বুধবার ● ২৪ মার্চ ২০২১
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » বিশ্বনাথে ক্রিকেট খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর ব্যাপক সংঘর্ষ, আহত ২০
বিশ্বনাথে ক্রিকেট খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর ব্যাপক সংঘর্ষ, আহত ২০
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী স্টেশন বাজার মাঠে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন ক্রিকেট এসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত ক্রিকেট লীগের সেমিফাইনাল খেলাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) বিকেলে স্থানীয় গোমরাগুল ও তবলপুর গ্রামবাসীর মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়। এতে খেলার দর্শকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০জন আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- গোমরাগুল গ্রামের আব্দুল কাদির, আব্দুল বাসির, জামাল মিয়া, দুলাল মিয়া, তবলপুর গ্রামের ইসলাম উদ্দিন, এমরান মিয়া ও খেলার দর্শক কিশোরপুর গ্রামের মাহবুব মিয়া। অন্যান্য আহতদের নাম তাৎক্ষণিক জানা যায়নি। গুরুতর আহতদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানান, খাজাঞ্চী ইউনিয়ন ক্রিকেট এসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত ইউনিয়ন ক্রিকেট লীগের সেমিফাইনাল খেলা মঙ্গলবার বিকেলে ৫নং ওয়ার্ডের গোমরাগুল ও ৬নং ওয়ার্ডে তবলপুর গ্রামের টিমের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। খেলার মধ্যবিরতির পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিনসহ আগত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। এর কয়েক মিনিট পরই খেলা চলাকালীন সময়ে দুই টিমের দুই খেলোয়াড়ের বাকবিতন্ডা শুরু হলে মাঠের দর্শক গ্যালারিতে থাকা উভয় গ্রামের লোকজনও মাঠে প্রবেশ করে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষ। এসময় খেলার স্টেইজ ও মাইকসহ আসবাবপত্র, মাঠের পার্শ্ববর্তী কৃষি ব্যাংক ভবনের জানালার গ্লাস, একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয় এবং স্থানীয় বাজারের দুটি দোকানের মালামাল লুট করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
খবর পেয়ে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে ঘটনাস্থল থেকে উভয় গ্রামের লোকজনকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন তবলপুর গ্রামের লোকজন। এসময় পুলিশের সাথে তবলপুর গ্রামের লোকজনদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। তবে এতে কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ অবস্থান করছে।
জানা যায়, গোমরাগুল ও তবলপুর গ্রামের মধ্যকার সেমিফাইনাল খেলা নিয়ে প্রায় মাস খানেক যাবৎ দুৎপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। একপর্যায়ে বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গে উপস্থিতিতে নিস্পতি হলে খেলার আয়োজক কমিটির দুই টিমের সেমিফাইনাল খেলার আয়োজন করেন।
এলাকার অনেকের মন্তব্য, যেহেতু এই খেলা নিয়ে পূর্ব হতে দুই গ্রামের খেলোয়াড়দের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে, তাই এই খেলা আয়োজনের পূর্বে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে খেলাটি আয়োজন করলে হয়তো সংঘর্ষের এই অনাকাংখিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো। আর অনাকাংখিত ঘটনা সৃস্টির মনোভাব নিয়ে খেলায় অংশগ্রহন করা করলে খেলার মাঠ থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রামের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে মুহুর্তেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তেন না।
এব্যাপারে খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘‘খেলা নিয়ে দুই গ্রামের পূর্বের বিরোধটি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গে উপস্থিতিতেই নিস্পতির হওয়ার পর সকলের মতামতের ভিত্তিতেই আজকের খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলার মধ্যবিরতিতে অতিথিবৃন্দকে নিয়ে চা পানের জন্য আমি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্সে আসি এবং অতিথিদের বিদায় দিয়ে আমি যখন মাঠে ফিরছিলাম তখনই দেখতে পাই দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ চলছে।’’ সংঘর্ষের বিষয়টি এলাকার মুরব্বিদের সাথে নিয়ে তিনি নিস্পত্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেন জানান।
বিশ্বনাথ থানার অফিসা ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যদের পাঠালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে এলাকায় এখনও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করছে।