শনিবার ● ৩ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহ করোনা ইউনিটের বেহাল দশা
ঝিনাইদহ করোনা ইউনিটের বেহাল দশা
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: সারা দেশের ন্যায় ঝিনাইদহে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের হার। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মানতে একেবারেই উদাসীন মানুষ। বিশেষ করে হ-য-ব-র-ল অবস্থায় পরিনত হয়েছে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের একমাত্র করোনা বিভাগ। কোন স্বাস্থ্যবিধি ছাড়াই সাধারন মানুষের অবাধ চলাচল করোনা বিভাগে। এতে করে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধির শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। শুধু তাই নয়, করোনা বিভাগে ৭ জন সনাক্তকৃত রোগীর সাথে আরো ৪ জন নমুনা দিতে আসা ব্যক্তিকেও রাখা হয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীর স্বজনরা। জেলায় এখন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৪৩৮ জন আর করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪১ জন। প্রতিদিন গড়ে ১০ থেকে ১২ জন করোনা রোগী সনাক্ত হচ্ছে। সরেজমিনে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের করোনা বিভাগের সামনে গিয়ে দেখা যায়, করোনা বিভাগের ভর্তিকৃত রোগীদের কাছে স্বজনরা অবাধে যাচ্ছেন স্বাস্থ্যবিধি না মেনে। ভিতরে গিয়ে স্বজনদের (করোনা রোগী) সাথে সাক্ষাত করে বাইরে ফিরে আসতে দেখা যায়। পরে তারা জনসমাগমস্থলে গিয়েও মানুষের সাথে অবাধে মিশছে। এছাড়া করোনা বিভাগে দায়িত্বরত স্টাফরাও মানছেনা স্বাস্থ্য বিধি। করোনা বিভাগে গনমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতি টের পেয়ে ওই বিভাগে কর্মরত নার্সরা গেট লাগিয়ে তালা ঝুলিয়ে সবাইকে সরিয়ে দেন। করোনা বিভাগ থেকে স্বজনদের সাথে দেখা করে বেরিয়ে আসার সময় মঞ্জুরা বেগম জানান, আমার রোগী ভর্তি আছে। সেখানে আমি তার জন্য খাবার নিয়ে এসেছিলাম। এখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। এমন নানা অজুহাত দেখান অন্যান্যরাও। সদর হাসপাতালের সাধারন বিভাগে রোগী দেখতে আসা সাকিব মোহাম্মদ আল হাসান বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক। করোনা বিভাগে মানুষ অবাধে যাতাযাত করছে, কোন স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। করোনা বিভাগ থেকে বেরিয়ে মানুষের সাথে মিশছে, ঘুরছে হাট-বাজারে। এতে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে বৃদ্ধির শঙ্কা রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনই এর ব্যবস্থ না নিলে ঝিনাইদবাসীকে এর চড়া মাশুল গুনতে হবে। বিষয়টি নিয়ে সদর হাসপাতালের সুপার ডাঃ মোঃ হারুন-অর-রশিদ জানান, এ বিষয়ে মানুষকে কোন ভাবেই সচেতন করতে পারছি না। তাদেরকে নিষেধ করলেও কথা শুনছে না। লোকবল সংকটের কারনে জেলা প্রশাসকের কাছে আমরা নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য পুলিশ চেয়ে আবেদন করেছি বলে তিনি জানান।
লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। শুক্রবার ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া ল্যাব থেকে আসা ৬৫টি ফলাফলের মধ্যে ১২ জনের ফলাফল পজিটিভ এসেছে। এ পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা ২ হাজার ৪৫৪ জন। নতুন আক্রান্তদের মধ্যে ঝিনাইদহ সদরের ব্যাপারীপাড়ায় ২জন, শেরে বাংলা সড়কে ৩ জন, কৃষ্ণনগরপুর, কালিকাপুর, মুরারিদহ, লক্ষিকোল, খাজুরা, সদর হাসপাতাল ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার সরাবাড়িয়া গ্রামে একজন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন ২২৭৩ জন ও মৃত্যু হয়েছে ৪০ জনের। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম।
প্রতিবন্ধি যুবতীকে ধর্ষন করল মাষ্টারের লম্পট ছেলে
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইাদহ সদর উপজেলার হাজরাতলা গ্রামে এক প্রতিবন্ধি যুবতী ধর্ষনের শিকার হয়েছে। বাড়িতে একা পেয়ে হাজরাতলা গ্রামের সৈয়দ আলী মাষ্টারের লম্পট ছেলে সাহাবুদ্দীন (৩৫) তাকে ধর্ষন করে। অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার বিকালে ঝিনাইদহ সদর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, প্রতিবন্ধি ওই যুবতীকে বাড়িতে একা রেখে তার মা হরিণাকুন্ডুর সড়াতলা গ্রামে যান অন্য মেয়েকে দেখতে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাজরাতলা গ্রামের সাহাবুদ্দীন বাড়িতে প্রবেশ করে প্রতিবন্ধি ওই যুবতীকে জোর পুর্বক ধর্ষন করে। এ সময় বাড়িতে কেও ছিল না। ধর্ষিতা যুবতীকে ঘটনার দিন রাত ১২টার দিকে চিকিৎসা ও ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য পরিবারের লোকজন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শুক্রবার বিকালে ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই রফিকুল ইসলাম জানান, ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় অভিযোগ করেছেন। আমরা ধর্ষককে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি। মেয়েটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ভ্যানের চাকায় ওড়না জড়িয়ে ছাত্রীর মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুরে গলায় ওরনার ফাঁস লেগে তিন্নি (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। মহেশপুর পাইলট বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর ছাত্রী তিন্নি মহেশপুর পৌর এলাকার হঠাৎপাড়ার আবু সুফিয়ানের মেয়ে। পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, গত ১৮ মার্চ ভ্যানে চড়ে আত্মীয় বাড়িতে যাচ্ছিলো তিন্নি। এ সময় গলায় ওড়না জড়িয়ে ফাঁস লেগে মারাক্তক জখম হয় সে। দ্রুত তাকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে অবস্থার অবনতি ঘটে। পরবর্তীতে তাকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। কিছুটা সুস্থতা অনুভব করলে তিন্নিকে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যবেক্ষনে রাখা করা হয়। গত ৩১ মার্চ তিন্নির শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে দুর্ঘটনার ১২দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু ঘটে। তিন্নির মৃত্যুতে তার সহপাঠীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
মিষ্টির লোভ দেখিয়ে বাড়িতে ডেকে নিয়ে ২য় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর গ্রামের মিরাজ হোসেনের নামে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে রাধাকান্তুপুর গ্রামের মাছুদের ছেলে মিরাজ পাশের বাড়ির প্রবাসী কামরুলের ২য় শ্রেণির ছাত্রী ৮ বছরের শিশু দিয়া খাতুকে মিষ্টি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ করেছে ভিকটিমের পরিবার। এবিষয়ে ২৮শে মার্চ ঝিনাইদহ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং ৬৪। গত কয়েকদিন পার হয়ে গেলেও এখনো আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাধাকান্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি প্রথমে চেচামেচি শুনে স্কুলের পাশে প্রবাসী কামরুলের বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে মাছুদের ছেলেকে কামরুলের ঘরে আটকা দেখতে পায়। পরে আমার স্কুললের ২য় শ্রেণির ছাত্রী মোছাঃ দিয়া খাতুন কে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, মিষ্টি খাওয়ার লোভ দেখিয়ে মিরাজ তাকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ধর্ষণ করার সময় চিৎকার করলে তার মুখে ক্যাপ দিয়ে চেপে ধরে। তিনি আরো বলেন, সে কান্নাকাটি করলে আশেপাশের লোক তাকে উদ্ধার করে। কিছুক্ষণ পর মিরাজ দিয়ার মাকে ভয় দেখিয়ে বলে এই কথা যদি কাউকে বলো তাহলে তোমার মেয়েকে মেরে ফেলবো। তখন দিয়ার মা কৌশলে তাদের ঘরের একটি কক্ষে মিরাজ কে আটকে ফেলে চিৎকার করলে আশেপাসের লোজন ছুটে আসে এবং বিষয়টি জানতে পারে। হলিধানী ইউনিয়নের সাবেক মহিলা সদস্য মোছাঃ লিলি খাতুন জানান, পাশের গ্রামে কামরুলের মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি ওই বাড়িতে উপস্থিত হয়। সেখানে গেলে জানতে পারি, পাশের বাড়ির মাছুদের ছেলে মিরাজ মিষ্টি খাওয়ার লোভ দেখিয়ে কামরুলের মেয়ে ২য় শ্রেণীর ছাত্রী দিয়া খাতুন কে ধর্ষণ করেছে। এরপর দিয়ার মা মিরাজকে ঘরে আটকে রেখেছিলো কিন্তু গ্রামের আশিরদ্দীন জোয়াদ্দার বিচার করে দিবে বলে ঘর থেকে বের করে দেয়। তখন আমি কাতলামারী পুলিশ ক্যামে খবর দিলে পুলিশ এসে মেয়ে ও মেয়ের মাকে থানায় নিয়ে যায়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কাতলামাী ক্যামের এস.আই এনামুল হক বলেন, আমি ঘটনার দিন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, এলাকার রাধাকান্তপুর গ্রামের মাছুদ মন্ডলের ছেলে মিরাজ ২য় শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খাতুনকে খারাপ কাজের উদ্দেশ্যে একটি আবদ্ধ ঘরে নিয়ে তাকে ধর্ষন করে। পরে মেয়েটি চিল্লাচিল্লি করার পরে এলাকার লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে। ওখানে যাবার পরে আশেপাশের লোকজনের কাছে জিজ্ঞাসা করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। পরে ঘটনার সত্যতা যাচায়ের জন্য মেয়ে ও মেয়ের মাকে সদর থাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। দিয়ার মা রতœা খাতুন জানান, মিরাজ গত একবছর ধরে আমার মেয়ের সাথে খারাপ কাজ করে আসছে। একদিন লাঠি মিষ্টি দেবার কথা বলে মেয়েকে একটা বাগানে নিয়ে গিয়ে খারাপ কাজ করে। পরে জানতে পারলে সে এমন কাজ আর কখনো করবে না বলে আমাদের কাছে হাত পাঁ ধরে মাফ চেয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ শনিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে আমার মেয়ের কান্নাকাটি শুনে সবাই মিলে মিরাজদের বাড়ি থেকে আমার মেয়েকে নিয়ে আসি। এবং কিছুক্ষণ পর মিরাজ এই বিষয়টি কাউকে যেন না বলি এজন্য আমাকে ও আমার মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। পরে মিরাজকে জোরকরে ধরে ঘরের ভিতর আটকে রেখে এলাকাবাসিকে আবারো খবর দিই। পরে পাশের বাড়ির আশির উদ্দীন জোয়াদ্দার সামাজিক ভাবে মিটিয়ে দিবে বলে মিরাজকে ঘর থেকে বের করে দেয়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ আসলে তাদের সাথে থানায় গিয়ে মিরাজের নামে মামলা করেছি। আমি চাই সে যেন এই কুকর্মের শাস্তি পায়। ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ঘটনা জানার পর সাথে সাথে ওখানে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু বাদি প্রথমে স্বীকারই করতে চাইনি। পরে আমরাই সত্যতা বেরকরছি ওই বাচ্চার সাথে একটা কিছু হইছে। তারপর গত ২৮শে মার্চ (রোববার) মেয়েটির মা রত্না খাতুনকে বাদি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটা মামলা করিয়েছি। আসামী মিরাজকে ধরার জন্য অভিযান অব্যহত রেখেছি।