সোমবার ● ১২ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » পাদুকা ব্যবসায়ী হাসান হত্যার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ : ওসির গ্রেফতার দাবি
পাদুকা ব্যবসায়ী হাসান হত্যার প্রতিবাদে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ : ওসির গ্রেফতার দাবি
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা প্রতিনিধি :: গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানা তার বাড়িতে টাকার জন্য পাদুকা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে টানা এক মাস আটকে রেখে হত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল-সমাবেশ ও এসপি অফিস ঘেরাও কর্মসূচী পালন করেন ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষ।
আজ সোমবার সকাল ১১টায় জেলা শহরের সকল ওষুধের দোকানসহ মার্কেট-শপিংমল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরা শহরের ডিবি রোডে সমবেত হয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশ নেন। গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রিজের আয়োজিত আসাদুজ্জামান মার্কেটের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে সদর থানার ওসিকে গ্রেফতার, ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনসহ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি জানানো হয়।
এই কর্মসূচীতে জেলার রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া সংগঠন, সাংবাদিক ও বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ এবং নিহত হাসান আলীর স্ত্রী বিথি বেগম, ছোট ছেলে হেদায়েতুল ইসলাম শাফিন অংশ নেন। মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে বিক্ষুব্ধ লোকজন মিছিল নিয়ে এসপি অফিস ঘেরাও করেন।
এসময় ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সাথে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম মতবিনিময় করেন। ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ২৪ ঘন্টার মধ্যে উল্লেখিত দাবিসমূহ বাস্তবায়নের দাবি জানান। অন্যথায় হরতালসহ লাগাতার নানা কর্মসূচী পালন করবে বলে আল্টিমেটাম দেন। পুলিশ সুপার তাদের বক্তব্য শোনেন এবং তা তদন্তপূর্বক বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। এসময় পুলিশ সুপার নিহত হাসান আলীর পুত্র হেদায়েতুল ইসলাম শাফিনের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দেন।
চেম্বার সভাপতি শহিদুল ইসলাম শান্তর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, রাজনীতিক আমিনুল ইসলাম গোলাপ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ শরিফুল ইসলাম বাবলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল ইসলাম রাজা, মিহির ঘোষ, গোলাম মারুফ মনা, জিয়াউল হক জনি, মনজুর আলম মিঠু, কাজী আবু রাহেন শফিউল্যাহ খোকন, গোলাম রব্বানী, জেলা যুবলীগ সভাপতি সরদার মো. শাহীদ হাসান লোটন, গাইবান্ধা চেম্বারের সহ-সভাপতি মোস্তাক আহমেদ রঞ্জু, ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সভাপতি আব্দুর রশিদ সরকার, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা সভাপতি রেজাউন্নবী রাজু, গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সাধারণ সম্পাদক দেবাশিষ দাশ দিপু, জেলা ব্যবসায়ী সমন্বয় সমিতির সভাপতি ইকবাল আহমেদ, মাইক ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মিয়া, পাদুকা ব্যবসায়ী সমিতির জেলা সভাপতি আলিম মিয়া, জেলা দোকান শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল সাহা, সাবেক ছাত্রনেতা আরিফুল ইসলাম চৌধুরী শাহীন প্রমুখ।
বক্তারা, হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, দাদন ব্যবসায়ী আ’লীগ নেতা মাসুদ রানার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে সদর থানার ওসি মাহফুজুর রহমানকে গ্রেফতার, ঘটনার সাথে জড়িত অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের শাস্তি এবং বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান। দাবি আদায় না হলে জেলায় সর্বাত্মক হরতালের হুশিয়ারী দেন বক্তারা।
এদিকে হাসান আলী নিহতের ঘটনার মামলায় দুই পুলিশ সদস্যের গাফিলতির অভিযোগ এনে তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতার আওয়ামী লীগ নেতাকে চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
গাইবান্ধা জেলা শহরের খানকা শরীফ সংলগ্ন নারায়নপুর এলাকার জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক দাদন ব্যবসায়ী মাসুদ রানার বাড়ী থেকে শনিবার সকালে হাসান আলী (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাদুকা ব্যবসায়ী এবং আফজাল সুজ গাইবান্ধা শাখার সাবেক মালিক নিহত হাসান আলী শহরের থানাপাড়া এলাকার মৃত হজরত আলীর ছেলে।
সুন্দরগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড়ের উষ্ণ বাতাসে পুড়ে গেছে ৩৫ হেক্টর জমির ফসল
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে কালবৈশাখী ঝড়ের উষ্ণ বাতাসে পুড়ে গেছে ৩৫ হেক্টর জমির ফসল। এতে ওইসব ইউনিয়নের কৃষকরা মৌসুমের ইরি-বোরো ফসল হারিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে গত ৪ এপ্রিল রবিবার বিকালে হঠাৎ বৃষ্টি বাদল ছাড়াই উপজেলার কাপাসিয়া, চন্ডিপুর, কঞ্চিবাড়ি, শান্তিরাম, বেলকা, ছাপরহাটি, শ্রীপুর ও ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের উপর দিয়ে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যায়। আধা ঘন্টার ঝড়ের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে যায় উপজেলার পূর্ব ও উত্তরাঞ্চল।
উপজেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২৮০টি বসতবাড়ির ঘর, ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ১০২ হেক্টর জমির ফসল এবং ছোট বড় মিলে প্রায় ৫শ’টি গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তবে স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ি এর পরিমাণ আরও বেশী। কৃষিতে ১২০ হেক্টর ফসলি জমির ফসল বিনষ্ট হয়। এরমধ্যে ৩৫ হেক্টর জমির ধানক্ষেত বৈরী আবহাওয়ার কারণে পুড়ে যায়। এতে ধানের পাতাসহ শিষ পুড়ে গেছে।
এব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, কালবৈশাখীর তান্ডবে বিশেষ করে ভুট্টাক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে উপজেলায় ৩৫ হেক্টর জমির বোরো ক্ষেত পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, বয়ে যাওয়া কালবৈশাখীর তান্ডবের সময় বৃষ্টি বাদল ছিল না। বৈজ্ঞানিকভাবে জানা গেছে, কালবৈশাখীর তান্ডবের সময় যদি তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে হয় তাহলে জমির ফসল পুড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।