শনিবার ● ২২ মে ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » স্বামী বিদেশ স্ত্রী অন্তসত্বা : আসামি গ্রেপ্তারের দাবী
স্বামী বিদেশ স্ত্রী অন্তসত্বা : আসামি গ্রেপ্তারের দাবী
মো. জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: স্বামী বিদেশ স্ত্রী অন্তসত্বা, এলাকা জুড়ে চলছে তোলপাড়। ৬৫ বছরের ইউপি সদস্যের সাথে প্রবাসীর স্ত্রীর অনৈতিক সম্পর্কে ৪ মাসের গর্ভবতী গৃহবধু। এঘটনা মিমাংশা ও ধামাচাপা দিতে ভিকটিমের আত্মিয় স্বজনকে সাধুহাটি ও দশমাইল এলাকার প্রভাবশালী কর্তৃক তাদের টানাহ্যাচড়া করে নানাবিধ হয়রানী করা হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। ভিকটিমের এছাড়া ভুক্তভোগীর আত্মিয় স্বজনের উপর চলছে প্রভাবশালীদের হুমকি ধামকি আর সালিশে চলছে ব্যাপক চাপ প্রয়োগ। তবে এঘটনায় এলাকার সুশিল সমাজ ইদ্রিসুল আলম (৬৫) মেম্বরকে গ্রেপ্তারের জোর দাবী তুলেছেন। গ্রেপ্তারের পর সুষ্ট তদন্তের মাধ্যমে ইদ্রিসুল আলম মেম্বরের বিচার না হলে এধরনের ঘটনা একের পর এক বাড়তে ধাকবে । এতে সমাজে বিরুপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে মর্মে সুশিল সমাজের দাবী। জানা গেছে ঝিনাইদহের সাধুহাটি ইউনিয়ের বোড়াই (মাঝপাড়া) গ্রামের সৌদি আরব প্রবাসি রাশেদুল আলমের স্ত্রী’র সাথে একই গ্রামের আব্দুল বারীর ছেলে ইদ্রিসুল আলম মেম্বরের অবৈধ সম্পর্কে ৪ মাসের অন্তসত্বা রাশেদুলের স্ত্রী। এঘটনা জানাজানি হলে এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়! সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটি ইউনিয়ের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যে আব্দুল বারীর ছেলে ইদ্রিসুল আলম (৬৫) মেম্বরের সাথে সৌদি আরব প্রবাসি রাশেদুলের স্ত্রী’র সাথে দীর্ঘ দিনের অবৈধ সম্পর্কের কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়েছে ভুক্তভোগী সেই নারী। সাধুহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য তিনি। ইদ্রিসুল আলম সাধুহাটি ইউনিয়নের বোড়াই গ্রামের আঃ বারী বিশ্বাসের ছেলে। সংসারে তার ২ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে। জানা গেছে, ১৭ বছর আগে বোড়া গ্রামের মাছ পাড়ায় বিয়ে হয় ঐ গৃহবধূর। তার সংসারে ১৫ ও ১২ বছর বয়সী ২ ছেলে রয়েছে। ৪ বছর আগে সৌদি আরবে কাজের সন্ধানে যায় গৃহবধূর স্বামী রাশিদুল আলম। গৃহবধূর চাচাতো দেবর সুজন সাংবাদিকদের জানান, তার ভাই বিদেশ যাওয়ার পরে একটি সুই কেনার প্রয়োজন হলেও গৃহবধূ ইদ্রিস মেম্বারকে দিয়ে করাতেন। পরিবারের সকল সিদ্ধান্ত-কেনা কাটা সব তিনি করতেন ইদ্রিম মেম্বর। রাত বিরাত নেই ইদ্রিস মেম্বরের অবাধ যাতায়াত ছিল প্রবাসী রাশেদুলের বাড়িতে। গত কয়েকদিন আগে রাশেদুলের স্ত্রীর পেটের অস্বাভাবিক উচ্চতা লক্ষ্য করে জেলা সদরের ডাকবাংলা বাজারের আল্ জাজিরা ডায়গনস্টিক সেন্টারের মান্নান ডাক্তারের কাছে যান। গ্রামের অনেকেই বলেছিল টিউমার হতে পারে। কিন্তু আল্ট্রাসনো করার পরে দেখা যায় ঐ গৃহবধূ ৪ মাসের গর্ভবতী। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে মেম্বার ইদ্রিসুল আলম পরীক্ষা করাতে সেই গৃহবধুকে ৫০০ টাকাও দিয়েছিলেন। ৪ বছর স্বামী বিদেশ স্ত্রী গর্ভবতী হওয়ার খবরে পরিবারে ও গ্রামে নানা কানাঘুষা চলছে। পরিবারে শুরু হয়েছে অশান্তি। এর মধ্যে খবর পাওয়া গেছে ঐগৃহবধূ আল্ জাজিরা ডায়গনস্টিক সেন্টারের মান্নান ডাক্তারের নিকটে গর্ভপাত করার চেষ্টাও করেন। তবে মান্নান ডাক্তার গর্ভপাত করাতে তার স্বামী রাশেদুল আলমের অনুমতি লাগবে বলে সাফ জানিয়ে দেন। একথা শুনে গৃহবধু আত্মগোপনে রয়েছেন। এদিকে ইদ্রিসুল আলমের বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে সাংবাদিকদের টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিতে চেষ্টা করেন। এবিষয়ে জানতে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও সাধুহাটি ইউপি চেয়ারম্যান কাজী নাজীর উদ্দিন তার মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
সরকারের বিভিন্ন বরাদ্দ বিতরণে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুরে বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, মাতৃকালীন ভাতা, ভিজিএফ সহ অতিদরিদ্রদের জন্য দেওয়া সরকারের বিভিন্ন বরাদ্দ বিতরণে ঘুষ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ভারতীয় সীমান্তঘেষা এ উপজেলার স্বরুপপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদুল মোমিন ও তার তিন সহযোগী আক্তার হোসেন, রেজাউল ইসলাম বুদো এবং সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। এরমধ্যে আক্তার হোসেন নিজেকে ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বলে দাবি করেন। স্বরুপপুর ইউনিয়নের চাপাতলা ও হানিফপুর গ্রাম নিয়ে ৬নং ওয়ার্ড। তাদের অভিযোগ সরকারের দেওয়া বিভিন্ন বরাদ্দের কার্ড করে দেওয়ার নাম করে ৫০০ থেকে দশ হাজার টাকা করে ঘুষ নিয়েছেন। কার্ড করে দিতে না পারায় চাপের মুখে অনেকের টাকা ফেরতও দিয়েছেন তারা। তবে অভিযুক্তরা এসব অস্বিকার করেছেন। চাপাতলা গ্রামের জহির হোসেন জানান, প্রায় ৫ মাস আগে ১০ টাকা মূল্যের কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে সাইফুল ইসলাম ৭০০ টাকা নেয় কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন কার্ড করে দিতে পারেনি। একই গ্রামের বসির হোসেন নামের এক যুবক জানান, আমার স্ত্রী আখি তারা প্রথম সন্তানের মা হয়েছে। ৬ থেকে ৭ মাস আগে আমার স্ত্রীর মাতৃকালীন ভাতা করে দেবেন বলে আক্তার হোসেন আমার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নেন। কিন্তু কার্ড করে দিতে পারেননি। পরে স্থানীয়দের কাছে বলে অনেক চাপাচাপি করার পর টাকা ফেরত দিয়েছে। এখন আমাকে মারার জন্য হুমকি দিচ্ছে। চাপাতলা গ্রামের আখের আলীর কাছ থেকে টিন দেওয়ার নাম করে ৫০০ টাকা নিয়েছিল কিন্তু আজও টিন পায়নি এই বৃদ্ধ। একই গ্রামের বৃদ্ধা রাহিমা বেগম ও হাসু বুড়ির কাছ থেকে টিন দেওয়ার নাম করে ৪০০ টাকা নেয় কিন্তু ৬ মাস পার হয়ে গেলেও এখনো টিন পায়নি তারা। অভিযুক্ত আক্তার হোসেন জানান, আমি দির্ঘদিন ঢাকায় ছিলাম। এখন বাড়িতে এসে সীমান্তের গুড়দাহ বাজারে ব্যবসা করি। আমার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। তবে কথা শেষ হওয়ার আগে নিউজটি প্রকাশ না করার জন্য এ প্রতিবেদককে অনুরোধ করেন অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা আক্তার। হানিফপুর গ্রামের মশিউর রহমান জানান, চার থেকে পাঁচ মাস আগে আমার একটি ঘর করে দেওয়ার জন্য মেম্বার আবদুল মোমিন ২০ হাজার টাকা নেয় কিন্তু ঘর করে দিতে না পারায় এক সপ্তাহ আগে সে তার টাকা ফেরত দিয়েছে। একই গ্রামের আসমা নামে এক গৃহবধূও কাছ থেকে ঘর করে দেওয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা নিয়ে ঘর করে দিতে পারেনি। এখন টাকা চাইলে টাকাও দিচ্ছে না। ইউপি মেম্বার আবদুল মোমিন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বিকার করে জানান, আমার বিরুদ্ধে একটি পক্ষ কুৎসা রটাচ্ছে। মেম্বার মোমিন আরো জানান, হানিফপুর ও চাপাতলা নিয়ে ৬নং ওয়ার্ড। আমার বাড়ি হানিফপুর। আক্তার ও সাইফুলের বাড়িচাপাতলা। যে কারণে ওই গ্রামের সরকারের বিভিন্ন ভাতাভোগিদের কার্ড তাদের কাছে দিলে তারা বিতরণ করেন। এখন কার্ড বিতরণের সময় তারা কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকলে সেটা তাদের ব্যপার। স্বরুপপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান জানান, সরকারের দেওয়া অতিদরিদ্রদের দেওয়া ভাতা বা চাউলের কার্ড বিতরণের জন কেউ টাকা নিয়েছে কিনা আমার জানা নেই। তবে কেউ যদি টাকা নিয়ে থাকে অভিযোগ পেলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।