বুধবার ● ৫ মে ২০২১
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » চারদিনেও গ্রেফতার হয়নি সুমেলের খুনি
চারদিনেও গ্রেফতার হয়নি সুমেলের খুনি
মো. আবুল কাশেম, স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথে হত্যাকান্ডের চারদিন পেরিয়ে গেলেও ঘাতক গ্রেফতার না হওয়ায় যে কোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
স্কুলছাত্র সুমেল হত্যাকাণ্ডের অভিযুক্ত খুনি সাইফুল ওরফে লন্ডনি সাইফুলকে গ্রেফতার করতে পারেনি এখনো পুলিশ। হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশকে বোকা বানিয়ে গাঁ ঢাকা দেন তিনি। এরপর চারদিন হন্য হয়ে ঘুরেও তার সন্ধান পায়নি তারা। তবে অভিযুক্ত সাইফুল যেন বিদেশ পালিয়ে যেতে না পারে, এজন্য ইতিমধ্যে তার দুটি পাসপোর্ট জব্দ করেছে পুলিশ।
গত শনিবার উপজেলার চৈতননগর গ্রামের সড়কে মাটি কাটাকে কেন্দ্র করে সাইফুল ও নজির গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে স্কুলছাত্র সুমেল নিহত হন। সুমেল একই গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় সুমেলের চাচা ইব্রাহিম আলী সিজিল বাদী হয়ে সাইফুলকে প্রধান অভিযুক্ত করে সোমবার রাতে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলার সবচেয়ে বড় জলমহাল ‘চাউলধনী হাওর’ ইজারা নিয়ে আলোচনায় আসেন উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চৈতননগর গ্রামের সাইফুল আলম। হাওর ইস্যু নিয়ে জন্ম দেন একাধিক আলোচিত ঘটনার। সুবিধাভোগী প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের নিজ গ্রাম চৈতননগরে বিস্তার করেন একক আধিপত্য। গড়ে তোলেন নিজস্ব বাহিনী। সবশেষ গত শনিবার বিকেলে গ্রামের সড়েক মাটিকাটা নিয়ে সাইফুল আলম ও নজির উদ্দিন পক্ষের সংঘর্ষ হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সম্প্রতি একটি সড়কে নিজের গোত্রের লোকজন নিয়ে মাটি কাটার কাজ শুরু করেন সাইফুল। সড়কের পাশে গ্রামের নজির মিয়ার ধানী জমি থেকে তারা মাটি কাটতে গেলে আপত্তি করেন তিনি। এ নিয়ে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে নিজের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে সাইফুল গুলি ছোড়েন। এসময় মাটিতে লটিয়ে পড়েন প্রতিপক্ষের কয়েকজন।
এদের মধ্যে মারা যায় স্কুলছাত্র সুমেল।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইন-চার্জ শামীম মূসা বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে সাইফুলের গুলি করার বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সাইফুলকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান। ’
বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কে ঢালাই হচ্ছে মাটি মিশ্রিত দিয়ে
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ- উপজেলার জগন্নাথপুর সড়কের একটি অংশের আরসিসি ঢালাই কাজে উপজেলা প্রকৌশলীর সামনেই ব্যবহার করা হচ্ছে মাটি মিশ্রন মেশিনে ভাঙ্গা ছিপ-পাথর। পাথর না ধুয়ে সিমেন্ট মিশ্রন করে আরসিসি ঢালাই কাজ করা হচ্ছে।
ওই অংশটি হচ্ছে পৌর শহরের লতিফ উল্লা মার্কেটের সামন হতে মস্তুরা পয়েন্ট পর্যন্ত ৫০০মিটার সড়ক। মঙ্গলবার দুপুরে মাটি মিশ্রিত পাথর দিয়ে কাজ করার এমন দৃশ্যটি নজরে পড়লে ক্যামেরা বন্দি করেন সাংবাদিকরা।
এসময় বক্তব্য নিতে গেলে উপজেলা প্রকৌশলীর সামনে ওই সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্ঠা করে ঠিকাদার।
শুক্রবার (৩০এপ্রিল) দুপুরে রহস্যজনক ভাবে জনবহুল ওই সড়কটি সম্পুর্ণরুপে যানবাহন বন্ধ করে মাত্র ৫০০মিটার সড়ক আরসিসি ঢালাই কাজ শুরু করে ঠিকাদার। সড়কটি প্রসস্ত আছে ২৪ফুট। চাইলে অর্ধে অংশ করে করে আরসিসি ঢালাই কাজ করতে পারতো ঠিকাদার। কিন্তু উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে আতাত করে রহস্যজনকভাবে রাস্তাটি বন্ধ করে জনসাধারণের নজরের বাহিরে রেখে কাজ করা হচ্ছে।
ফলে চলাচলের সময় জনসাধারন চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছেন। রমজান মাসে মাত্র এই অর্ধ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য অধিক গাড়ি ভাড়া দেয়া আর প্রায় আড়াই কিলোমিটার ঘুরতে হচ্ছে যাত্রীরা।
মাটি মিশ্রিত ছিপ-পাথর দিয়ে কাজ চলছে জানতে চাইলে স্পটে থাকা উপজেলা প্রকৌশলী সাংবাদিকদের বলেন, এই ছিপ-পাথরে একটু ডাটস্ মিশ্রন থাকতেই পারে। আর বক্তব্য নিতে গেলে উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ এর সামনেই সাংবাদিকের মোবাইল কেড়ে নেয়ার চেষ্ঠা করেন ঠিকাদার সুহেল আহমদ।
বক্তব্য দেয়াতো দুরের কথা সাংবাদিককে নিয়ে বাজে মন্তব্যও করেন ঠিকাদার।
বিশ্বনাথে দিনমজুর পরিবারের উপর সশস্ত্র হামলা, নারীসহ আহত-৪
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ২নং অলংকারী ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সশস্ত্র হামলায় এক নারী সহ চার জন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতরা বর্তমানে ওসমানী মেডিকেলের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
গতকাল ৩ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬ টার দিকে অলংকারী ইউনিয়নের টেংরা চানপুর গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। আহতরা হলেন মামলার বাদি আব্দুল খালিক ও তার স্ত্রী এবং দুই ছেলে।
হামলার ঘটনায় বিশ্বনাথ থানায় ৮ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন টেংরা চানপুর গ্রামের দিনমজুর আব্দুল খালিক। যার বিশ্বনাথ থানা মামলা (নং- ০৬, তারিখ- ০৪-০৫-২০২১ ইং)। দিনমজুর আব্দুল খালিকের পরিবারের উপর সশস্ত্র হামলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
মামলায় আসামিরা হলেন, অলংকারী ইউনিয়নের টেংরা চানপুর গ্রামের মৃত জনাব আলীর ছেলে মানিক মিয়া (৪৮), আব্দুস সাত্তারের ছেলে জায়েদ মিয়া (৪০), মৃত লতিফ উল্লাহ এর ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫), মৃত জনাব আলীর ছেলে নেছার মিয়া (৪৫), আব্দুস সাত্তারের ছেলে সায়েদ মিয়া (৩৬), রহিম মিয়ার ছেলে কামাল মিয়া (১৮), সায়েদ মিয়ার স্ত্রী সাহনা বেগম (২৫), নেছার মিয়ার স্ত্রী ফাতেমা বেগম (৩৫),। এই সন্ত্রসীরা হামলা করেও থেমেনি। তারা দিনমজুর পরিবারের লোকদের বাড়ি ছাড়া করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ শামীম মূসা মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হামলাকারীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে।
বিশ্বনাথে নেই স্বাস্থ্যবিধি,শপিংমলে মানুষের ভিড়
বিশ্বনাথ :: ঈদকে সামনে রেখে শপিংমলে চলছে কেনাকাটার ধুম। এতে করে প্রতিনিয়ন উপজেলা ও পৌর এলাকার বিভিন্ন এলাকায় মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন করোনায়।
সর্বাত্মক লকডাউনের পর, শর্ত সাপেক্ষে শপিংমল ও দোনপাট খুলে দেয়ার পর সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় সবকিছুই চলছে স্বাভাবিক সময়ের মতো। শপিংমল ও দোকানপাটে বেড়েছে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে, অনেকটা ‘খুশির সদাইয়ে’ ব্যস্ত মানুষ। স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই কোথাও।
দিন দিন বেড়ে চলছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। তবুও নেই স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার প্রবণতা।
এতে করোনার ঝুঁকি ও সংক্রমণ বেড়ে যাবার আশঙ্কা করছেন সচেতন মহল। প্রশ্ন উঠেছে, সরকারের করোনা প্রতিরোধ কার্যক্রম কতটুকু কাজে আসবে, তা নিয়ে।
এদিকে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে।
সরেজমিন উপজেলার কয়েকটি শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছে কেনাকাটা। অধিকাংশ ক্রেতা ও বিক্রেতাগণ ব্যবহার করছেন না মাস্ক। মাস্ক ছাড়াই অভিভাবকদের সাথে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরছে শিশুরাও। অধিকাংশ দোকানে নেই স্যানিটাইজার, শপিংমলের বাহিরেও নেই হাত ধোয়ার বিশেষ ব্যবস্থা। মাছ, মাংস ও সবজির বাজারের চিত্রও অনুরুপ। আগের চেহারায় ফিরেছে সব।
ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরও করোনার ব্যবসা বন্ধই ছিলো। এ বছরও তাই হলে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়া ছাড়া কোন উপায় থাকবেনা আমাদের। তবে স্বাস্থবিধি ও সরকারি নিদের্শনার প্রতি খেয়াল রেখেই ব্যবসা পরিচালনা করছি আমরা।
উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ১১ জন ও আইসোলেশনে রয়েছেন ১১ জন। আর বাকী আক্রান্তরা চিকিৎসা গ্রহণ করে সুস্থ হয়েছেন।
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দাশ সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমাদের মনিটরিং অব্যাহত আছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জনসাধারণকে আরও সচেতন হতে হবে।