সোমবার ● ১২ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মহালছড়িতে মা গঙ্গার উদ্দেশ্যে ফুল দিয়ে শুরু হলো পাহাড়িদের বৈসাবি উৎসব
মহালছড়িতে মা গঙ্গার উদ্দেশ্যে ফুল দিয়ে শুরু হলো পাহাড়িদের বৈসাবি উৎসব
মিল্টন চাকমা, মহালছড়ি প্রতিনিধি :: করোনা (কোভিড-১৯ ) অতিমারি পরিস্থিতিতেও পাহাড়িদের কথিত ফুল বিঝু’র দিনে নদীতে ফুল দিয়ে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানানোর মধ্য দিয়ে ঢিলেঢালা ভাবে মহালছড়িতে শুরু হলো পাহাড়ীদের সবচেয়ে বড় উৎসব বৈসাবি। আজ ১২ এপ্রিল সোমবার সকাল ৬ টার দিকে প্রতিটি পাহাড়ি গ্রাম থেকে কিশোর-কিশোরীরা দল বেঁধে নিজ গ্রামের পাশ্ববর্তী নদীতে গিয়ে ফূল দেওয়া হয়। ত্রিপুরাদের বৈসু, মারমাদের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিঝু এ তিনটি নামের আদ্যক্ষর নিয়ে এ উৎসব পার্বত্য চট্টগ্রামে সাধারাণত বৈসাবি নামে পরিচিত। মা গঙ্গার উদ্দেশ্যে বিশ্বের সকল প্রাণীর হিতার্থে নদীতে ফুল দিয়ে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে বৈসাবি উৎসব শুরু হয়। এই দিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে তরুণ-তরুণীরা বাড়ি বাড়ি ও বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফুল সংগ্রহ করে এবং নিজেদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরিধান করে বিশ্ব শান্তি কামনায় নদীতে ফুল দেওয়া হয়। এই দিনটি উপলক্ষে পাহাড়ের বাড়িগুলো বিভিন্ন ফুল দিয়ে সজ্জ্বিত করা হয়। গ্রামে গ্রামে আয়োজন করা হয় বিভিন্ন খেলা-ধুলার প্রতিযোগিতা। আগামীকাল অর্থাৎ ১৩ এপ্রিল মূল বিজু, এই দিনে পাহাড়ীদের প্রত্যেকটি বাড়িতে রান্না করা হয় ৩৩ প্রকার সবজি মিশ্রিত পাচন ও পায়েস। এছাড়াও পাহাড়ীদের তৈরিকৃত বিভিন্ন ধরনের হাতের তৈরি সুস্বাদু পিঠা। আপ্যায়ন করা হয় অতিথিদের। যদিও বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে উৎসবের আনন্দ কিছুটা ভাটা পড়লেও কিশোর-কিশোরীদের আনন্দের কমতি নেই। বৈসাবি উৎসব মূলত তিনদিন হওয়ার কথা থাকলেও কমপক্ষে সপ্তাহব্যাপী এ উৎসব চলবে।
মহালছড়িতে সেচ্ছাসেবী সংগঠন “লুহডিক” এর ‘ছড়ি’ বিতরন
মহালছড়ি :: বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলাধীন মনাটেক গ্রামের একমাত্র স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “লুহডিক” এর উদ্যোগে মনাটেক সহ কয়েকটি গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে বয়স্কদের মাঝে “ছড়ি” (চাকমা ভাষায় “লুহডিক”), লুঙ্গি ও গামছা বিতরন করা হয়েছে। আজ ১২ এপ্রিল সোমবার সকাল ৯ টায় সিঙ্গিনালা, মনাটেক, মধ্য আদাম, করল্যাছড়িসহ কয়েকটি গ্রামে গিয়ে ২৭ জন বয়স্কদের মাঝে প্রত্যেককে ১টি করে “ছড়ি”সহ লুঙ্গি ও গামছা বিতরন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘লুহডিক’ এর সভাপতি রতœ উজ্জল চাকমাসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ। এছাড়া আরো উপস্থিত ছিলেন, সিঙ্গিনালা গ্রামের বিশিষ্ট মুরুব্বী অংসাথোয়াই মারমা, এপিবিএন স্কুল এন্ড কলেজ এর সহকারী শিক্ষক থুইসাপ্রু মারমা, শিক্ষক আলোময় চাকমা। ‘ছড়ি’ বিতরন কালে সংগঠনের সভাপতি রতœ উজ্জল চাকমা বলেন, বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানিয়ে পুরাতন বছরের সমস্ত গ্লানি ও দু:খ-বেদনাকে বিদায় জানানোর একটা লক্ষ্য নিয়ে করোনার অতিমারিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বল্প পরিসরে এ উদ্যেগ গ্রহন করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরো ব্যাপক আকারে কর্মসূচী গ্রহনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।