মঙ্গলবার ● ২৩ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » জ্বিনের বাদশার কাছে সর্বশান্ত হচ্ছে মানুষ, প্রতিকার নেই
জ্বিনের বাদশার কাছে সর্বশান্ত হচ্ছে মানুষ, প্রতিকার নেই
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহে কথিত জ্বিনের বাদশার কাছে মানুষ সর্বশান্ত হচ্ছে। মধ্যরাতে ঘুম ভাঙ্গিয়ে বড়লোক হওয়ার গল্প শোনায়। এ ভাবে গ্রামের সহজ সরল ১০ জন মানুষকে ফোন করলে অন্তত ২/৩ জন তাদের টার্গেটে পরিণত হয়। আবার মুসলিম হলে দুর্বল জায়গায় আঘাত করে ফায়দা লুটে নেয়। ফোন করে প্রথমে কোরআন শরিফ ও জায়নামাজ দাবি করে জিনের বাদশা সেকে প্রতারকরা। সেগুলো পেয়ে খুশি হয়ে একটি ‘স্বর্ণের পুতুল’ উপহার দেয়। এবার তাদের গড়া মসজিদে কোরবানির গরু কেনার টাকা দিলে রাতারাতি ধনী করে দেবেন বলে জানালে প্রলোভনে পড়ে লাখ টাকা দেন কেও কেও। মিনাজ উদ্দীন প্রতারিত হওয়া এক ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী। তারপর যা হবার তাই হয়েছে। মিনাজ এখন পথের ফকির। টাকা খুইয়ে দিশেহারা। কথিত জ্বিনের বাদশা নিয়ে সমাজে এ রকম হাজারো গল্পের কথা সবারই জানা। এ ধরণের প্রতারণার শিকার মিনাজ উদ্দীন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মধুহাটি ইউনিয়নের গোপালপুর বাজারের ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী ও দুর্গাপুর গ্রামের আছমত মন্ডলের ছেলে। মিনহাজ জানান, এক রাতে আমার মোবাইলে কল আসে। কল রিসিভ করার পর প্রথমে জিনের বাদশা পরিচয় দিয়ে বলে ‘তুমি কি নামাজ পড়ো।’ উত্তরে আমি বলি ফজরের নামাজ পড়ে আসলাম। তখন সে বলে ‘তুমি এখন দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে নাও।’ নামাজ শেষ হলে বলে ‘আমি জিনের বাদশা, দিনাজপুর সৌর মসজিদে থাকি। ইমামের কাছেই থাকি এবং তার মাধ্যমেই কথা বলছি। তোমার কাছে বিশেষ আবেদন, আমাদের এখানে মসজিদে তিনটা কোরআন শরিফ এবং একটা জায়নামাজ দিতে হবে। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আমাকে ফোন দিয়ে বলে ‘তুই আমার শর্ত রাখিসনি। তোর সন্তানের মুখ দিয়ে রক্ত উঠে মারা যাবে, তুই কি তোর ক্ষতি চাস।’ এ কথা শুনার পর ভয়ে আমি তাদের বিকাশ নম্বরে ১ হাজার ৫০ টাকা পাঠিয়ে দেই। এ ভাবে দিনের পর দিন নানা প্রলোভন দেখিয়ে আমার কাছ থেকে প্রায় এক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। প্রতারক চক্রটি সর্বশেষ বলে আমরা ৭০ হাজার সাহাবী এবং অলিআউলিয়া মিলে তোর জন্য দোয়া করছি। তুই নিকটস্থ আটলিয়া বাজারে আয়। সেখানে গিয়ে আমি কিছুই পায়নি। পরে জিনের বাদশা বলে ‘পাশেই দেখো টিউবওয়েল আছে সেখানে যাও, ওখানে দেখ একটা বদনা আছে।’ বদনাটা উঁচু করে আমি স্বর্ণের রঙের পুতুল দেখে হতবাক হয়ে যাই। তখন আমার বিশ্বাস অনেক বেড়ে যায়। সে আমাকে বলে- ‘তুমি সোজা বাড়ি গিয়ে পুতুলটি ঘরের মেঝেতে পুঁতে রাখবে এবং বিষয়টা কাউকে বলবে না। বিষয়টি জানাজানি হলে বড় ক্ষতি হবে বলে জানায়।’ এ ভাবেই আমার কাছ থেকে প্রথমে ৪২ হাজার, তারপর ৪০ হাজার ও সর্বশেষ ২১ হাজার টাকা বিকাশ করে সর্বশান্ত হয়ে পড়ি। গোপালপুর বাজারের বিকাশ এজেন্ট মো. বাবুল হোসেন বলেন, মিনাজ আমার পাশেই ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা করে। ঘটনারদিন সকালে (গত ১৭ মার্চ) আমার দোকানে এসে বলে, গরমে ফ্যানের দাম বেড়ে যাবে। এজন্য বেশি করে ফ্যান কিনবে, জরুরিভাবে তার মহাজনের কাছে টাকা পাঠাতে হবে। তখন আমি ০১৩০২-১৬২২০৯ ও ০১৮৯২-১৯৫৬৫১ নম্বরে ৮২ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেই। এরপর আমি টাকা চাইলে বলে একটু পরে দেবে। এ ঘটনার একদিন পর অন্য দোকান থেকেও সে টাকা পাঠিয়েছে। তারপর আমরা জানতে পারি সে আসলে জিনের বাদশার খপ্পড়ে পড়েছে। মধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, মিনাজ বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ইলেকট্রনিক্সের ব্যবস্যা করে আসছে। সে একজন সহজ-সরল মানুষ। জিনের বাদশা সেজে প্রতারক চক্র তার সরলতাকে কাজে লাগিয়ে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তিনি বলেন এই প্রতারক চক্রটি এলাকার হতে পারে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
আন্তঃ ইউপি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ফাইনাল খেলা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে ভাষা সৈনিক মুসা মিয়া আন্তঃইউনিয়ন গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২১ এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে দুপুর ৩টায় জাহেদী ফাউন্ডেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে টুর্নামেন্টটি অনুষ্ঠিত হয়। এই খেলায় ঘোড়শাল ইউনিয়ন ও চাঁদপুর ইউনিয়ন ফাইনালে অংশ নেয়। খেলায় ঘোড়াশাল ইউনিয়ন কে ২-০ গোলে পরাজিত করে চাঁদপুর ইউনিয়ন চ্যাম্পিয়ন হয়। পরে চ্যাম্পিয়ন দলকে নগদ ৩,০০,০০০ টাকার চেক তুলে দেওয়া হয়। এবং রানার্সআপ দলকে নগদ ২,০০,০০০ টাকা তুলে দেওয়া হয়। খেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ ১ আসনের সংসদ সদস্য মো. আব্দুল হাই। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য খালেদা খানম, ও জেলা প্রশাসক মোঃ মজিবর রহমান, জেলা পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম। আরও সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাহেদী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাসের শাহরিয়ার জাহেদী মহুল।
ফরিদপুরের মধুখালীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুরে পাগলির গর্ভে জন্ম নেওয়া পালিত মা জোসেদা বিবি ও তার পালিত ছেলে সেই শিশু আব্দুল্লাহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। আজ রোববার সকালে ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার মাঝকান্দি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিহত শিশু আব্দুল্লাহ সব সময় খোঁজ করতো তার গর্ভধারিনী মাকে। শিশুটি সবার কাছে বলে বেড়াতো ‘আমার মাকে আপনারা দেখেছেন? মাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করে। আমার মা নাকি পাগলি? সবাই আমাকে শুধু মারে।’ এভাবেই কথাগুলো বলতো ৫বছর বয়সী শিশু আব্দুল্লাহ। পথশিশু হিসেবে তার পরিচয় ছিল।
মোবারকগঞ্জ চিনিকলে চলছে শনির দশা, ২২ ঘন্টা আখ মাড়াই বন্ধ
ঝিনাইদহ :: শনির দশা ভর করেছে ঝিনাইদহের মোবারকগঞ্জ চিনিকলে। যান্ত্রিকত্রটির কারণে গত রোববার ও সোমবার তিনদফায় প্রায় ২২ ঘন্টা আখ মাড়াই বন্ধ ছিল। এতে মিলটির আখ চাষীরা পড়েছেন বিপাকে। গাড়িতে আখ বোঝাই করে মিলে এনে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন কৃষকদের। জানা গেছে, গত ১৮ ডিসেম্বর ২০২০-২০২১ মাড়াই মৌসুম শুরু করে মোবারকগঞ্জ সুগার মিল। রোববার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৩ টা পর্যন্ত মিলের বয়লারের বিয়ারিং ভেঙে যাওয়ায় আখ মাড়াই বন্ধ হয়ে যায়। মেরামতের পর আধাঘন্টা মিল চালু হওয়ার পর আবারও যান্ত্রিকত্রুটির কবলে পড়ে মিলটি। পুনরায় ১১ ঘন্টা পর রোববার দিনগত রাত ২ টার দিকে আবারও মিলটি চালু হয়। এরপর সোমবার সকাল ৯ টার দিকে আবারও মিলটির একটি ক্যারিয়ারের শ্যাপ ভেঙে যায়। এরপর দুপুর ২টার দিকে পুনরায় মিলটি চালু হয়। সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন গাড়িতে আখ বোঝাই করে ওজন দেওয়ার অপেক্ষায় মিলে দাঁড়িয়ে আছে চাষীরা। কেউ আখের উপর ঘুমিয়ে আছেন। মিলগেটে অপেক্ষমান চাষীরা জানান, গত রোববার সকাল ১১ টা থেকে মিলের সামনে অবস্থান করছি। এখানেই রাত কাটাতে হয়েছে। মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে মিলের আখ মাড়াই বন্ধ ছিল। সোমবার দুপুর দুইটার দিকে আখ মাড়াই আবার শুরু হয়েছে।
শৈলকুপায় বিরল প্রজাতির গাছ দেখতে জনতার ভীড়
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার হাতেমপুর শাহী মসজিদের পুকুরের ধারে দুই টি বিরল প্রজাতির গাছ দীর্ঘদিন ধরেই পথিকদের নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। শতবর্ষী এ গাছ দুটিতে প্রতিবছর ফাল্গুনে নতুন পাতা বের হয় যা দেখতে লাল রঙের। চলার পথে সৌন্দর্য পিপাসু পথিকেরা এর সৌন্দর্য অবলোকন করেন। এই বিরল দৃশ্য দেখ থমকে দাড়ায়। এ লাল রঙের পাতা পরে সবুজ রং ধারন করে। দেখতে অনেকটা গাব গাছের ফুলের মত। প্রতি বছর ফুল আসে, কিন্তু কোন ফল ধরতে দেখা যায় না। ফুলের সৌরভে বহুদুর পর্যন্ত সুরভিত থাকে। মৌ মৌ সুগন্ধিতে পুরো গ্রাম মাতোয়ারা হয়ে পড়ে। গাছের পাতা ও আকার-আকৃতি গাব গাছের মতো হলেও এটি মূলত অন্য প্রজাতির গাছ বলে মানুষ মনে করেন। জনশ্রুতি আছে এই বিরল প্রজাতির গাছ দুটি মুঘল বাদশা স¤্রাট আকবরের গুরু হাতেম শাহ গাছটি ভারতবর্ষ থেকে এনে হাতেমপুর গ্রামে লাগিয়েছিলেন। মসজিদটি তিনিই প্রতিষ্ঠা করেন। গ্রামটির নাম করনও তাঁর নামে করা হয়। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক সতিশ মিত্রের “যশোর খুলনার ইতিহাস “বইয়ে এর বিবরণ পাওয়া যায়। তাঁর মাজার শরিফটি মসজিদের পাশেই বিদ্যমান।
ঝিনাইদহে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে সোমবার সকালে জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল হাই। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক আব্দুল হামিদ খান। আলোচনা সভা শেষে দিবটি উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা প্রশিক্ষিত ইমামদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। পরে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
ঝিনাইদহে ভ্রাম্যমাণ আদালতে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে জরিমানা
ঝিনাইদহ :: করোরানার সংক্রমন রোধে সামাজিক দূরত্ব না মানা ও মাস্ক না পরার অপরাধে ঝিনাইদহে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শহরের পোস্ট অফিস মোড়, পায়রা চত্বর, আরাপপুর, বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরফানুল হক চৌধুরী। এসময় মাস্ক ব্যবহার না করা, সামাজিক দুরত্ব না মেনে কেনা-বেচা করার অপরাধে ৩০ জনকে বিভিন্ন অংকে জরিমানা করা হয় এবং তাদের মাস্ক দেওয়া হয়। সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি স্বাস্থ্য বিধি না মানা, মাস্ক পরিধান না করার কারণে করোনার সংক্রমন দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য সর্ব-সাধারণকে সচেতন করার জন্য জেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে। অভিযানে জরিমানার পাশাপাশি সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মানার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।