শুক্রবার ● ৭ মে ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » কৃষকদের নাম মাত্র সহায়তা করে বাকী টাকা লোপাট
কৃষকদের নাম মাত্র সহায়তা করে বাকী টাকা লোপাট
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ কৃষি অধিদপ্তরের সমলয় প্রকল্পে ধান চাষ যেন মাছের তেলে মাছ ভাজা। বীজতলা তৈরী থেকে ধান মাড়াই পর্যন্ত এই প্রকল্পে কৃষকদের নাম মাত্র সহায়তা করে বাকী টাকা লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ এই প্রকল্পে ১৪ লাখ টাকার ব্যয় দেখানো হয়েছে। চারা রোপণের পরে সনাতন পদ্ধতিতেই হয়েছে চাষাবাদ। সব কিছু কৃষকের নিজ খরচে। সরকারের এই প্রজেক্টে সরকারের প্রণোদন কর্মসূচির আওতায় আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ছিল। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, এ প্রণোদনার আওতায় ৫০ একর জমিতে অধিক ফলনশীল সুবর্ণ-৩ হাইব্রিড বোরো ধান আবাদের জন্য সাড়ে ৪ হাজার ট্রে-তে (১০০ টাকা মূল্যমানের ট্রেতে) বোরো বীজতলা তৈরি করে তুলনামূলকভাবে কম খরচে কৃষকদের অধিক লাভবানের ব্যবস্থা করা হয়। গাগান্না গ্রামের ইয়াকুব আলীর ছেলে আলমাসের ২০ শতক জমিতে বীজ বপণ করা হয়। সেখান থেকে উৎপাদিত চারা এই প্রকল্পের চাষিদের দেওয়া হয় রোপণ করার জন্য। প্রকল্পের বেশির ভাগ কৃষক অভিযোগ করেছেন মাত্র একবার তারা সার পেয়েছেন কৃষি অফিস থেকে। তাও মাপে সঠিক ছিল না। একবার জমির পরিমাণ অনুসারে পচণরোধী ওষুধ দেওয়া হয়েছে। কীটনাশক সবাইকে দেওয়া হয়নি। ফেব্রয়ারির মাসে এ নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ প্রকাশিত হলে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম আশপাশের অন্য কৃষকদের তালিকায় নাম ঢুকিয়ে সার দেন। ওই জমিগুলো প্রথমে এই প্রজেক্টের আওতায় ছিল না। প্রকল্পে ৫০ একর জমি থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে নেই বলে অভিযোগ। অর্ন্তভুক্ত কৃষকদের আগাছা দমন, সেচ ও পরবর্তীতে আরও দুই বার নিজ খরচে সার প্রয়োগ করতে হয়েছে। রাজনগর গ্রামের নজির মন্ডলের ছেলে দলুর এই প্রকল্পে ৪০ শতক জমি রয়েছে। তিনি জানান কৃষি অফিস থেকে তিনি মোট ৪০ কেজি সার পেয়েছেন। আলমাসের ডিপটিউবয়েল থেকে ৩ হাজার টাকা বিঘা চুক্তিতে সেচ দিয়েছেন। তাকে পচণরোধী ওষুধ দেওয়া হয়নি। কিটনাশকও দেওয়া হয়নি। রাজনগর গ্রামের আবু বকর মন্ডলের ছেলে মুকুলও এই প্রকল্পের অন্তর্ভূক্ত চাষি। তিনিও একই অভিযোগ করেন। গাগান্না গ্রামের কলম চৌধুরীর ছেলে রফি চৌধুরীর এই প্রকল্পে ৩০ শতক জমি রয়েছে। গতকাল বুধবার তার ১২ শতক জমির ধান কাটা হয়েছে মেশিন দিয়ে। তিনি ও তার স্ত্রী জানান, তারা শতক প্রতি ১ কেজি সার পেয়েছেন এক বার। এর পরে ধান কাটার সময়ে আবার কৃষি অফিস থেকে যোগাযোগের পর তারা ধান কাটতে এসেছেন। রাজনগর গ্রামের গাজী উদ্দিনের ছেলের স্বপণের এই প্রকল্পে ১৮ শতক জমি রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা নিজ খরচে জমি পাকিয়েছি। আমাদের যে চারা দেওয়া হয় সেটা রোপণের পর অনেক চারা মারা যায়। স্বপন বলেন, তিনি সার পেয়েছেন শতক প্রতি ১ কেজি করে এক বার। পচণরোধী ওষুধ দেওয়া হয়েছিল কিন্তু অনেক পরে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর প্রকল্পে দায়িত্বে থাকা দুজন বন্টক সুপার ভাইজার নাজমুল হাসান ও লতিফ উর রহমানকে তড়িঘড়ি করে অন্য উপজেলায় বদলি করা হয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিমের কাছে এই প্রকল্পের তথ্য চেয়ে আবেদন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের কোন তথ্য দেন নি। তিনি ঈদের পর তথ্য দিবেন বলে জানান। খোজ নিয়ে জানাগেছে, তিনি বিদেশ যাওয়ার জন্য সকল প্রস্তুতি নিয়েছেন। যাওয়ার আগে নানা খাত থেকে দুর্নীতি করে টাকা পকেটস্থ করছেন। সমলয় প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতি প্রসঙ্গে ডিডি আজগর আলী বলেন, আমি মাত্র দু মাস আগে এসেছি, তাই এই প্রকল্প সম্পর্কে আমি কোন তথ্য দিতে পারবো না।
ঝিনাইদহে উত্তেজিত জনতার কর্তৃক গাড়ি ভাংচুর
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ শহরের কবি সুকান্ত সড়কের স্টেডিয়ামের সামনে মাইক্রোবাস চাপায় মিলন উদ্দিন (৩৬) নামের এক রংমিস্ত্রী নিহত হয়েছে। বুধবার বিকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মিলন উদ্দিন শহরের ব্যাপারীপাড়ার আব্বাস উদ্দিন সড়কের মৃত বদর উদ্দিন খাঁ’র ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী ইরান মন্ডল জানান, বিকেলে মিলন স্টেডিয়ামের পশ্চিমপাশের একটি বাড়ির প্রধান ফটকে রংয়ের কাজ করছিল। এসময় আদর্শপাড়া থেকে শহরের এইচএসএস সড়কের দিকে যাওয়া একটি মাইক্রোবাস নিয়ন্ত্রন হারিয়ে সরাসরি মিলনকে চাপা দেয়। এতে সে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা গাড়িটি ভাংচুর করে। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মাইক্রোবাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক পলাতক রয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
ঝিনাইদহে হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার বিতরণ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে ১ হাজার হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার সকালে সদর উপজেলার মধুহাটি ও গান্না ইউনিয়নে এ উপহার বিতরণ করা হয়। এ উপলক্ষে সকালে ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সাধুহাটি ইউনিয়ন চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় ইউপি চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন জুয়েল এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঝিনাইদহ-২ আসনের সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুর রশিদ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন। অপরদিকে গান্না ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউপি চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মালিতা। সেখানেও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য তাহজীব আলম সিদ্দিকী সমি, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন। আলোচনা সভা শেষে, ২ ইউনিয়নের ১ হাজার হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহার ৫’শ টাকা করে বিতরণ করা হয়। করোনাকালে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এ উপহার পেয়ে খুশি হতদরিদ্ররা।