বুধবার ● ২৬ মে ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ইয়াসের তোড়ে মোরেলগঞ্জে ভেসে গেল শিশু : ৩ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার
ইয়াসের তোড়ে মোরেলগঞ্জে ভেসে গেল শিশু : ৩ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের তোড়ে ভাসিয়ে নেয় জিনিয়া নামের ৪ বছরের এক শিশুকে। ঘটনার তিন ঘণ্টা পর পানির তোড় কমলে বাড়ির পাসের ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয় জিনিয়াকে।
খাউলিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামে আজ বুধবার সকাল ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। জিনিয়া ওই গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক কালাম গাজীর মেয়ে।
জানা গেছে, ঘটনার সময় বাড়ির মধ্যে পানি উঠতে দেখে গরু বাঁচানোর জন্য ছুটে যান কালাম গাজী ও তার স্ত্রী লিজা বেগম। কিছুক্ষণ পরে ঘরে ফিরে জিনিয়াকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাকে পাওয়া যায় ঘরের পাশে পানির মধ্যে। দ্রত হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত ডা. কামাল হোসেন শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ বিষয়ে খাউলিয়া ইউনয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘অতিরিক্ত পানি উঠে যাওয়ায় শিশুটি পানিতে ডুবে মারা যায়।’
বিষয়টি সম্পর্কে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘শিশুটি জোয়ারের পানিতে ডুবে মারা গেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।’
এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘শিশুটি বন্যার পানিতে মারা গেছে কিনা তা নিশ্চিত হতে আরও সময় লাগবে।
মোরেলগঞ্জে পানি বৃদ্ধি এমপির আশ্রয় কেন্দ্র পরিদর্শন
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস’র প্রভাবে নদী ও খালের পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে পৌরসভা সদর বাজার, হাসপাতাল, উপজেলা পরিষদ, খাদ্যগুদাম এলাকাসহ বহু জনগুরুত্বফর্ণ এলাকা ও স্থাপনা প্লাবিত হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছে শতশত পরিবার। সদর ইউনিয়নের গাবতলা ও কাঠালতলা, নিশানবাড়িয়া গ্রামের ৫ শতাধীক মানুষ নিকটবর্তী শাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য অধীক ঝুকিপূর্ণ এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে জোয়ার শুরু হলে পানগুছি নদীতে পানি বাড়তে থাকে। বেলা ১টার দিকে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ফুট পানি বেড়ে যায়। পানগুছি নদীর তীরবর্তী খাউলিয়া, কুমারখালী, সন্নাসী, গাবতলা, কাঠালতলা, সানকিভাঙ্গা, বদনী ভাঙ্গা, বারইখালী, শ্রেণিখালী, ফুলহাতা, বহরবুনিয়া, ঘসিয়াখালী গ্রাম সকালের জোয়ারে প্লাবিত হয়েছে। বিকেল থেকে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন, উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড. শাহ্-ই-আলম বাচ্চু ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন অধীক ঝুকিপূর্ণ এলাকার আশ্রয়কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেছেন।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ বৈদ্য বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে পূর্ণ জোয়ারে নদ-নদীর পানি বিপদ সীমা অতিক্রম করেছে। সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেষ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সিফাত আল মারুফ বলেন, মোরেলগঞ্জে স্বাভাবিকের চেয়ে ৫-৬ ফুট পানি বেড়েছে। ঝড় হলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।
এ সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় সবধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের জন্য ৮৩টি আশ্রয় কেন্দ্র্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।