শুক্রবার ● ১১ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » প্রবাসী মাইকেলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
প্রবাসী মাইকেলের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন
স্টাফ রিপোর্টার : সিলেটের বিশ্বনাথে যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাইকেল মিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে ৭ সন্তান রেখে নতুন করে বিয়ে করা ও প্রথম স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন মাইকেলের প্রথম স্ত্রীর মা সিলেট সদর উপজেলার কান্দিগাঁও ইউনিয়নের গোপাল গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ারা বেগম।
লিখিত বক্তব্যে আনোয়ারা বেগম বলেন, বিশ্বনাথ থানার সিংগেরকাছ গ্রামের মৃত ওয়ারিছ আলীর পুত্র যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাইকেল মিয়ার সঙ্গে ১৯৮৭ সালে আমার মেয়ে মিনারা বেগমের বিয়ে হয়। বর্তমানে তাদের সংসারে ৭ সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই মাইকেলের কুচরিত্র ও নানা কুকর্ম আমার মেয়ের চোখে ধরা পড়ে। আমার মেয়েকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার জন্য সে যৌতুক দাবি করে। আমরা সে সময় বাধ্য হয়ে তাকে বেশ কিছু টাকা দেই। এতকিছুর পরও সংসার এবং সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমার মেয়ে তার সঙ্গে সংসার করে আসছিল। গত কয়েক বছর থেকে মাইকেলের চরিত্রের মারাত্মক অবনতি ঘটে। মাইকেল আমার মেয়ে ও নাতীদের আয়ের টাকায় তার নামে ক্রয়কৃত সম্পদ বিক্রি করে নারীদের পেছনে ব্যয় করে। এছাড়া আমার স্বামী জীবিত থাকতে আমার মেয়ে ও মাইকেলকে ১৫ শতক জায়গা দান করে যান। বর্তমানে সে এ জায়গাও বিক্রি করার পাঁয়তারা করছে। এমনকি সে যৌতুক এবং পুনরায় বিয়ে করার জন্য আমার মেয়েকে চাপ দিতে থাকে।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সে দেশে আসে। মাইকেল দেশে আসলেই সে তার সৎ বোন ছায়ারুন নেছা আছকা’র ছাতকের দক্ষিণ কুর্শি গ্রামের বাড়িতে চলে যেত। সেবারও সে আছকা’র বাড়িতে চলে যায়। খবর পেয়ে আমার মেয়ে মার্চ মাসে দেশে চলে আসে। পরে আমরা জানতে পারি সৎবোন আছকার সঙ্গেও তার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সে আছকার বাড়ি ছেড়ে কোথাও যেতে চাইতো না। আছকার বাড়িতে থেকেই আমার মেয়ের কাছে সে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। দাবিকৃত টাকা না দিলে সে আছকার সঙ্গে নতুন সম্পর্কে জড়াবে বলে হুমকি দেয়। এক পর্যায়ে তার হুমকি এবং অনৈতিক সম্পর্কের কারণে আমার মেয়ে বাধ্য হয়ে মাইকেল ও আছকার বিরুদ্ধে ছাতক থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা নম্বর ১৫/৮৯। এ ঘটনায় ছাতক থানা পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেয়।
আনোয়ারা আরও বলেন, এ ঘটনার পর মাইকেল যুক্তরাজ্যে গিয়ে মিনারাকে মেরে ফেলার ফন্দি আটে। এরই অংশ হিসেবে একদিন সে মিনারাকে হত্যার চেষ্টা করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে এসে তারা মাইকেলকে ধরে নিয়ে যায়। থানায় নিয়ে পুলিশ মাইকেলকে আলাদা থাকার শর্তে ছেড়ে দেয়। তবুও বারবার সে বাসায় এসে মিনারাকে নির্যাতনের চেষ্টা চালায়। এদিকে গত জানুয়ারি মাসে মাইকেল দেশে আসে। দেশে এসেই সে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। সে তার নিজের ফেইসবুকে বিবাহের ছবি পোষ্ট করেছে। এদিকে মিনারা যুক্তরাজ্যে থাকলে সে হুমকি দিয়ে বলেছে নতুন বিয়ের বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে তাকে শেষ করে দেবে। সে আমাকে ও আমার সন্তানদেরও হুমকি দিয়ে বলেছে বিষয়টি প্রকাশ করলে মামলায় ঢুকিয়ে দেবে এবং সন্ত্রাসী দিয়ে নির্যাতন চালাবে।
আনোয়ারা বেগম আশঙ্কা করছেন, মাইকেল যদি এ মূহুর্তে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় তাহলে সে যুক্তরাজ্যে গিয়ে বড় রকম অঘটন ঘটিয়ে ফেলতে পারে। অনুমতি ছাড়া বিয়ে করায় যুক্তরাজ্য হাই কমিশনের মাধ্যমে তার মেয়ে মিনারা আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন। তাই মাইকেল যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে সংবাদ সম্মেলনে সে ব্যাপারে সরকারের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন আনোয়ারা। সেই সঙ্গে মাইকেলকে গ্রেপ্তারেরও অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।