শিরোনাম:
●   কাউখালিতে দিনব্যাপী সম্প্রীতি ফুটবল টুর্ণামেন্ট আগামী ২৪ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ●   কাউখালীতে আজিমুশশান সুন্নী সম্মেলন ●   রাবিপ্রবি’তে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ●   শহীদদের আত্মত্যাগকে ক্ষমতার সিডি হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে ●   ঈশ্বরগঞ্জে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত ●   শিক্ষকদের গবেষণা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অবদান রাখছে : চুয়েট ভিসি ●   রামগড়ে আড়াই লাখ টাকা জরিমানা : ৫টি ইটভাটা বন্ধ ●   নবীগঞ্জে সেনাবাহিনীর অভিযানে ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার-১ ●   রাবিপ্রবি’তে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত ●   পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল অনুপ কুমার চাকমা ●   রংধনু ক্লাবের সম্মাননা পেলো সংবাদ কর্মী আকতার হোসেন ●   রেডব্রিজ কমিউনিটি ট্রাস্টের শিক্ষার্থী এওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠান সম্পন্ন ●   গোলাপগঞ্জে পিকআপের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত ●   পার্বতীপুর জামায়াতের মোটরসাইকেল শোডাউন ●   মিরসরাইয়ে বিএনপি-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা খুন : স্থানীয় নেতাকর্মীদের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করলো তদন্ত কমিটি ●   অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর না হলে রাজনৈতিক সংস্কার টেকসই হবেনা ●   ঈশ্বরগঞ্জে জিয়াউর রহমানের ৮৯ তম জন্মবার্ষিকী পালিত ●   চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু ●   রংধনু ক্লাবের কার্যকরী পরিষদের অভিষেক ●   কাশখালী রশিদিয়া তা’লীমুল কুরআন একাডেমীতে বার্ষিক মাহফিল সম্পন্ন ●   পানছড়িতে সন্ত্রাসীদের দ্বারা ৩জন হামলার শিকার ●   আলীকদমে সড়কে ঝরলো ৩ প্রাণ ●   ঈশ্বরগঞ্জে রবিদাস সম্প্রদায়ের মাঝে কম্বল বিতরণ ●   দুবাইয়ে সংবর্ধিত হলেন জিয়া উদ্দিন ●   বৈষম্য বিলোপে অন্তর্বর্তী সরকারের মনোযোগ দেখা যাচ্ছেনা : সাইফুল হক ●   মিরসরাইয়ে ১৯ তম বিজ্লী গোল্ডকাপ ক্রিকেট টুর্ণামেন্টের উদ্বোধন ●   রাউজানে সরিষা ক্ষেতে হলুদের হাতছানি ●   আমৃত্যু সাজাপ্রাপ্ত আসামীসহ গ্রেফতার-৫ ●   রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে তিনটি ইটভাটা বন্ধ ঘোষণা ●   হালদা নদীতে উদ্ধার করা জাল পুড়িয়ে ধ্বংস
রাঙামাটি, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১



CHT Media24.com অবসান হোক বৈষম্যের
রবিবার ● ২০ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভবন নির্মাণের নামে বৃক্ষ নিধন
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভবন নির্মাণের নামে বৃক্ষ নিধন
রবিবার ● ২০ জুন ২০২১
Decrease Font Size Increase Font Size Email this Article Print Friendly Version

কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভবন নির্মাণের নামে বৃক্ষ নিধন

ছবি : সংবাদ সংক্রান্ত-কে এম শাহীন রেজা কে এম শাহীন রেজা, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি :: কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাসে সড়ক বিভাগের নিজস্ব ফাঁকা জমিতে নতুন সড়ক ভবন নির্মানের প্রস্তাবনা থাকা সত্ত্বেও সড়ক ও জনপথ বিভাগ পরিবেশ ভারসাম্যের উপর কুঠারাঘাত হেনে বেঁচে থাকার মূল প্রাণশক্তি অক্সিজেন নামের ৩০ বছরের গাছগুলি কেটে শহরের সাদ্দাম বাজার মোড়ে চতুর্থ তলা ভবন নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের সম্মুখে প্রায় দুই বিঘা জমির উপর চতুর্থ তলা বহুতল নির্মাণের জন্য সড়ক বিভাগ ইতিমধ্যে ৪ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ভবনের দরপত্র আহ্বান করেছে। আগামী ৭ জুলাই এই দরপত্রটি উন্মুক্ত করা হবে। কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ অফিসের যে স্থানে ৪র্থ তলা ভবনটি নির্মিত হতে যাচ্ছে, উক্ত জায়গাটি নিয়ে মাননীয় বিজ্ঞ আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
গাছ ও পরিবেশ একে অন্যের পরিপূরক এদের মধ্যে রয়েছে নিবিড় সম্পর্ক। গাছ মানুষের পরম বন্ধু, কিন্তু কতটুকু যত্নশীল বন্ধুর প্রতি? আমরা সামান্য কারণ দেখিয়ে বন উজাড় করে ফেলি। বৃক্ষ যে মানুষের প্রাণ চালনা শক্তির মূল উপাদান তা বোধ হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাগন জানেন না। যদি জেনেই থাকতেন তাহলে সাদ্দাম মোড়ের সড়ক অফিসের সামনে অক্সিজেন নামের বৃক্ষের উপর কুঠারাঘাত না করে চৌড়হাসের নিজস্ব জমির উপর চতুর্থ তলা ভবন নির্মাণ করতেন। আজ সেই অতি মূল্যবান আমাদের পরমবন্ধু গাছ কেটে ভবন নির্মানের প্রস্তুতি চলছে কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগের উদ্যোগে। সড়ক ভবনের সম্মুখে প্রায় দুই বিঘা জমির উপর বিভিন্ন প্রজাতির ঔষধি গাছ রয়েছে। কুষ্টিয়া শহরের মধ্যে একমাত্র এখানেই বিভিন্ন প্রজাতির গাছ একত্রে বেড়ে উঠেছে। এই স্থানে গাছের প্রাচুর্যতা থাকায় শহরের অন্যান্য স্থানের তুলনায় এই জায়গার তাপমাত্রা তুলনামূলক কম।
কিন্তু এই সকল গাছগুলোকে এখন আর বাঁচিয়ে রাখা যাবে না প্রকারন্তরে গাছগুলোকে আর বাঁচতে দেয়া হবে না। কারণ এই স্থানে এসকল মূল্যবান গাছ কেটে কুষ্টিয়া সড়ক বিভাগ কর্তৃক সুরম্য ভবন নির্মাণের সকল আয়োজন সম্পন্ন করেছেন ইতিমধ্যে। প্রকৃতির এই নির্মল পরিবেশ নষ্ট করে এখানে এই ভবনটি নির্মিত হলে কুষ্টিয়া শহরবাসীর অপরিমেয় ক্ষতি হয়ে যাবে। এই স্থানে বিদ্যমান বিভিন্ন গাছসমূহের গড়পরতা বয়স প্রায় ৩০। উন্নয়নমূলক নির্মাণের জন্য প্রকৃতি ও পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে হবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কতটা? এখানে একটা সীমার কথা বলেছেন লেনিন এবং তাঁর আগে মার্ক্স, অ্যাঙ্গেলস। ‘প্রকৃতির দ্বন্দ্ববাদ’ শীর্ষক গ্রন্থে ফ্রেডরিক অ্যাঙ্গেলস বলছেন, ‘প্রকৃতির ওপর আমাদের বিজয় নিয়ে নিজেদের গর্বিত ভাবার দরকার নেই। কারণ, প্রতিটি বিজয়ের পর প্রকৃতি প্রতিশোধ নেয়। যে দেশের সংবিধানের ১৮ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্র বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নাগরিকদের জন্য পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন করিবেন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্য প্রাণীর সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা বিধান করিবেন।’ কিন্তু সড়ক বিভাগ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান হয়েও এই বাধ্যবাধকতা প্রতিপালন তো করছেই না, বরং করছে উল্টোটা। উন্নয়নের নামে সাবাড় করা হচ্ছে বৃক্ষ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-এসডিজি পূরণে বনভূমির পরিমাণ দেশের মোট ভূখণ্ডের ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করতে হবে। কিন্তু উল্টোপথে হাঁটছি আমরা। এনভায়রনমেন্টাল পারফরমেন্স ইনডেক্স ২০২০ অনুযায়ী ১৮০ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৮ তম।
কুষ্টিয়ার সচেতন নাগরিক মহল মনে করেন বিদ্যমান বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান এই গাছসমূহ না কেটে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচীর মাধ্যমে এই স্থানে আরো অধিক পরিমাণে গাছ লাগানো প্রয়োজন। তাতে এখানকার পাখিদের আবাসস্থল নিরাপদ হওয়ার পাশাপাশি উন্নত পরিবেশ বজায় থাকবে। জাতির পিতা আজীবন সবুজ সোনার বাংলা কে ভালোবেসেছেন। জাতির পিতার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য বাসযোগ্য সমাজ গড়ে তুলতে গাছ লাগানো আমাদের নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য।
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: শাকিরুল ইসলামের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ করেন নাই। অন্যদিকে কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোহাম্মদ আতাউর রহমানের মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, গাছ কেটে ভবন নির্মান এটি সরকারের বিষয়, তবে গাছ কাটলে পরিবেশের উপর প্রচন্ড চাপ পড়বে অক্্িরজেনের অভাবে ভারসাম্যহীন হয়ে পড়বে বলে আমি মনে করি। গাছ কাটার বিষয়ে কুষ্টিয়া বন বিভাগ অফিসের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সালেহ মো: শোয়াইব খান বলেন, কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ আমাদেরকে এখনো কোন প্রকার অবগতি এবং কোন প্রকার চিঠিও প্রদান করেন নাই। তবে আমাদের অনুমতি না নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কোন ভাবেই গাছ কাটতে পারবে না। অপরদিকে কুষ্টিয়া গণপূর্ত অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলৗ মো: জাহিদুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলে, কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ অফিসের যে স্থানে ৪র্থ তলা ভবনটি নির্মিত হতে যাচ্ছে, উক্ত জায়গাটি নিয়ে মাননীয় বিজ্ঞ আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। মামলার রায় তাদের পক্ষে গেলে উক্ত দপ্তর ভবন নির্মার করতে পারবেন। তবে আমি যে টুকু জেনেছি ভবনটি নির্মান হওয়ার কথা কুষ্টিয়া শহরের চৌড়হাসে সড়ক বিভাগের নিজস্ব ফাঁকা জমিতে এই অফিসের সামনে। তিনি আরও বলেন, এখানে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, সরিসৃপ, কাঠবিড়ালী, বেজী সহ প্রাণীদের আবাসস্থল হওয়াতে কুষ্টিয়ার পরিবেশবিদদের মতে সড়ক ভবনের সম্মুখ স্থানের গাছপালা কেটে ফেললে প্রাণীকূলের খাদ্যশৃংখলে বিঘ্ন ঘটাসহ জীববৈচিত্র মারাত্নক ভাবে হুমকির মুখে পড়বে। দেশের জীব বচৈত্র্য, প্রতিবেশ ও পরিবেশন সংরক্ষণে সরকারি জমিতে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাছ সংরক্ষণ করতেই ‘বৃক্ষ সংরক্ষণ আইন, ২০১২’আইনটি প্রণয়ন করা হয়েছে। সে বিবেচনায় কুষ্টিয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের এর নাকের ডগায় কিভাবে এতোগুলো গাছ কাটার পাঁয়তারা চালাচ্ছেন তা আমার বোধগম্য নয়। অন্যদিকে কুষ্টিয়ার পরিবেশবাদীরা তাদের চরম উৎকণ্ঠা ও উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে কুষ্টিয়ার বিশিষ্ঠ পরিবেশ গবেষক, লেখক ও কলামিষ্ট গৌতম কুমার রায় বলেন, দেশে যে মহামারী আসছে যুগে যুগে তার প্রধান কারণ হচ্ছে অক্সিজেনের শূন্যতা। গাছ না থাকার কারনে অন্যদিকে কার্বন-ডাই-অক্সাইড এর পরিমাণ বেশি হয়ে গেছে। দেশের প্রধানমন্ত্রী সহ দেশের প্রধান প্রধান গুণীজন ফাঁকা জায়গায় গাছ লাগানোর জন্য উঠে পড়ে লেগেছি সেই সাথে বিভিন্ন স্থানে গাছ লাগাচ্ছে, বিশেষ করে তালগাছ সহ আরো অন্যান্য গাছ লাগাইতে হবে, কারণ বজ্রপাতে মানুষ মানুষ মারা যাচ্ছে। ঠিক সেই সময় ৩০ বছরে তিল তিল করে গড়ে ওঠা হওয়া গাছ নিধন করা হচ্ছে প্রাণী হত্যার শামিল এবং মারাত্মক অপরাধ। দেশের মোট জমির মধ্যে ২৫ শতাংশ বনায়ন থাকা প্রয়োজন, বনায়ন না থাকার কথা না হলেও মানুষের আয়ু বাড়ে না আমাদের আছে ৯ শতাংশের কম। সুতরাং হওয়া গাছ কাটায় কোন সুযোগ নাই। এমনকি ব্যক্তিগত পর্যায়েও গাছ কাটতে দেওয়া যাবে না। অতএব, সরকারের কিছু তুঘলকি ব্যক্তি আছে তারা নিজেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে কখনও কখনও জ্ঞানের অভাবে কখনো কখনো নিজেদের স্বার্থের কারণে বড় বড় গাছগুলো কেটে ফেলছে এটার বিরুদ্ধে কঠোর ও তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। প্রয়োজন বোধে এ বিষয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।





আর্কাইভ

পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)