শনিবার ● ১ মে ২০২১
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » ১০ মামলার আসামী ডাকাত সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ
১০ মামলার আসামী ডাকাত সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ
কক্সবাজার প্রতিনিধি :: কক্সবাজারে সেই দূর্গম পাহাড়ি আস্তানা থেকে অস্ত্র ও ডাকাতিসহ ১০ মামলার আসামী ও দুই সহযোগীসহ সাদ্দাম বাহিনীর প্রধান সাদ্দাম হোসেনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, কিরিচ ও রামদাসহ উদ্ধার করা হয়। আজ শনিবার ১লা মে রাত ৪ টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শহরের রুমালিয়ারছড়ার সিকদার পাড়ার মাটিয়াতলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামী সাদ্দাম শহরের রুমালিয়ারছড়া সমিতিবাজার এলাকার মৃত সালেহ আমদের ছেলে। কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, একটি ডাকাত গ্রুপ অস্ত্র নিয়ে রুমালিয়ারছড়া সমিতি বাজার এলাকায় অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে শনিবার ভোরে সেই দুর্গম এলাকায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে একটি বাসা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে অস্ত্র, গুলি, রামদা, কিরিচ ও মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়। পরে জানা গেলো তিনজনের মধ্যে একজন সাদ্দাম বাহিনীর প্রধান সাদ্দাম হোসেন। যার বিরুদ্ধে প্রায় ১০টি নিয়মিত মামলা রয়েছে। কক্সবাজার জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ শেখ মো. আলী জানান, সাদ্দামের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও ডাকাতিসহ ১০টি নিয়মিত মামলা রয়েছে৷ কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, দীর্ঘ দিন চেষ্টার পর আজ শনিবার ভোরে সাদ্দাম বাহিনীর প্রধান সাদ্দাম হোসেনকে অস্ত্র, গুলি, কিরিচ ও রামদাসহ গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। তার বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলাসহ প্রায় ১০টি নিয়মিত রয়েছে। সাদ্দাম বাহিনীতে রয়েছে ৫ থেকে ৬ জন সক্রিয় সদস্য। এর মধ্যে সাদ্দামের সাথে দুই সহযোগী গ্রেপ্তার হয়েছে। তারা পাহাড়ি এলাকা গুলোতে নিয়মিত অপরাধ কর্মকাণ্ড চালায়।
পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, কক্সবাজার শহরের কয়েকটি শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের মধ্যে সাদ্দাম বাহিনী অন্যতম। সাদ্দাম প্রায় ৪ বছর ধরে শহরের পাহাড়ি ও দুর্গম এলাকা-রুমালিয়ার ছড়ার সমিতি বাজার, সিকদার বাজার, কক্সবাজার কারাগারের পেছনের এলাকা, পল্লানিয়া কাটা, আমতলী পাহাড়ি এলাকা, সাতিহিত্যা পল্লীর ভেতরে, বিজিবি ক্যাম্পের পশ্চিমে ও আলীর জাহান গরুর হালদা এলাকায় রাজত্ব করে চলছে। ওই পাহাড়ি এলাকায় গড়ে তুলেছে নিজেদের আস্তানা। রাতের বেলায় তাদের এসব এলাকায় অবাধ বিচরণ। পুলিশের ভয়ে তারা সহজেই প্রধান সড়কমুখী হয় না। ওই পাহাড়ি এলাকার বিশেষ করে জেল কারাগারের পেছনের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি তাদের আশ্রয়দাতা হিসেবে রয়েছে। ওই এলাকার বেশ কয়েকজন স্থানীয়রা বলেন, সাদ্দাম বাহিনীর কাছে সবাই অসহায়। এখানের বেশ কয়েকটি এলাকায় তারা রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। তাদের হাতে জিম্মি প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। মানুষদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হয় তাদের। কারো বাড়িতে মেহমান আসলে ছিনতাইয়ের শিকার হয়। ঘর নির্মাণ করতে বা জায়গা ক্রয় বিক্রয় করলে তাদের দিতে হয় নিয়মিত চাঁদা। তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কথা বলায় নিহত হয়েছে অনেকজন। আহত হয়ে অনেকেই এখন পঙ্গু।