বৃহস্পতিবার ● ৩ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » পাঁচ’শ নারী পাচারকারী “বস” রাফি’র পরিচয়
পাঁচ’শ নারী পাচারকারী “বস” রাফি’র পরিচয়
জাহিদুর রহেমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ছোট বেলায় তিন ছেলের মধ্যে আশরাফুল ওরফে রাফিকে হাফেজ বানিয়ে দিনের খেতমত করার ইচ্ছা ছিল পিতা আইনুদ্দীন মন্ডলের। কিন্তু সে আশা পুর্ণ হয়নি। মাদ্রাসা পালিয়ে গান, বাজনা, মিউজিক ভিডিও এবং কৌতুক নিয়ে ডুবে থাকতো সে। অভাব অনটনের সংসারে বাড়ি ছেড়ে ঢাকায় কিছুদিন গার্মেন্টেসে কাজ করে আশরাফুল। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে বিয়ে করে ঝাউদিয়া কবিরপুর গ্রামে। দারিদ্রতার কারণে প্রথম স্ত্রী তালাক দিয়ে চলে যায়। হুট করে নিখোঁজ হয় আশরাফুল। এক বছরের বেশি সময় তার কোন সন্ধান ছিল না। পরিবারের লোকজন ধরেই নিয়েছিল আশরাফুল হয়তো আর জীবিত নেই। এক বছর পর বাড়িতে ফোন করে জানায় সে ভারতে আছে। বেশ ভালো আছে। পুরানো গাড়ির ব্যবসা করছে। কিন্তু তার নারী পাচারের কথা পরিবারের কেও জানতো না। এ পর্যন্ত ৫০০ নারী পাচার করেছে বস রাফি। এই ঘৃন্য পথই বদলে দেয় রাফির জীবন ও আর্থিক অবস্থা। টিকটকারদের বস ও নারী পাচারকারী চক্রের হোতা শৈলকুপা উপজেলার নাদপাড়া গ্রামের আশরাফুল ইসলাম রাফি হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান। নারী পাচার করে আশরাফুলের এখন মাঠে ৮/১০ বিঘা জমি। হাতে নগদ টাকা। গ্রামে ফ্লাট বাড়ি। ঘরে এসি ও ওয়াশিং মেশিন। চড়ে বেড়াতো ৩ লাখ টাকার মটরসাইকেলে। সারুটিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য আশরাফুলের প্রতিবেশি ওয়াজেদ আলী মেম্বর জানান, গ্রামের একেবারেই হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান আশরাফুল মন্ডল ওরফে রাফি। এখনো তার এক ভাই গোলাম মোস্তফা ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। আরেক ভাই মাসুদও নিরুদ্দেশ। গ্রামবাসি ধারণা সেও ভারতের বেঙ্গালুরে আস্তানা গেড়েছে। ইউপি মেম্বর ওয়াজেদ আলীর ভাষ্যমতে, রাতারাতি রাফির আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হওয়ার রহস্য গ্রামের কেও জানতো না। পত্রিকায় খবর পড়ে এখন জানতে পেরেছে রাফি নারী পাচারসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে আশরাফুল মন্ডল ওরফে রাফি কোটি টাকার সম্পদক গড়ে তুলেছে। ঈদের আগে বাড়ি এসে রাফি ১০/১৫ বিঘা জমি কেনার জন্য দালাল নিয়োগ করে। জমি কেনার জন্য কথাবার্তাও চলছিল। কিন্তু শৈলকুপা উপজেলা প্রশাসন ভারত থেকে আসার কারণে রাফিকে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যায়। গ্রামবাসির ভাষ্যমতে ৫ মাস আগেও রাফি এক ঝাক সুন্দরী মেয়ে গ্রামে নিয়ে এসে মহড়া দেয়। তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে তা কেও জানে না। রাফির বৃদ্ধ পিতা আইনুদ্দীন মন্ডল জানান, ৮ বছর আগে তার ছেলে পাড়ি জমিয়েছিল ভারতের বেঙ্গালুরুতে। তারপর সেখানে কি করতো তা ছিল অজানা। রাফি তার দ্বিতীয় স্ত্রী ও বৃদ্ধ পিতা-মাতাকে ভারতেও নিয়ে গেছে। র্যাবের কাছে রাফি জানিয়েছে বেঙ্গালুরুতে গিয়েই আয়ত্ত করে নেয় তামিল ভাষা। গাড়ি চালানোর সুবাদে শহরের আনাচে-কানাচে তার চেনা জানা হয়। একসময় কাজ নেয় বেঙ্গালুরের একটি রিসোর্টে। সেখানে থাকাকালীন সময়ে বেঙ্গালুরের অনেক পতিতালয়ের দালালের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারপর থেকে সে নিজেও জড়িয়ে পড়ে দালালিতে। একপর্যায়ে বাংলাদেশে তার ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে শুরু করে নারী পাচার। মডেলিংয়ে সুযোগ, ভালো চাকরি দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দেশের নি¤œœ ও মধ্যবিত্ত ঘরের তরুণীদের টার্গেট করে পাচার করতো ভারতে। আবার ভারত থেকে কিছু কিছু তরুণীকে পাচার করতো দুবাইসহ আরো কিছু পর্যটন ভিত্তিক দেশে। এভাবে মাত্র আট বছরেই আন্তর্জাতিক পাচার চক্রে নাম লেখায় বস রাফি। এই সময়ে রাফি প্রায় পাঁচ শতাধিক তরুণীকে পাচার করেছে। রাফি ও তার সহযোগীরা র্যাব’র কাছে গ্রেপ্তারের পর চাঞ্চল্যকর এ সব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। র্যাব জানায়, সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের রাজধানী বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশের এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনার ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ রিফাজুল ইসলাম বাবু ওরফে টিকটক হৃদয় বাবু, সাগর, মোহাম্মদ বাবা শেখ, হাকিল ও দুই নারীসহ মোট ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনার সূত্র ধরেই আশরাফুল মন্ডল ওরফে বস রাফি ও তার সহযোগী ম্যাডাম সাহিদা (৪৬), মোঃ ইসমাইল সরদার (৩৮) ও মো. আব্দুর রহমান শেখকে (২৬) গ্রেপ্তার করে র্যাব। র্যাব জানায়, চক্রটি বিভিন্ন প্রতারণামূলক ফাঁদে ফেলে এবং প্রলোভন দেখিয়ে নারী ও তরুণীদের পার্শ্ববর্তী দেশে পাচার করতো। এই পাচার কাজের সঙ্গে দেশি-বিদেশিসহ প্রায় ৫০ জন এই চক্রের সঙ্গে জড়িত। চক্রের মূলহোতা হচ্ছে বস রাফি। গ্রেপ্তারকৃত অন্যান্য সদস্যরা তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাত্র। এই চক্রটি সন্দরীদের প্রলোভন দেখিয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবনে আকৃষ্ট ও অভ্যস্ত করে তুলতোা। পরবর্তীতে তাদেরকে পার্শ্ববর্তী দেশ বা উন্নত দেশের বিভিন্ন মার্কেট, সুপারশপ, বিউটি পার্লারসহ বিভিন্ন ধরণের ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে যৌনবৃত্তিতে নিয়োজিত করার উদ্দেশ্যেই ভারতে পাচার করতো। সেখানে পাচারের পর তাদেরকে বিভিন্ন নেশা জাতীয় ও মাদকদ্রব্য সেবন করিয়ে জোরপূর্বক অশালীন ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করতো যাতে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য হয়। র্যাব জানায়, তরুণীদের বৈধ বা অবৈধ উভয় পথেই সীমান্ত অতিক্রম করানো হতো। তারা কয়েকটি ধাপে পাচারের কাজটি করতো। প্রথমত: ভুক্তভোগীদের তারা দেশের বিভিন্ন স্থান হতে সীমান্তবর্তী জেলা যেমন, যশোর, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ নিয়ে আসতো। তারপর তাদরেকে সীমান্তবর্তী বিভিন্ন সেফ হাউজে রাখা হতো। সেখান থেকে সুবিধাজনক সময়ে লাইন ম্যানের মাধ্যমে অরক্ষিত এলাকা দিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করাতো। পরে পাশ্ববর্তী দেশের এজেন্টরা তাদেরকে রিসিভ করে সীমান্ত নিকটবর্তী সেফ হাউজে রাখতো। সুবিধাজনক সময়ে কলকাতার সেফ হাউজে পাঠাতো। এ ভাবেই পাচারকৃত তরুনীরা বেঙ্গালুরু তে পৌছে যেত। অন্ধকার জগতের লাল নীল আলোয় তরুনীদের যৌন কাজে বাধ্য করা হতো। এ ভাবেই শৈলকুপার হতদরদ্রি ঘরের যুবক আশরাফুল মন্ডল এক সময় হয়ে ওঠে বস রাফি।
অবৈধ পারাপারের সময় তিন নারীসহ আটক ৬
ঝিনাইদহ :: অবৈধ ভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের সময় তিন নারীসহ ৬ জনকে আটক করেছে মহেশপুর ৫৮ বিজিবি। বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সলেমানপুর গ্রাম ও চুয়াডাঙ্গা জেলার দর্শনা তেতুলিয়া বটতলা এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলার আমলাপাড়া গ্রামের মৃত সামসুল শেখ এর মেয়ে মিম আক্তার (২০), খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার গাজির হাট মহিশদিয়া গ্রামের মৃত হানিফ সরকারের মেয়ে রহিমা খাতুন (২২) ও অবৈধভাবে সীমান্ত পারাপারে সহায়তাকারী দালাল চুয়াডাংগা জেলার জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ গ্রামের মৃত নুর মোহাম্মদের ছেলে মোমিন (৪৫), সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর উপজেলার দারিয়াপুর গ্রামের হরিদাস মদকের ছেলে যতন মদক, স্ত্রী কমলা মদক ও ছেলে লিখন মদক। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান বৃহস্পতিবার বিকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান। বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় অবৈধভাবে ভারত থেকে ২ নারী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। অন্যদিকে বাংলাদেশ তেকে ভারতে প্রবেশের সময় ৩ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা করে মহেশপুর ও দর্শনা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
মানবপাচারকারী চক্রের আরেক সদস্য গ্রেপ্তার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে খালেদ (৩৬) নামে মানব পাচারকারী চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে সদর থানা পুলিশ। বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার রাউতাইল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে সদর উপজেলার রামনগর গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে। বাদি ও মামলার বিবরণে জানা যায়, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া গ্রামের প্রবাসী শাহিনুর রহমানের স্ত্রী তৃষ্ণা বেগমকে তার পরিবারের কাউকে না জানিয়ে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি বিদেশে কাজের কথা বলে দুবাই পাঠায় মানব পাচারকারী এক চক্র। দুবাই প্রবেশের পর থেকে তৃষ্ণা বেগমের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে বিষয়টা জানাজানি হয়। এ ঘটনায় তৃষ্ণা বেগমের কন্যা শ্যামলী খাতুন বাদি হয়ে নাসির উদ্দিন (৪৮) ও পটল (৪৫) এর নাম উল্লেখ করে ১লা ফেব্রুয়ারি মানব পাচার পিটিশন ৩/২১ এ ঝিনাইদহ জেলা ও দায়রা জজ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে বিজ্ঞ আদালত ঝিনাইদহ থানার অফিসার ইনচার্জকে এজাহার হিসেবে গণ্য করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। ৬ এপ্রিল সদর থানায় মামলাটি রুজু হয়। যার নং ১৬। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিজানুর রহমান জানান, এ ঘটনায় থানা পুলিশ তদন্ত করে নাসির উদ্দিনের স্বীকারোক্তি মোতাবেক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে খালেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। উল্লেখ্য, মামলাটি রুজু হওয়ার পর এজাহার নামীয় আসামী নাসির উদ্দিন (৪৮) কে ইতিপূর্বে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে সদর উপজেলার কুমড়াবাড়িয়া ইউনিয়নের ধুপাবিলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের মৃত কলিম উদ্দিনের ছেলে।
মহেশপুরে লকডাউন ঘোষনা
ঝিনাইদহ :: করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলা সীমান্তবর্তী বাওলী গ্রাম লকডাউন করেছে জেলা প্রশাসন। এছাড়াও উপজেলার সীমান্তবর্তী ৬টি ইউনিয়নে চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির বিশেষ সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মজিবুর রহমান। তিনি জানান, সীমান্ত এলাকায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে গ্রামটিতে ৭ দিনের লকডাউন ও সীমান্তবর্তী স্বরূপপুর, নেপা, কাজীরবেড়, শ্যামকুড়, বাঁশবাড়িয়া ও যাদবপুর ইউনিয়নে রাতে চলাচলে ১৫ দিনের জন্য বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ইউনিয়ন গুলোতে সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল পর্যন্ত মানুষ চলাচল ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। বিধি নিষেধ অমান্যকারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহে পৃথক দুটি দূর্ঘটনায় দুজন নিহত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে পৃথক দুটি দূর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছে। মোটরসাইকেল আরোহী সাগর আহমেদ (২৩) এর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। সে কোটচাদপুর কুশনা ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামের আলমগীর হোসেন খোকনের ছেলে। সে বৃটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো কোম্পানীতে এস.আর পদে কর্মরত ছিল।মঙ্গলবার সন্ধায় শহরের মেইন বাসষ্টান্ড এলাকায় একটি ইজিবাইকের সঙ্গে মোটরসাইকেল আরোহী সাগরের সংঘর্ষ হয়। তাকে উন্নত চিকিতসার জন্য ঢাকাতে ভর্তির করে। পরে সে মারা যায়। অপরদিকে হরিনাকুন্ডুতে বাইসাইকেল চালানো শিখতে গিয়ে আম গাছের সাথে ধাক্কায় সুরাইয়া (১০) নামে এক শিশুকন্যা নিহত হয়েছে। বুধবার বিকালে উপজেলার রঘুনাথপুর ইউনিয়নের ভবিতপুর গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নিহত সুরাইয়া ওই গ্রামের ফুলছদ্দিন মিয়ার কন্যা, সে ভবিতপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীতে অধ্যায়নরত ছিলো।
ঝিনাইদহে অবৈধভাবে সড়কের উপর হাটবাজার
ঝিনাইদহ :: কালীগঞ্জে মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়কের পাশে ও উপরে অবৈধভাবে বাঁশের তৈরি পণ্যের হাট ,ধানের হাট, কলার হাট, গুড়ের হাট ও কাঁচা বাজারের হাট বসছে। যেখানে এসব পণ্য রাখা হয়েছে সেখানেই যানবাহন থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করানো হচ্ছে। কালীগঞ্জ মহাসড়কের ওপর নিমতলা ষ্টান্ডে বাঁশের তৈরি পণ্যের হাট বসেছে। কালীগঞ্জ ঝিনাইদহ মহাসড়কের ধার ঘেঁষে ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে সপ্তাহে দুদিন হাট বসছে। কালীগঞ্জ নিমতলা, মাহাতাব উদ্দিন কলেজ মোড়ে, বিষয়খালি, তেতুলতলা, কোটচাঁদপুর সড়কের পাতবিলা, লাউতলা,তালেশ^র যশোর সড়কের বৈশাখি তেল পাম্প, চিনি কলের সামনে, দুলাল মুন্দিয়া, কাশিপুর রেলগেটসহ বিভিন্ন স্থানে হাটবাজার বসছে। এতে ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করলেও হাট ইজারাদার নিজ স্বার্থে কাজটি করে চলেছেন। প্রশাসন ও নিচ্ছে না জোরালো কোনো পদক্ষেপ। সড়কের দুই পাশে গড়ে উঠেছে এ হাটবাজার। মহাসড়কে চলাচলকারী বাসগুলো বাসস্ট্যান্ডের যে স্থানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানোর কথা সেখানে এখন আর বাস দাড়াতে পারছে না। কারণ, ওই জায়গায় এখন বিভিন্ন ফলের হাট বসছে। ফলে মহাসড়কেই গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করানো হচ্ছে। ফলে হাটে আসা লোকজনের সঙ্গে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে বাসে ওঠা-নামা করা যাত্রীরা। এ ভোগান্তির সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ঝুঁকিও। মহাসড়কের যে স্থানে গাড়ি দাঁড় করানোর কথা, সেখানে পণ্য রেখে ব্যবসা চলছে বছরের পর বছর। এখানে রাস্তার ধার ঘেঁষে ব্যবসা করতে তাঁরা কখনো কোনো অসুবিধায় পড়েননি বলে জানান হাটের ব্যবসায়ীরা। হাটের নিয়ম অনুযায়ী ইজারাদারকে প্রত্যেক ব্যবসায়ী দৈনিক টাকা দিতে হয়। বাস চালকরা বলছেন, মহাসড়কে হাট বসলে গাড়ি চালানো খুব কষ্ট হয়। গাড়ি যেখানে ভেড়ানোর কথা সেখানে ভেড়ানো যায় না। প্রধান সড়কের ওপরই গাড়ি দাঁড় করাতে হয়। মানুষজন এক পাশ থেকে অন্য পাশে দৌড়াদৌড়ি করে। বাসের গতি কমালেও ঝুঁকি থাকে। এদিকে হাটে পর্যাপ্ত জায়গা না হওয়ায় হাটের দিন কয়েকজন ব্যবসায়ী মহাসড়কে গাড়ি দাঁড় করানোর জায়গায় বসে ব্যবসা করেন। মূল হাটের জায়গায় যে দোকানপাট আছে, তা থেকে পাওয়া টোলে টাকা উঠবে না। তাই রাস্তায় বসা ব্যবসায়ীর কাছ থেকেও টোল নেওয়া হচ্ছে। তবে এতে তেমন কোনো অসুবিধা হয় না বলে ইজারাদাররা মনে করেন। কালীগঞ্জ ঝিনাইদহ,যশোর ও কোটচাদপুর সড়ক তিনটি অত্যান্ত ব্যাস্ততম সড়ক। এ সড়ক দিয়ে দিন রাত সর্ব সময় গাড়ি চলাচল করে থাকে। কিন্তু উল্লিখিত স্থান গুলোতে হাট বসার কারণে যানবাহন চলাচলে মারাতœক সমস্যার সৃষ্টি হয়। প্রায় হাটের দিন গাড়ি জাম হলে যানজট হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বিষয়খালি ও তেতুলতলায় হটের দিন ধান ব্যবসায়িরা রাস্তার উপরে ধানের বস্তা রাখার কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। মাহাতাব উদ্দিন ডিগ্রী কলেজ মোড়ে কলার হাটের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়। এসব স্থানে যখন যানজট হয় তখন দুরপাল্লার যাত্রিদের পড়তে হয় মরাতœক দুভোগে। এলাকায় ধানের হাট বসার জায়গা না থাকার কারণে মহাসড়কের উপরে হাট বসানো হয়েছে। রাস্তার পাশে জায়গা থাকলে ও বিক্রেতারা ধান, কলা, বাশের তৈরি বিভিন্ন পন্য রাস্তার উপরে রেখে বিক্রি করে থাকে। এসব হাটবাজারের কারণে যশোর ও ঝিনাইদহের শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট সময়ে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না। বিশেষ করে পরিক্ষার সময় বেশি সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উদ্যোগ নিলে সড়কের উপরের হাট সরিয়ে অন্যাত্র স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে সচেতন মহল মনে করেন। কালীগঞ্জের উপর দিয়ে যাওয়া সড়কের উপরে যেসব হাটবাজার রয়েছে সেসব জায়গায় ছোটবড় অনেক দূর্ঘটনা ও ঘটে থাকে। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোন সময় আমলে নেয় না রহস্য জনক কারনে। মহাসড়কের উপরে হাট বসার কারণে প্রশাসনের গাড়ি অনেক সময় যানজটের মধ্যে পড়ে থাকে। কিন্তু দীর্ঘ বছর হলে ও এসব সমস্যার সমাধানের কোন উপায় হয়নি। ফলে সমস্যা লেগেই আছে আর যানজট হতেই আছে, দুরপাল্লার যাত্রিরা ও মারাত্মক দুভোগে পড়ে থাকে। হাটগুলোতে এক দিকে ক্রেতাদের ভিড় আবার সড়কের উপরে গাড়ি রেখে মালামাল উঠানো হয়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দাবীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ঝিনাইদহ :: স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা, সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও ২০১৮ সালে পাশকৃত শিক্ষার্থীদের মুল সনদ প্রদাণের দাবিতে বিক্ষোভ ও সমাবেশে করেছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঝিনাইদহ মেডিকেল এ্যাসিসটেন্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস)’ এর সামনে এ বিক্ষোভের আয়োজন করে ডিপ্লোমা ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ। এতে ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। এসময় বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিকেল স্টুডেন্ট’স এ্যাসোসিয়েশন জেলা শাখার সমন্বয়ক আবু বকর সিদ্দিক, সহ-সম্পাদক আকাশ টিকাদারসহ অন্যান্যরা। এসময় বক্তারা বলেন, এ বছরের বেশি সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে হাজার হাজার শিক্ষার্থী হতাশাগ্রস্থ। তাই দ্রুত স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পাশাপাশি সাপ্লিমেন্ট পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও সনদ প্রদাণের দাবি জানান।