সোমবার ● ১০ মে ২০২১
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » অন্তস্বত্তা গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী-শাশুড়ী শ্রীঘরে
অন্তস্বত্তা গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় স্বামী-শাশুড়ী শ্রীঘরে
মো. আবুল কাশেম, ষ্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের ওসমানীনগরে এক গৃহবধুর পিতার বাড়ি থেকে পাঠানো ইফতারীতে বরের জন্য আলাদা সাজানো থালা না থাকার জের ধরে সৃষ্ট পারিবারিক কহল ও ঈদুল ফিতরের নতুন কাপড় না পাওয়ায় স্বামী ও শাশুড়ীর নির্যাতনে ৭ মাসের অন্তস্বত্তা গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠে।
এঘটনায় নিহতের বড় ভাই ইসলাম উদ্দিন শনিবার রাত ১০ টার দিকে নিহতের স্বামী ও শাশুড়ীকে আসামী করে ওসমানীনগর থানায় সংশ্লিষ্ট আইনে মামালা দায়ের করেন। মামলা নং৫। ওই মামলায় রবিবার দুপুরে স্বামী আরশ আলী ও শাশুড়ী মিনারা বেগমকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত শরিফা বেগম (২০) নবীগঞ্জ উপজেলার পুটিয়া গ্রামের শাকিম উল্যার ছোট মেয়ে। তবে স্বামী ও শাশুড়ী দাবি, পরিবারের সবার অজান্তে শরিফা আত্মহত্যা করে মৃত্যু বরন করেছে। যদিও শনিবার দুপুরে তার স্বামীর বাড়ির নিজ ঘরের বিছানা থেকে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহতের শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্বজনরা।
ওসমানীগর থানার ওসি শ্যামল বনিক বলেন, এই ঘটনায় নিহতের ভাই সংশ্লিষ্ট আইনে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আমামীদের গ্রেফতার দেখিয়ে আতালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
পুরস্কার ঘোষণার পরও অধরা সুমেলের খুনি
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার চাঞ্চল্যকর স্কুলছাত্র হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাইফুল আলম ওরফে লন্ডনি সাইফুলের কোন সন্ধান পাচ্ছে না পুলিশ। ঘটনার ১০ দিন অতিবাহিত হলেও, ধূর্ত এই আসামির অবস্থান শনাক্ত করতে হিমশিম খাচ্ছে আইনশৃংখলা বাহিনী। তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণার পরও, এখনও তার সন্ধান দিতে পারেনি কেউ।
পুলিশ সূত্র জানায়, সে খুবই ধূর্ত প্রকৃতির লোক।
ঘটনার পর থেকেই বন্ধ আছে সেলফোন। একটি বারও তা সচল করেনি। এছাড়া অবস্থানও পাল্টায় ঘন ঘন। এ জন্যে তার অবস্থান শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তবে, ঘটনার দিন সন্ধ্যায়, সে স্বেচ্ছায় আত্মমসর্পণে রাজি হয়েছিল। পরে সিলেট শহরে বিশ্বনাথের জনৈক আইনজীবীর বাসায় গিয়ে তার পরামর্শে সে আত্মগোপনে চলে যায়। এরপর থেকে লাপাত্তা সে। তবে আজ হোক কাল হোক পুলিশের খাঁচায় আটকাবে সাইফুল।
হত্যাকান্ডসহ সম্প্রতি আরও একাধিক ঘটনায় আলোচিত সাইফুলকে ধরিয়ে দিতে প্রবাসীরা ৫ লক্ষ্য টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেন।
গত ১লা মে প্রতিপক্ষের সাথে সংঘর্ষকালে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চৈতননগর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে ও স্থানীয় শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমেলকে হত্যা করে সে। সাইফুল একই গ্রামের মৃত আফতাব মিয়ার ছেলে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, প্রকৃত মৎস্যজীবিদের বঞ্চিত করে উপজেলার সব’চে বড় জলমহাল ‘চাউলধনী হাওর’ ইজারা নিয়ে আলোচনায় আসেন উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চৈতননগর গ্রামের মৃত আফতাব মিয়ার ছেলে সাইফুল আলম ওরফে লন্ডনি সাইফুল। হাওর ইস্যু নিয়ে জন্ম দেন একাধিক আলোচিত ঘটনার।
তার অত্যাচার ও অস্ত্রবাজিতে অসহায় হয়ে পড়েন স্থানীয় কৃষক ও মৎস্যজীবিরা। হাওর পাড়ের মানুষের কাছে ‘মূর্তিমান জলদস্যু’র ন্যায় আর্বিভাব ঘটে তার। সুবিধাভোগী প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় নিজ গ্রামে চৈতননগরে বিস্তার করেন একক আধিপত্য। গড়ে তোলেন নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী। তার পত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে ঘটে একের পর সংষর্ঘ, দখল ও সীমানা প্রচীর গুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের অফিসার ইন-চার্জ শামীম মূসা, প্রাথমিক তদন্তে সাইফুলই স্কুলছাত্রকে গুলি করে হত্যার কথা উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেন, তাকে গ্রেফতারে বিশ্বনাথ থানা ও সিলেট জেলা পুলিশ কাজ করছে বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথ থানার নতুন ওসি আতাউর
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথ থানা পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) শামীম মূসাকে বদলি করা হয়েছে। গতকাল রবিবার (৯ মে) দুপুরে সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম’র কার্যালয় থেকে তার বদলির আদেশ বার্তা বিশ্বনাথ থানায় পাঠানো হয়। শামীম মূসাকে সিলেট রেঞ্জে পদায়ন করা হয়েছে। অন্যদিকে, তার স্থলে বিশ্বনাথ থানার নতুন পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বালাগঞ্জ থানা পুলিশ পরিদর্শক গাজী আতাউর রহমান।
সম্প্রতি উপজেলার চাউলধনী হাওর এলাকার ‘জলদস্যু’খ্যাত সাইফুল আলমের গুলিতে স্কলছাত্র সুমেল নিহত হওয়ার ঘটনায় ওসি শামীম মূসাকে নিয়ে বির্তক দেখা দেয়। অভিযোগ ওঠে, অভিযুক্ত সাইফুল আলমের সাথে তার সখ্যতার। এই সখ্যতার কারণেই বেপরোয়া হয়ে সংঘর্ষকালে সাইফুল স্কুলছাত্র সুমেলকে গুলি করে হত্যা করে বলে অভিযোগ করেছে ‘চাউলধনী হাওর রক্ষা কমিটি’ ও নিহত স্কুল ছাত্রের পরিবার। এ বিষয়টি নিয়ে যখন আলোচনা-সমালোচনা চলছে, ঠিক সে সময়ই বদলি করা হলো বিশ্বনাথ থানার ওসি শামীম মূসাকে।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের বিদায়ী পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) শামীম মূসা ‘এটি স্বাভাবিক বদলি প্রক্রিয়া’ উল্লেখ করে সাংবাদিকদের বলেন, সাইফুলের সাথে সখ্যতার প্রশ্নই ওঠেনা। তার বিপক্ষে এলাকার কৃষি ও কৃষকের বৃহৎ স্বার্থে হাওরের লিজ বাতিল ও মাটি খনন বন্ধের আবেদনও করেছি আমি। হাওর নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার সমাধানে একাধিকবার চেষ্ঠা করেছি। কিন্তু ‘হাওর রক্ষা আন্দোলন কমিটি’র কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এটিকে নিজেদের স্বার্থে জিইয়ে রেখেছে।