মঙ্গলবার ● ২০ এপ্রিল ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » আত্রাইয়ে বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ কৃষক দিশেহারা
আত্রাইয়ে বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ কৃষক দিশেহারা
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: নওগাঁর আত্রাইয়ে ইরি-বোরো ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। বিঘার পর বিঘা জমির ধান রাতারাতি মরে চিটা হয়ে যাচ্ছে। এ রোগ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিতে পারছেন না কৃষি বিভাগ। ফলে কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম হতাশার।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে এ উপজেলা প্রায় ২০হাজার হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধানের চাষ করা হয়েছে। এবারে চলতি রবি মৌসুমে উপজেলার ৮ ইউনিয়নের বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা গেছে প্রায় মাঠগুলোতেই জিরাসাইল, ব্রি-২৯, ব্রি-২৮ ও কাটারিভোগ ধানের চাষ অধিকহারে করা হয়েছে। সেই সাথে এবারে নতুন জাতের ব্রি-৮১ ধানও ব্যাপকহারে চাষ করা হয়েছে। মাঠে মাঠে ধান পাকতে শুরু করেছে। এমন সময় ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষক তাদের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। এ বছর বোরোচাষের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ইরি বোরা বাম্পার ফলনের সম্ভবনা থাকলেও বর্তমানে ব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশার ছাপ।
উপজেলার সাহেবগঞ্জ সরদারপাড়া গ্রামের কৃষক সেন্টু ৮বিঘা জমিতে ব্রি-৮১ জাতের ধানে রোপন করেছেন তার প্রায় সব জমিতেই ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করেছে। কোন কীটনাশক প্রয়োগ করে প্রতিকার পাওয়া যাচ্ছে না বলে তিনি জানিয়েছেন।
আলহাজ আবদার হোসেন বলেন, আমার ২ বিঘা জমির ব্রি-৮১ ধানে ব্লাস্ট রোগ ধরেছে। বিভিন্ন প্রকার কীটনাশক প্রয়োগ করেও প্রতিকার করা যাচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কেএম কাউছার হোসেন বলেন, বোরো মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া ভালই ছিল। মাঝে কিছুটা প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে ধানে ব্লাস্ট রোগের দেখা দিয়েছে। এর প্রতিকারে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছি। সেই সাথে যেসব ধান ৮০ ভাগ পেকে গেছে ওই ধানগুলো দ্রুত কেটে নেয়ার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
সর্বাত্মক লকডাউন বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে আত্রাই থানা পুলিশ
আত্রাই :: করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ ঘোষণার পর থেকে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে মাঠে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন নওগাঁর আত্রাইয়ে আত্রাই থানা পুলিশ।
সর্বাত্মক লকডাউনের ৬ষ্ঠ দিন সোমবার দিনব্যাপী উপজেলা সদর, সাহেবগঞ্জ বাজার, বেইলি ব্রিজের নিচে, নতুন বাজার, তুলা পট্টি, আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন, ভবানীপুর-মির্জাপুর হাট ও আশপাশের এলাকাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালান ওসি আবুল কালাম আজাদ।
উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় জনসাধারণের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার জন্য চেকপোস্ট বসিয়েছে আত্রাই থানা পুলিশ। এসব চেকপোস্টে গাড়ি থামিয়ে যাত্রীদের পরিচয় এবং রাস্তার বের হওয়ার কারণ জিজ্ঞেস করা হচ্ছে।
যেসব পেশার মানুষ জরুরীসেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তাদের চেকপোস্ট অতিক্রম করার অনুমতি দিয়ে অন্যদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
অভিযান পরিচালনাকালে আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বুধবার থেকে কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে সরকার যে নির্দেশনা দিয়েছে, তা বাস্তবায়নে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এজন্য ‘মুভমেন্ট পাস’ ছাড়া কাউকে বাড়ির বাইরে আসতে দেওয়া হবে না বলে পুলিশ জানিয়েছে। তিনি আরো বলেন, উপজেলার বিভিন্ন এলাকার হাট-বাজারের দোকান বিকেল তিনটার মধ্যে বন্ধ, অপ্রয়োজনে বাড়ী থেকে বের না হতে, মাস্ক ছাড়া বাড়ীর বাহির না হতে, মুভমেন্ট কার্ড সাথে রাখতে, যাদের মুভমেন্ট কার্ড লাগবেনা তাদেরকে পরিচয় পত্র সাথে রাখতে বলেন। দেশে করোনাভাইরাসের ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে বুধবার থেকে কঠোর বিধিনিষধের ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু এই বিধিনিষেধকে বলা হচ্ছে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’। করোনার সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ কার্যকর করার বিকল্প নেই।
অভিযান পরিচালনাকালে তদন্ত ওসি মোজাম্মেল হক কাজি, এস আই হাইদার হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ কুমার সরকার, জাহাঙ্গীর আলম, মনিরুল ইসলাম, হরেন্দ্র নাথ সরকার, ডিএসবি ওয়াজেদুর রহমানসহ পুলিশ সদস্যরা অংশগ্রহন করেন।