সোমবার ● ৫ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » লকডাউন কালিন মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে হাটহাজারীতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
লকডাউন কালিন মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে হাটহাজারীতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
আমির হামজা, স্টাফ রিপোর্টার :: সারাদেশে সপ্তাহব্যাপী লকডাউন শুরুর প্রথম দিনে সীমিত আকারে হলেও মার্কেট খোলা রাখার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
এদিকে আজ সোমবার থেকে আগামী রবিবার পর্যন্ত সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে জরুরি নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ছাড়া মার্কেট-শপিংমল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
এরই প্রতিবাদে আজ সোমবার সকালে হাটহাজারী পৌরসভার বিভিন্ন মাকের্টের দোকান মালিক ও ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন।
এছাড়া ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন মার্কেটের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন এবং ইউএনও কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এই সময় তারা ‘লকডাউন মানি না’ বলে শ্লোগান দেন।
পরে হাটহাজারী পৌরসভা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ শাহআলম, সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলম, কাচারী সড়ক বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বাবু, ব্যবসায়ী নেতা ওজায়ের আহমেদ হামিদি, জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ শুক্কুর সহ নেতৃবৃন্দরা হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিনের সাথে বৈঠক করেন।
সেখানে হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহাদাত হোসেন এবং হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
পরে ইউএনও রুহুল আমিন, হাটহাজারী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ শাহাদাৎ হোসেন এবং হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম ইউএনও কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়া ব্যবসায়ীদের সাথেও কথা বলেন।
এসময় ইউএনও ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে বৈঠকে আলোচনার কথা তুলে ধরে হাটহাজারী পৌরসভা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোঃ শাহআলম ব্যবসায়ীদের আশ্বস্ত করে বলেন, লকডাউনের ব্যাপারে সরকারের যে সিদ্ধান্ত সেটা সবাইকে মেনে নিতে হবে। ব্যবসায়ীদের দাবীর ব্যাপারে ইউএনও এবং পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে।
এছাড়া মোবাইলের মাধ্যমে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দদের সাথেও আলাপ করা হয়েছে। উনাদের সাথে এ ব্যাপারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আলাপ চলছে জানিয়ে, সরকারের পরবর্তী নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের শান্ত থাকার অনুরোধ জানানো হয়।
বিক্ষোভের বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ী নেতা ওজায়ের আহমেদ হামিদী জানান, ‘ব্যবসায়ীরা সারা বছর দোকান খুলে বসে থাকলেও ব্যবসা হয় ঈদের আগের দুই মাসে। গত বছর রোজার মাসে লকডাউনের কারণে ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এবারও যদি এই সময় মার্কেট বন্ধ থাকে, তাহলে তো ব্যবসায়ীদের পথে বসে যেতে হবে।” তিনি দাবি করেন, যেভাবে বিশেষ বিবেচনায় শিল্প-কারখানা চালু রাখা হয়েছে, সেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মার্কেট খোলা রাখার সুযোগ দেয়া হোক।
সরেজমিনে দেখা যায়, সোমবার সকাল থেকেই দোকান মালিক, ব্যাবসায়ী ও কর্মচারীরা পৌরসদরের কাচারী সড়কের সুপার সিটি, এন জহুর শপিং সেন্টার, আমীর এরশাদ প্লাজা, আলী মমতাজ মার্কেট সহ বিভিন্ন মার্কেটের অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় তারা লকডাউনের সময় অন্তত চার ঘণ্টা দোকান খোলা রাখার সুযোগ দেয়ার দাবি করেন।
বাংলাদেশে গত বছরের ২৬শে মার্চ থেকে দুই মাস সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছিল, তখন সব মার্কেট ও শপিংমল বন্ধ ছিল। যার কারণে ব্যবসায়ীরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছিলেন বলে দাবি করা হয়।
ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা, এবারও যদি পরবর্তীতে লকডাউনের সময় বাড়ানো হয়, তাহলে ঈদের মৌসুমের এই সময়ে তারা বিপুল অংকের ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখোমুখি হবেন।
রাউজানে ওসি-ইউএনও অ্যাকশন শুরু
রাউজান :: চট্টগ্রামের রাউজানে লকডাউন বাস্তবায়নে সারাদিন মাঠে ছিল উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। আজ ৫এপ্রিল সোমবার লকডাউনের প্রথমদিনে পুলিশের অ্যাকশন ছিল চোখে পড়ার মতো। একই ভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগের নেতৃত্বে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করতে দেখা গেছে। এসময় নির্বাহী কর্মকর্তা কয়েক ব্যাক্তির কাছ থেকে জরিমানা আদায় করেন। এসময় তিনি বাস ষ্টেশন এলাকায় মহা সড়কের উপর পার্কিং করে রাখা বাস ও ট্রাক অপসারণ করেন। অপর দিকে রাউজান থানার ওসির নেতৃত্বে রাউজানের প্রবেশদ্বার সর্তার ঘাট হালদা সেতুর উপর চেকপয়েন্ট বসিয়ে সড়কে যাত্রীবাহী গাড়ী নিয়ন্ত্রণ করেন। এরপর তিনি গহিরা, জলিল নগর ও মুন্সিরঘাটা এলাকায় চলাচলরত অটোরিকশা ও যাত্রীবাহী বিভিন্ন যানবাহনে অ্যাকশন শুরু করেন। চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহা সড়কে লকডাউন বাস্তবায়নে চালকে এবং লকডাউনের আইন সম্পর্কে সতর্কীকরণ বার্তার কথা জানান। তবে রাউজান বাস ষ্টেশন থেকে কোন গণ পরিবহন চলাচল করেনি। দুরপাল্লার কোন যানবাহনকে সড়কে চলাচল করতে দেখা যায়নি। নির্বাহী কর্মকর্তা জেনায়েদ কবির সোহাগ জানান, অটোরিকশা এই লকডাউনে বড় সমস্যা। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। তাদের আমরা নিয়ন্ত্রণ করছি।
রাউজানে জুয়ার আসর থেকে আটক-৬
রাউজান :: চট্টগ্রামের রাউজানে জুয়ার আসর থেকে আটক ৬ জুয়ারিকে আদালতে সোর্পদ করেছে রাউজান থানা পুলিশ। আজ সোমবার ৫ এপ্রিল দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরন করা হয়। জানা যায়, ৪ এপ্রিল রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পূর্বগুজরা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ বড়ঠাকুর পাড়ার সাদংখীল নামকস্থানের কাঁশবাগান থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, পূর্বগুজরা ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের আকবর আলী মেম্বার বাড়ীর আকবর আলী মেম্বারের পুত্র মাহাবুল আলম (৪৫), রমজান আলী মাস্টারের বাড়ীর মৃত সিদ্দিক আহম্মদের পুত্র মোহাম্মদ ইউসুফ প্রকাশ কালু মিয়া (৫৫), আকবর আলী মেম্বারের বাড়ীর মৃত মুন্সি মিয়ার পুত্র ফজলুল কবির (৫১), আবু চেয়ারম্যানের বাড়ির মৃত ডা. কালু মিয়ার পুত্র আবু ইউসুফ (৬৫), মোহাম্মদ আলীর নতুন বাড়ীর মোহাম্মদ আলীর পুত্র ইয়ার খান (৪০), ইসলাম নগর এলাকার সৈয়দ আমীনের নতুন বাড়ীর শহরমল্লুকের পুত্র সৈয়দ আমীন (৫৫)। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস উদ্দিন আহমেদ বলেন, তারা ৬ জন পূর্বগুজরা ইউনিয়নের বাসিন্দা। তারা বিভিন্ন দেশে প্রবাস জীবনে ছিলেন। পুলিশ আটক করে তাদের আদালতে পাঠিয়েছে। এই বিষয়ে রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, গোপন সংবাদের ভিক্তিতে ৬ জুয়ারীকে আটক করা পর, তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার ছয় জুয়ারীকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।