রবিবার ● ২০ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » খুলনা বিভাগে চলছে করোনায় মৃত্যুর মিছিল
খুলনা বিভাগে চলছে করোনায় মৃত্যুর মিছিল
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: খুলনা বিভাগে একদিন পর আবারও করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিভাগে মারা গেছেন ২২ জন। এরমধ্যে কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া খুলনা ও কুষ্টিয়ায় উপসর্গ নিয়ে আরো দুইজনের মারা গেছেন। একই সময়ে বিভাগে ৬২৫ জনের শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। সুস্থ হয়েছেন আরও ১৯২ জন। আজ দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। ২২ জনের মধ্যে কুষ্টিয়ায় ৭জন, খুলনা ৩ জন, সাতক্ষীরায় ৪, যশোরে ৩ , চুয়াডাঙ্গায় ২, মেহেরপুরে ২ ও ঝিনাইদহে একজন মারা গেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার বিভাগে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। শুক্রবার বিভাগে মৃত্যু হয়েছিলো ৮ জনের। স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে করোানা শনাক্ত হয়েছে ৬২৫ জন। এরমধ্যে সর্বোচ্চ যশোরে ১৬৩,খুলনায় ১৪৯ এবং কুুস্টিয়ায় ১১২ জন।
ঝিনাইদহে করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ৪ জনের মৃত্যু, ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৯০ জন
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে বেড়েছে করোনায় আক্রান্তের হার ও মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৯০ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধিন করোনা উপসর্গ নিয়ে অবস্থায় মারা গেছেন ৪ জন। এর মধ্যে ঝিনাইদহে দুইজন ও মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা উপসর্গ নিয়ে একজন মারা গেছেন। শহরের আরাপুর এলাকার চাঁদপাড়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে শাহ আলম (৫০) নামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ক্যান্সার আক্রান্ত এক শিশু করোনায় মারা গেছেন। হাসপাতালের ক্যাশিয়ার আব্দুস সালামসহ অন্তত ১০ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর অবস্থা আশংকা জনক হয়ে উঠেছে। তাদের প্রত্যেকের হাই ফ্লো অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। ঝিনাইদহ করোনা ইউনিটের চিকিৎসক ডাঃ জাকির হোসেন এ সব তথ্য জানান। তিনি বলেন মানুষ নিয়মের মধ্যে না আসলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাবে। ভারতের মতো মৃত্যুর মিছিল শুরু হতে পারে। কিন্তু এতো প্রচার প্রচারণার পরও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। তিনি বলেন, শনিবার পরিস্থিতি এতাটাই খারাপ ছিল যে ৫০ শয্যার করোনা ইউনিটের শয্যা বাড়িয়ে প্রায় একশ করা হয়েছে। ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম জানান, রোববার সকালে ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া ল্যাব থেকে ১’শ ৬৪ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এসেছে। এদের মধ্যে ৯০ জনের করোনা সনাক্ত হয়েছে। সনাক্তের হার ৫৪ দশমিক ৮৭ ভাগ। এনিয়ে জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ালো ৩ হাজার ৩’শ ৯৬ জনে। ২৪ ঘন্টায় ৪ জনের মৃত্যুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাড়ালো ৬৬ জনে। তবে ঝিনাইদহ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের দেওয়া তথ্যমতে এ পর্যন্ত তারা করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে মৃত ৮১ জনের লাশ দাফন করেছে। এর বাইরেও অনেকের পরিবার নিজ দায়িত্বে স্বজনদের লাশ দাফন করেছে। এদিকে ঝিনাইদহ জেলায় করোনার সংক্রমনের হার দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। হাট-বাজার, দোকান-পাট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে মাস্ক, ছাড়াই কেনা-বেচা করছে ক্রেতারা। শহরের চলাচলে বিধি নিষেধ থাকলেও নিদের্শনা থেকে যাচ্ছে উপেক্ষিত। গাদা-গাদি করে হাট-বাজারে চলাচল করতে দেখা গেছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ হারুন অর রশিদ জানান, ৫০ বেড়ের করোনা ওয়ার্ডে ৫১ জন রোগ ভর্তি আছে। স্থান সংকুলান না আরো ৫০ বেডের একটি নতুন করোনা ওয়ার্ড খোলা হয়েছে। সদর হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য ভিড় লেগে গেছে। মানুষ লাইনে দাড়িয়ে নমুনা দিচ্ছে।
ঝিনাইদহে ১’শ ৮৭ জন ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে ১’শ ৮৭ জন ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। আজ রবিবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে এ উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহীন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সেলিম রেজা, স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ইয়ারুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুর রশিদ। ভিডিও কনফানেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জমি ও গৃহ প্রধান কার্যক্রম ২য় পর্যায়ের উদ্বোধন করলে ঝিনাইদহেও সুবিধাভোগিদের মাঝে চাবি হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য, মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না প্রধানমন্ত্রীর এ কর্মসূচির অধিনে জেলায় মোট ৭’শ ৫ টি ভূমি ও গৃহহীন পরিবারকে সরকারী ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৪’শ ৭ টি ঘর ভূমি ও গৃহহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে এবং রোববার দ্বিতীয় পর্যায়ে ১’শ ৮৬ টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। বাকি ঘরগুলো নির্মাণাধীন রয়েছে।
ঝিনাইদহে ঔষধ বিহীন ৪০ মণ ওজনের ‘বীর বাহাদুর’কে দেখতে মানুষের ভিড়, দাম উঠেছে ১৮ লাখ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার দক্ষীন গোপালপুর গ্রামে প্রায় ৪০ মণ ওজনের ‘বীর বাহাদুর’কে দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় জমেছে। প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে ওই বাড়িতে। তার সঙ্গে সেলফি ওঠানোরও হিড়িক চলছে। অনেকে ছবি ফেসবুকে পোস্ট করছেন। ‘বীর বাহাদুর’ ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার দক্ষীন গোপালপুর গ্রামের মৃত. শাবাজ উদ্দিনের ছেলে আতিয়ার রহমানের ফ্রিজিয়ান জাতের একটি ষাঁড়। এরই মধ্যে বিভিন্ন এলাকার পাইকারি গরু ব্যাবসায়িরা ‘বীর বাহাদুর’ ষাড়ের দাম হেঁকেছেন ১৮ লাখ টাকা। তবে আতিয়ার রহমান বলছেন, ‘বীর বাহাদুর’ ষাড়টিকে ২২ লাখ টাকায় বিক্রির ইচ্ছে আছে তার। আতিয়ার রহমান জানান, ‘বীর বাহাদুর’ আমাদের পরিবার তথা গ্রামের খুব আদরের একটি ষাড়। সেকারনে সবকিছুই আমি নিজ হাতেই করার চেষ্টা করি। খাবার দেওয়া, ময়লা পরিষ্কার, গোসল দেওয়া সবই আমি নিজে করি। তবে আমাকে সহযোগিতা করার জন্য আমার স্ত্রী জ্যোতি আফরিন রয়েছেন। ‘বীর বাহাদুর’ অনেক বড় হওয়ায় সব কাজ একা করতে পারি না। তাই সব সময় আমার স্ত্রী জ্যোতি আফরিনের সহযোগিতা নিতে হয়। তাদের চিকিৎসা, তাপমাত্রা ঠিক রাখাসহ সর্ব বিষয়ে সার্বক্ষণিক সতর্ক থাকতে হয়।’ তিনি আরো জানান, তিন বছর আগে ‘বীর বাহাদুর’কে চুয়াডাঙ্গা জেলার ঐতিহ্যবাহি আলমডাঙ্গা বাজার থেকে খরিদ করে নিয়ে আসি। সব সময় পরিমিত খাবার আর যতœ করে ‘বীর বাহাদুর’ ষাঁড়টিকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন তিনি। আতিয়ার রহমান বলেন, ‘বীর বাহাদুর’কে কিনতে পাইকারি গরু ব্যাবসায়িরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ১৮ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন তারা। আমি আরেকটু অপেক্ষা করছি। প্রয়োজনে হাটে উঠাবো এবং ২২ লাখ টাকা দাম চাইবো। সেক্ষেত্রে কিছু কম হলেও বিক্রি করে দেবো। ‘বীর বাহাদুর’ এর পেছনে এখন পর্যন্ত আমার ৯ থেকে ১০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। এখন প্রতিদিন ‘বীর বাহাদুর’ এর খাবারের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ২ হাজার টাকা করে।’ তাছাড়া ‘বীর বাহাদুর’ এর জন্য আমার নিজ বাড়ির আঙিনায় ১০ কাঠা জমিতে কচি সবুজ ঘাষের চাষ করেছি। সেখান থেকে ঘাষ ও ভূষি মাখিয়ে তাকে খাওয়ানো হয়। তবে ‘বীর বাহাদুর’কে কখনোই মোটা তাঁজা করন খাবার বা ঔষধ প্রয়োগ করিনাই। ওই গ্রামের বাসিন্দা ফিরোজ আহমেদ ও সারজুল ইসলাম জানান, ‘ আতিয়ার রহমান গরুর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি নাম ধরে ডাক দিলেই গরু বুঝতে পারে। মালিক যে নির্দেশ দেন সেটাই সে পালন করে। এই ‘বীর বাহাদুর’ আমাদের গ্রামকে অনেক এলাকার মানুষের কাছে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসছেন ‘বীর বাহাদুর’কে দেখতে।’ ঝিনাইদহ শহর থেকে আসা দর্শনার্থী মনিরুল ইসলাম ও তৈয়ব আলী জানান, ‘আমাদের এলাকার অনেকে ‘বীর বাহাদুর’কে দেখে গিয়ে গল্প করছিলেন। এই গল্প শুনে আমিও এসেছি। গরুটি দেখে গরু মনে হয়নি, মনে হয়েছে এটি একটি হাতি। জীবনেও এমন গরু দেখিনি।’ এ বিষয়ে শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন বিশ্বাস জানান, আমি ‘বীর বাহাদুর’ ষাড়টিকে দেখতে গিয়েছিলাম। গরুটির ওজন ৪০ মণের বেশি হবে বলে ধারণা করছি। ঈদ আসতে এখনও কিছুদিন বাকি আছে। এরই মধ্যে আরও কিছু ওজন বাড়বে বলে মনে করছেন তিনি। তাছাড়া আমার জানামতে ‘বীর বাহাদুর’ ষাড়টিকে ঘাষ ও ভূষি মাখিয়ে খাওয়ানো হয়। আমি জানি ‘বীর বাহাদুর’ ষাড়টিকে মোটা তাঁজা করন খাবার বা ঔষধ প্রয়োগ করা হয়নি। উল্লেখ্য যে কেউ আতিয়ার রহমানের ঔষধ বিহীন ‘বীর বাহাদুর’ ষাড়টিকে ক্রয় করতে ০১৭২৫-১৮৩৭৩১ ও ০১৭২৬-৮৭৩৬০৩ নাম্বারে যোগাযোগ করতে পারেন।