রবিবার ● ৪ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » বিশ্বনাথে বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ
বিশ্বনাথে বাড়ছে সূর্যমুখী ফুলের চাষ
মো. আবুল কাশেম, স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ‘সূর্যমুুখী’ ফুল চাষে আগ্রহ বেড়েছে চাষিদের। কম খরচে চাষাবাসযোগ্য, লাগে না তেমন সার, ঔষধও। এ কারণে সূর্যমুখী চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। গেল বছরের তুলনায় এ বছর উপজেলায় সূর্যমুখী ফুলের আবাদ হয়েছে প্রায় দেড়গুণ।
এবার চাষের জমি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ হেক্টর-এ। সাধারণত প্রতি হেক্টর জমিতে ২ মেট্রিক টন সূর্যমুখী তেল বীজ উৎপাদিত হলে, ৭ হেক্টরে উৎপাদন হবে ১৪ মেট্রিক টন। বর্তমান বাজার মূল্য কেজি প্রতি ৮০ টাকা দরে ১ হেক্টর জমিতে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার তেল বীজ উৎপাদিত হবে। সে হিসেবে বিশ্বনাথ উপজেলায় ১১ লাখ ২০ হাজার টাকার তেল বীজ বিক্রির আশা করছেন কৃষকেরা।
সরেজমিন সূর্যমুখী’র বিভিন্ন মাঠ ঘুুরে দেখা যায়, প্রত্যেক মাঠেই গাছে গাছে ফুঠেছে নান্দনিক সূর্যমুুখী ফুল। কোন কোন গাছে রয়েছে একাধিক ফুলের সংখ্যা। কালো ও পুষ্ট হয়েছে অধিকাংশ গাছে ফুলের বীজ। কোনটায় আবার এসেছে কলি।
সে গুলো ফোটার অপেক্ষায়। দু’একজন ব্যতিত প্রত্যেক কৃষকেরই ফলন হয়েছে ভালো।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, সূর্যমুখীর আবাদ বৃদ্ধিতে, সরকারি ভাবে ১ বিঘা করে ৫০ জন কৃষককে এ বছর দেয়া হয়েছে সূর্যমুখী ফুল চাষের প্রদর্শনী। যা গত বছরের তুলনায় দেড়গুণ বেশি। সেই সাথে আরো অনেককে দেয়া হয় প্রণোদনাও।
বিনামূল্যে দেয়া হয় সার ও সূর্যমুখীর ‘হাইসান-৩৩’ বীজ ও বিভিন্ন উপকরণ। এ গুলো পেয়ে সময় মতো ফুল চাষ করে সাফল্য পেতে যাচ্ছেন চাষিরা।
সূর্যমুুখী চাষী উপজেলার দেওকলস ইউনিয়নের জগতপুর গ্রামের মধু মিয়া জানান, অল্প সময় ও পরিশ্রমে অধিক লাভজনক সূর্যমুখী ফুলের চাষ। বীজ রোপণের ৯০-১০৫ দিনের মধ্যে ফুল থেকে বীজ ঘরে তুলতে পারি। এটি চাষের পর যথা সময়ে একই জমিতে আউশ ধান আবাদ করা যায়।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (অতিরিক্ত) রাকীবুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সূর্যমুখী একটি উৎকৃষ্ট তেল ফসল। এর বীজে রয়েছে ৪০-৪৫% লিনোলিক এসিড। স্বাস্থ্যরক্ষা ও রোগ জীবাণুু প্রতিরোধে সুর্যমুখী তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এবার উপজেলায় ফলন হয়েছে ভালো।
সূর্যমুখী চাষ সম্প্রসারণ করে কৃষকের ভাগ্য বদলানোর পাশাপাশি ভোজ্যতেলের চাহিদার অনেকটাই জোগান দেয়া সম্ভব।
বিশ্বনাথে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে কঠোর হচ্ছে প্রশাসন
বিশ্বনাথ :: করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সরকারের দেয়া নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর হচ্ছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা প্রশাসন। প্রবাসী অধ্যুষিত এ শহরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছে উপজেলা প্রশাসন। প্রতিদিনই সচেতনমূলক প্রচার-প্রচারণা ও বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ কর্মসূচির পাশাপাশি, আইন অমাণ্যকারীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে অর্থদন্ডও। স্বাস্থবিধি না মানলে, আগামী দিনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
শুক্রবার উপজেলার বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে গিয়ে সভা-সমাবেশ না করতে ও সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে সবাইকে আহবান জানান, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সূত্র জানায়, করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ধাপে সিলেটের বিশ্বনাথেও নতুন করে শনাক্ত হন একাধিক নারী-পুরুষ। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ১২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী। সম্প্রতি করোনায় মারা যান উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় উপজেলা প্রশাসন কঠোরভাবে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার জন্যে উপজেলার জন সাধারণকে আহবান জানিয়েছে।
উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা না করে হাটে-ঘাটে দৈনন্দিন সকল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন সাধারণ মানুুষ। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, পাবলিক প্লেস ও হাট-বাজারের স্বাভাবিক সময়ের মতোই রয়েছে মানুষের জটলা। অধিকাংশ মাসুষের মুখে নেই মাস্ক।
অযথাই ঘোরাফেরা করছেন কেউ কেউ।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. কামরুজ্জান বলেন, সংক্রমণ রোধে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। সরকারি নির্দেশনার ব্যতয় হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে অবৈধ ভাবে মাটি কাটায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে নদী তীর থেকে অবৈধ ভাবে মাটি কাটার অপরাধে এক ব্যক্তিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টায় উপজেলার খাজান্সি ইউনিয়নের কান্দিগ্রামে মাকুন্দা নদী তীরে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুজ্জামান।
এসময় অবৈধ ভাবে মাটি কাটার দায়ে স্থানীয় কিশোরপুর গ্রামের জামাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তিকে বালু ও মাটি ব্যবস্থা আইন ২০১০’র ১৫ (১) ধারায় ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, জামাল উদ্দিন গংরা কয়েক দিন ধরে এক্সকাভেটর (মাটি কাটার যন্ত্র) দিয়ে অবৈধ ভাবে নদী তীর কেটে মাটি নিচ্ছিল।
স্থানীয় প্রশাসন তাদের নিষেধ করার পরও থামেনি তারা। খবর পেয়ে আজ সকালে ভ্রাম্যমাণ আদালত যায় ঘটনাস্থলে। এসময় অন্যরা পালিয়ে গেলেও জামাল উদ্দিন নামের একজনকে অর্থদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কামরুজ্জামান বলেন, অবৈধ ভাবে নদী তীরের মাটি কাটায় দায়ে এ দণ্ড দেয়া হয়েছে।
বিশ্বনাথে লাল-সবুজে রঙিন বাসিয়া সেতু
বিশ্বনাথ :: ‘নদী আমাদের মা, বাসিয়া নদীতে আবর্জনা ফেলবো না’ স্লোগানকে সামনে রেখে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া এককালের খড়স্রতা নদী বাসিয়াকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে লাল-সবুজে রঙিন করা হয়েছে পৌর এলাকাস্থ ‘বাসিয়া সেতু’। শনিবার দুপুরে লাল-সবুজে রঙিন করা কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নদীতে আর ময়লা-আবর্জনা না ফেলার জন্য উপজেলা ও পৌরবাসীর প্রতি আহবান করা হয়।
বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ ও সচেতন বিশ্বনাথ সমাজ কল্যাণ সংস্থার অর্থায়নে বাসিয়া সেতুটি রঙিন করা হয়। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ থানার পরিদর্শক (ওসি) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী। উদ্বোধকের বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার আব্দুল করিম কিম। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক প্রনঞ্জয় বৈদ্য অপু।
বাঁচাও বাসিয়া নদী ঐক্য পরিষদ ও সচেতন বিশ্বনাথ সমাজ কল্যান সংস্থার আহ্বায়ক ফজল খানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আব্দুল বাতিনের পরিচালনা অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ব্রীজকে লাল-সবুজে রাঙানোর মাধ্যমে সংগঠনটি সর্বস্তরের মানুষকে এই বার্তা দিতে যাচ্ছে যে, নদী আমাদের মায়ের মতো। আর মায়ের সম্মান রক্ষার জন্য মায়ের বুকে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ করে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। কারণ নদী বাঁচলে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে আমাদের কৃষি, রক্ষা পাবে মৎস্যকূল এবং আমাদের ফেলা ময়লা-আবর্জনা থেকে নদীর পানি দূষিত না ফলে নদীর পানি পান করে বাঁচতে পারবে প্রাণীকূল ও বায়ু দূষণ থেকে মুক্ত হবে পরিবেশ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ থানার এসআই অরুপ সাগর, ইমরুল কবির, জেলা স্বেচ্চাসেবক লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক ডা. বিভাংশু গুন বিভু, উপজেলা যুবলীগ নেতা জাবেদ আহমদ, উপজেলা বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর মেলার সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আলী, বাসিয়া নাট্য কল্যাণ সংস্থার সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, রক্তদান সমাজ কল্যাণ সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, মানবতার ঘরের ইকাবাল হুসেন, সংগঠক সুয়েব মিয়া, সাব্বির আহমদ প্রমুখ।