মঙ্গলবার ● ১৩ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » মাদক সম্রাট মিন্টু র্যাব-৬’র জালে বন্দি
মাদক সম্রাট মিন্টু র্যাব-৬’র জালে বন্দি
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গাসহ পশ্চিমাঞ্চলের কুখ্যাত মাদক সম্রাট মিন্টু সাড়ে তিন কেজি গাঁজাসহ ঝিনাইদহ র্যাব-৬’র জালে আটক হয়েছে। আজ ১৩ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার জীবনা গ্রামের তিন রাস্তার মোড় থেকে তাকে আটক করে র্যাব। এই নিয়ে সে মাদকসহ চারবার গ্রেফতার হলো। মিন্টু চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের জীবনা গ্রামের সানোয়ার ওরফে মনার ছেলে। ঝিনাইদহ র্যাবের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানানো হয়। র্যাব জানায় মিন্টু সাড়ে তিন কেজি গাঁজা নিয়ে দশমাইল থেকে খাড়াগোদা ভায়া জীবনা সড়কে অপেক্ষা করছিল। গোপন সুত্রে খবর পেয়ে র্যাব মঙ্গলবার বেলা ১টার দিকে স্পট থেকেই মিন্টুকে আটক করে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী ইউনিয়নের ভেটরিনারি কলেজের সামনে থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল মিন্টুকে ৫০ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক করেছিল। জামিনে বের হয়ে সে আবার বেপরোয়া হয়ে ওঠে। ইতিপুর্বে মিন্টু দশমাইল গরুহাটের একটি দোকান থেকে গাঁজাসহ র্যাব-৬ এর হাতে আরেকবার আটক হয়। কিন্তু আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো সে মাদক ব্যবসা শুরু করে। এলাকাবাসির অভিযোগ, সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী মিন্টু দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা চালিয়ে আসছে। কিন্তু গ্রেফতারের পর বেশিদিন মিন্টুকে জেলে থাকতে হয় না। রহস্যজনক ভাবে দ্রুত সে বেরিয়ে আসে। গ্রামবাসি জানায় জীবনা গ্রামের বিলের ধরে রয়েছে তার বাগানবাড়ি। সেখানে নিয়মিত মাদকের আড্ডা বসে। জীবনা বিলের ধারে রয়েছে তার অসাাজিক কার্যকলাপের ডেরা। বাইরে থেকে নারী নিয়ে সেখানে ফুর্তি করা হয়। চুয়াডাঙ্গার জীবনা, দশমাইল, সদরের বংকিরা, গোবিন্দপুর, হাজরা ও চোরকোল গ্রামে মাদক বিক্রি করে যুবসমাজকে ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে নিয়ে গেছে এই মিন্টু। বারবার গ্রেফতারের পর অল্প সময়ে বেরিয়ে আসায় ক্ষুদ্ধ তার গ্রামের মানুষ।
প্রচন্ড ভীড় স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই
ঝিনাইদহ :: কঠোর লকডাউন ঘোষনায় গ্রাম শহরের মানুষ বিচলিত জীবন ধারণের জন্য। কি ভাবে তারা বাঁচবে এই আশায় যেন দিশেহারা। তাই ঘরে যা কিচু সঞ্চয় আছে তাই নিয়ে কেনাকাটায় ঝাপিয়ে পড়ছে। এতে শহরের প্রায় সব দোকানে উপচে পড়া ভীড়। বিশেষ করে মহিলা ক্রেতাদের ভীড় সামাল দেওয়া কষ্ট। দেখ মনে হচ্ছে আর কখনো দোকানপাট খুলবে না। পলি বেগম এসেছেন হরিণাকুন্ডুর চাঁদপুর গ্রাম থেকে। কঠোর লকডাউন আর নাও উঠতে পারে এমন শংকা থেকে তিনি বাচ্চাদের জামাকাপড় ও সংসারের যাবতীয় জিনিস কিনতে এসেছেন। গৃহবধু আফরোজা জানান, পহেলা বৈশাখ ও ঈদের কেনাকটা করতে তিনি মার্কেটে এসেছেন। সব মহিলারা জানালেন করোনার ভয়াবহ প্রকোপ ও লকডাউনের কারণে দোকানপাট বন্ধ দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে। ফলে মানুষ আর বাইরে বের নাও হতে পারে। মঙ্গলবার ঝিনাইদহ শহরের কাপড়ের দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে উপচেপড়া ভীড়। যেখানে কোন স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। মাস্ক ছাড়া গাদাগাদি করে কেনা-বেচা করছে ক্রেতা-বিক্রেতারা। এ অবস্থা শহরের মুন্সী মার্কেট, গীতাঞ্জলী সড়কসহ বিভিন্ন বিপনী বিতান ঘুরে দেখা গেছে মাস্ক ছাড়াই অভিভাবকদের সঙ্গে শপিংমলে ঘুরছে শিশুরা। তবে করোনা প্রতিরোধে প্রশাসনিক কোন পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে পোশাক কিনতে আসছে মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্ত পরিবারের নারীরা। শহরের হামদহ থেকে আসা রাহেলা বেগম নামে এক নারী বলেন, “কালকের দিন পরে তো সব বন্দ করে দেবেনে, তাই বাচ্চাগের জন্নি কাপুড় কিনতে আইচি”। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডাঃ সেলিনা বেগম বলেন, আজও ঝিনাইদহে নতুন করে ২৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। সোমবার দুই নারী মারা গেছেন। করোনার এই পরিস্থিতিতেও মানুষ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও দোকান-পাটে ভীড় করছে। এতে করোনার সংক্রমনের ঝুঁকি বেড়েই চলেছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান বলেন, মানুষের বাইরে আসা, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়টি অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে ও মানুষকে সচেতন করতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছে।
ঝিনাইদহে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের বলি ৮ জন
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে করোনার মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছে আরো এক নারী। সোমবার লিলি বেগম (৪৩) নামে এক নারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি ঝিনাইদহ পৌর এলাকার পবহাটী গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিট সুত্রে জানা গেছে, গত ৩০ মার্চ লিলি বেগম অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত পহেলা এপ্রিল তার করোনার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ডাক্তারদের তত্বাবধানে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন লিলি বেগম। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে লিলি বেগম মারা যান। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে এই নিয়ে ঝিনাইদহে মা মেয়েসহ ৮ জনের মৃত্যু হলো। এর আগে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ঘোড়শাল ইউনিয়নের যদুড়িয়া গ্রামের রিনা বেগম, হামিরহাটী চাঁদপুরের আনসার আলী মন্ডল, কালীগঞ্জের আইনজীবী আশরাফুজ্জামান, কালীগঞ্জের বেজপাড়া গ্রামের গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী রহিমা খাতুন ও তার মেয়ে সালমা আক্তার মুন্নি এবং শৈলকুপার ফুলহরি গ্রামের দরবার আলী করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের লাশ দাফন কমিটি করোনা আক্রান্ত ও করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ৭২ জনের লাশ দাফন করেছে। এদিকে ঝিনাইদহে প্রতিদিন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার মাঝেই শহরের মার্কেট ও বিপনীবিতানগুলোতে প্রচন্ড ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সোমবার সকাল থেকে দেখা গেছে গ্রাম থেকে আসা মানুষ ধুমছে কেনাকাটা করছে। প্রশাসনের কোন বিধি নিষেধ মানুষ মানছে না। করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় অর্ধশত মানুষ এ রোগে মারা গেছে। অন্যদিকে ঝিনাইদহে নতুন করে মঙ্গলবার ২৭জন আক্রান্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত জেলায় আক্রান্ত’র সংখ্যা দাড়িয়েছে ২,৬১৩ জন। এপর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২৪১১ জন।