রবিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানের তুখোড় সেই ছাত্রের খবর এখন ভাইরাল
গণিত ও পদার্থ বিজ্ঞানের তুখোড় সেই ছাত্রের খবর এখন ভাইরাল
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: এক সময়ের তুখোড় ছাত্র মহেশপুর শহরের জলিলপুর মোল্লা পাড়ার আব্দুল গাফ্ফারের খবর সিএইচটি মিডিয়া টুয়েন্টিফোর ডটকমে প্রকাশের পর রীতিমতো ভাইরাল। দলে দলে মানুষ ছুটছেন স্যারকে এক নজর দেখার জন্য। অনলাইন মিডিয়া,টিভি ও পত্রিকার সাংবাদিকরাও গতকাল শনিবার দিনভর আব্দুল গাফ্ফারের যাপিত জীবন নিয়ে প্রতিবেদন তৈরী করতে দেখা গেছে। অনেক সাংবাদিক তার এই পরণতির নেপথ্যের কারণ অনুসন্ধান করছেন। তবে আব্দুল গাফ্ফার কিছু কথা সাংবাদিকদের সঙ্গে বলেছেন। তিনি জমিজমা নিয়ে শংকার মধ্যে আছেন। তার ভাইয়েরা জমি লিখে নিতে চাই। খালিশপুরের গোয়ালহুদা গ্রামের সিমেন্ট ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান জানান, গত ১০ বছর আব্দুল গাফ্ফার স্যার তার বাড়িতে থাকেন। তিনি দিনে একবার খান। প্রায় সময় রোজা থাকেন। নিয়মিত ছাত্র পড়ান, কিন্তু কোন টাকা পয়সা নেন না। তবে কম কথা বলেন। অসুস্থ হলে প্রিয় ছাত্ররা তাকে দেখাশোনা করেন। ওষুধ কিনে দেন। বর্তমান শামিম রেজা নামে এক ছাত্র আব্দুল গাফ্ফারের দেখভাল করছেন। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা শহরে আব্দুল গাফ্ফারের মুল্যবান জমি রয়েছে। এই জমি নিতে চান ভাইয়েরা। এদিকে মাতৃকুল ও পিতৃকুল মিলে অনেক জমি পেয়েছেন তিনি। স্ত্রী সন্তান না থাকায় এ সব জমি ভাইয়েরা রেজিষ্ট্রি করে নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন। এ চিন্তায় তিনি ব্যাকুল। তবে এলাকাবাসির ভাষ্যমতে তিনি পাগল বা মস্তিস্ক বিকৃত নয়। আগে তিনি গোসল করে পরিপাটি পোশাকে চলাফেরা করতেন। গত এক বছর আব্দুল গাফ্ফার গোসল করেন না। গাফ্ফারের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী (মায়ের তৃতীয় পক্ষ) ছিরবা আক্তার ঝর্ণা শুক্রবার দুপুরে এ প্রতিনিধির সঙেআগ আলাপকালে জানিয়েছিলেন তার ভাসুর ইচ্ছা করেই এমন করে থাকেন। কারণ জমিজমা নিয়ে তিনি বেশি চিন্তা করেন। এছাড়া তার শ্বাশুড়ি বদরুন্নেছার জমিও প্রথম পক্ষের ৩ ভাই লিখে নিয়েছেন। ফলে শ্বাশুড়ির আরো দুই পক্ষের ৬ জনকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে ছিরবা আক্তার ঝর্ণা দাবী করেন। তবে এ সব বিষয়ে আব্দুল গাফ্ফারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমি এখন মৃত্যু পথযাত্রী। আমার সময় খুবই কম।
অবৈধ ভাবে মাটি খননে বাধা দেয়ায় ভুমি কর্মকর্তাকে মারধর, আ’লীগ সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে এক ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার দায়ে হরিশংকরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদের নামে মামলা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানায় শুক্রবার বাদি হয়ে মামলাটি করেন সদর উপজেলার হরিশংকরপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান। যার মামলা নং ২৫/১৬-০৪-২০২১। ফরিদ ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নরহরিদ্রা গ্রামের মৃত খন্দকার আমিরুজ্জামানের ছেলে। এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকালে নবগঙ্গা নদী থেকে অবৈধ ভাবে মাটি খনন করছিলেন ফরিদ। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে সরজমিন পরিদর্শনে গিয়ে বাধা দেন স্থানীয় ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান। নিষেধ করা মাত্রই ক্ষিপ্ত হয়ে সরকারী কর্মকর্তার উপর হামলা চালায় খন্দকার ফারুকুজ্জামান ফরিদ। ভূমি কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার সংবাদ পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম শাহীন পুলিশ নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে নরহরিদ্রা গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে আসিফ (২৫) নামে এক যুবককে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ৬ মাসের জেল প্রদান করেন। এ সময় ফরিদ পালিয়ে যান। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হাটগোপালপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ সাব ইনপেক্টর জাহিদুল ইসলামকে। তিনি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন। বিষয়টি নিয়ে শনিবার বিকালে মামলার তদন্তকারী অফিসার জাহিদুল ইসলাম জানান, মামলা দায়েরের পর ফারুকুজ্জামান ফরিদ পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য খুজছি, কিন্তু পাচ্ছি না। তিনি বলেন, যত প্রভাবশালীই হোক না কেন কোন প্রভাব বা চাপের কাছে পুলিশ নত হবে না। সরকারী কর্মকর্তাকে মারধর করার অধিকার তাকে কে দিয়েছেন ?
ঝিনাইদহে ৩ মাদকসেবীর কারাদন্ড
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি ও শামিমা ক্লিনিক এলাকায় মাদক রাখা ও সেবনের দায়ে তিনজনকে কারাদন্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমান আদালত। দন্ডিতরা হলো ঝিনাইদহ শহরের হামদহ ৩ নং পানির ট্যাংকিপাড়ার খোন্দকার মিজানুর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান মিলন, পবহাটি এলাকার টুলু মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম ও পরিমল কুমার অধিকারীর সুবির কুমার অধিকারী। শনিবার দুপুরে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জিন্নাতুল ইসলাম এ দন্ডাদেশ প্রদাণ করেন। আদালতের বিচারক জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের পবহাটি এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসময় গাঁজা সেবনকরা অবস্থায় পরিমল ও সাইফুল ইসলামকে আটক করা হয়। পরে আদালত বসিয়ে ওই দুই জনকে ৭ দিন করে বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১’শ টাকা করে জরিমানা করা হয়। অন্যদিকে ইয়াবা সেবনের সময় দুই পিচ ইয়াবা ট্যাবলেট ও এক পুরিয়া গাঁজাসহ মাহবুব ওরফে মিলনকে আটক করা হয়। পরে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে উক্ত আসামীকে ১ বছর ১১ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ৫০০ টাকা জরিমানা করা হয়। তবে এরা শুধু সেবকই নয় বড়মাপের ড্রাগি ডিলার বলে এলাকাবাসি জানায়। এরা মটরসাইকেলের সামনে পুলিশ বা সাংবাদিকের স্টিকার লাগিয়ে মাদক বহন করে থাকে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ রয়েছে।
বহিস্কৃত বিজিবি সদস্য নারীসহ জনতার হাতে আটক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে চাকরি হারানো বিজিবি সদস্য বহিরাগত নারীসহ জনতার হাতে আটক, সেই বাসায় অভিযানে ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। পরে ভ্রাম্ম্যমান আদালতে বিজিবি সদস্য’র জেল ও জরিমানা করা হয়েছে। জানা গেছে ১৭ এপ্রিল শনিবার সকালে ঝিনাইদহ শহরের শামীমা ক্লিনিকের বিপরীতে মাজমাদার পাড়ার আঃ রাজ্জাকের বাসার ভাড়ায় থাকেন ঝিনাইদহ শহরের হামদহ ৩ নং পানির ট্যাংকিপাড়ার খোন্দকার মিজানুর রহমানের ছেলে বহিস্কৃত বিজিবি সদস্য মাহবুবুরার রহমান মিলন। আনুমানিক ৯ মাস পুর্বে বিজিবি সদস্য মাহবুবুরার রহমান মিলন বহিস্কৃত হয়। মিলনের প্রথম স্ত্রী তালার হওয়ার পর দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে সাংসারিক গোলোযোগের কারনে তার বর্তমান ২য় স্ত্রী রিয়া বেগম ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। পরে শনিবার সকালে জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মিকাইলের মেয়ে মিতুর সাথে মিলনের একই বাসায় যাপন করছে মর্মে তার বর্তমান স্ত্রী রিয়া বেগম স্থানীয়রা জানতে পেরে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সদর থানা পুলিশ ও ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে অবরুদ্ধ মিলনের রুম তল্লাশি করা হয়। এসময় তার বাসা থেকে মাদকদ্রব্য ইয়াবা ও গাঁজা উদ্ধার করে পুলিশ। সেসময় ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে মিলনকে সাজা হিসেবে ২৩ মাসের জেল প্রদান করেন ও মিতুকে সদর থানা পুলিশ হেফাজতে সোপর্দ করেন।
ঝিনাইদহ হাসপাতালে রোগীদের সেহরী দিচ্ছেন একদল যুবক
ঝিনাইদহ :: মানুষকে সেবা দিয়ে আবার কেও বা খেতে দিয়ে অনেকে তৃপ্তি লাভ করেন। সমাজে মহৎ শ্রেনীর এমন কিছু মানুষ আছে বলেই বঞ্চিত একটি বড় অংশ ছিটেফোটা হলেও সাহায্য, সহযোগিতা ও সেবা পাচ্ছেন। মাহে রজমান উপলক্ষ্যে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে রোগীর সাঙ্গে থাকা স্বজনদের প্রতিদিন সেহরী দিয়ে এমন এক দৃষ্টান্ত ও মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন ঝিনাইদহের একদল যুবক। গত বছরের ন্যায় এবারও স্বেচ্ছাসেবীরা তাদের নিজের অর্থ দিয়ে সদর হাসপাতালে সেহরীরর সময় খাবার পৌছে দিচ্ছেন। প্রতিদিন প্রায় এক’শ মানুষকে তারা সেহরী করাচ্ছেন। রোগীর স্বজনদের মাঝে সেহরী বিতরণের উদ্যোক্তা বিশিষ্ট নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংগঠক শামীম আহম্মেদ টফি জানান, জানান, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীরা নিয়মিত খাবার পেলেও সঙ্গে থাকা স্বজনরা বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসেন। বিশেষ করে গরমের সময় রোগীর স্বজনরা ভোরে সেহরী খেতে পারেন না। বেশির ভাগ সময় সেহরী না করেই রোজা রাখেন। সেই মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে গত বছরের মেতা এবারও সেহরী বিতরণ করা হচ্ছে। শনিবার ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে এই কর্মসূচির সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন রেল আব্দুল্লাহ হুমায়ন হিমু। তার সঙ্গে সেচ্ছাসেবক হিসাবে আছেন মোঃ আব্দুর রহিম, মহিদুল ইসলাম, জুবায়ের, ওমায়ের বাবু, সাজ্জাদ হোসেন, হাসান, মাসুদ বিশ্বাস ও নুরমোহাম্মদসহ এক ঝাক যুবক। এ কর্মসুচির সমন্বয়কারী রেল আব্দুল্লাহ জানান, করোনাকালে শহরের সক হোটেল রেস্তোরা বন্ধ থাকে। দুরদুরান্তের রোগীর স্বজনরা সেহরী খেতে পারেন না। তাই আমরা সব রোজার দিন সেহরীর খাবার বিতরণ করবো। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ হারুন অর রশিদ জানান, এমন উদ্যোগের কথা শুনে খুবই ভাল লাগছে। এই মহৎ কাজের মাধ্যমে আয়োজকরা আল্লাহ পাকের রহমত পাবেন বলে মনে করি।