রুহের মাগফেরাত করেন। প্রিয় নেতার মৃত্যু স্তব্ধ করে দিয়েছে কোম্পানীগঞ্জবাসীকে। নোয়াখালী-৫ আসন (কোম্পানীগঞ্জ- কবিরহাট) থেকেই ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ নেতা মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে সিঙ্গাপুরে মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী হাসনা জসিম উদ্দিন মওদুদ ,মেয়ে আনা তাসপিয়া মওদুদ, ২ ভাই- ২ বোন সহ অসংখ্য গুনগাহী রেখে গেছেন।