শনিবার ● ২৯ মে ২০২১
প্রথম পাতা » অপরাধ » পুলিশের উপস্থিতিতেই রক্ত পরিস্কার করে খুনি সাইফুল
পুলিশের উপস্থিতিতেই রক্ত পরিস্কার করে খুনি সাইফুল
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার চৈতননগর গ্রামের সাইফুল বাহিনী ও নজির গংদের সংঘর্ষের পরপরই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। এর আগেই সাইফুলের গুলিতে প্রাণ হারায় স্কুলছাত্র সুমেল (১৮)। নিজ গুলিতে প্রতিপক্ষের সুমেলকে হত্যার পর, তার লোক গুলিবিদ্ধ হয়েছে জানিয়ে, পুলিশকে নিজেই ফোন করে সাইফুল। তখন তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন, এ ঘটনায় সদ্য ক্লোজ হওয়া থানা পুলিশের এসআই ফজলুল হক ও এসআই মোয়াজ্জেম’র নেতৃত্বে ক’জন পুলিশ সদস্য।
তারা প্রথমে সাইফুল ও তার বাহিনীর সাথে সাক্ষাত করে। এসময় এসআই ফজলু ও মোয়াজ্জেম’র উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলের রক্ত কোদাল দিয়ে নিজেই পরিস্কার করেন সাইফুল। এরপর সে অনেকটা স্বাভাবিক ভাবেই অবস্থান নেয় বাড়িতে। তখন সে হাতের মুঠোয় থাকলেও, অদৃশ্য কারণে তাকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
আজ শুক্রবার (২৮ মে) সকালে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গেলে প্রত্যক্ষদর্শীরা এসব তথ্য জানান।
গ্রামের ইন্তাজ আলী ও ইসলাম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যেকটা ঘটনার আগে এলাকায় পয়সা দিয়ে পুলিশ এনে সুবিধাজনক স্থানে রাখে সাইফুল। নিজে ঘটনা ঘটিয়ে উল্টো আমাদের পুলিশ দিয়ে হয়রানি করে। ঘটনার দিন একই ভাবে থানা থেকে পুলিশ এনে হাওরে রাখে সে।
পুলিশের একটি গ্রুপ ঘটনাস্থলে এসেই আমাদের লোকজনকে চেষ্টা করে আটকানোর। অন্য গ্রুপ (এসআই ফজলু ও মোয়াজ্জেম) খুনি সাইফুলের সাথে মিলিত হয়। এসময় খুনের আলামত মুছে দিতে, তাদের উপস্থিতিতে ঘটনাস্থলের রক্ত পরিস্কার করে সে। তাকে অভয় দিয়ে, নিরাপদে বাড়িতে রেখে ফের নজির পক্ষের কাছে আসে ওই দুই দারোগা। তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় পালিয়ে যায় খুনি সাইফুল।
এ দিকে হত্যাকাণ্ডের প্রায় এক মাসেও খুনি গ্রেফতার না হওয়ায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে কথা হলে, সদ্য ক্লোজ হয়ে সিলেট পুলিশ লাইনে থাকা এসআই ফজলুল হক অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি নিজে রক্ত দেখিনি। পরিস্কারের প্রশ্নই ওঠে না। সাইফুল আমাদেরকে মিথ্যে তথ্য দিয়েছিল। তার নিজের লোক গুলিবিদ্ধ জেনে ওসি’র নির্দেশে আমি ও এসআই মোয়াজ্জেম মোটরসাইকেলযোগে তার কাছে যাই। তার সাথে কথা হয়। পরে নজির পক্ষের কাছে গিয়ে জানতে পারি সাইফুলই গুলি করেছে। এসময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশের প্রত্যেক টিমের সমন্বয়ে তাকে গ্রেফতার করতে গেলে নদী সাঁতরে পালিয়ে যায় সে।
প্রসঙ্গত, গত ১লা মে (শনিবার) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের চৈতননগর গ্রামের রাস্তা নিয়ে, হাওর পাড়ের ত্রাস ‘জলদস্যু’ সাইফুল বাহিনী ও গ্রামের নজির গংদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় সাইফুলের গুলিতে নিহত হন স্থানীয় স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র সুমেল আহমদ (১৮)। গুলিবিদ্ধ হন তার পিতা মানিক মিয়াও।