শুক্রবার ● ২৫ জুন ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে করোনা রোগীর ভিড়
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে করোনা রোগীর ভিড়
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: করোনার থাবায় বিপর্যস্ত ঝিনাইদহ জেলায় প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। এমন পরিস্থিতিতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের করোনা বিভাগে জায়গা হচ্ছে না রোগীদের। ফলে অনেককেই মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তরল অক্সিজেন যা আছে তাতে চলবে মাত্র দুই দিন। এ নিয়ে চরম অস্থিরতা বিরাজ করছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সদর হাসপাতালে করোনা বিভাগে গত এক সপ্তাহ আগে ৫০টি শয্যার বিপরীতে স্থান সংকুলান না হওয়াই আরও ২০ টি শয্যা বাড়ানো হয়। বর্তমানে এ বিভাগে ৭০ শয্যার বিপরীতে ভর্তি রয়েছে ৬৮ জন। এর মধ্যে ৫১ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১৭ জনের উপসর্গ রয়েছে। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৩টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৩ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ৩ জনের। এ নিয়ে আক্রান্তে সংখ্যা দাঁড়াল ৩ হাজার ৭১১ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৮৯২ জন। মোট জেলায় মারা গেছেন ৭৮ জন। এমন পরিস্থিতিতে চিন্তিত সচেতন মহল। তারা বলছেন, দিন দিন জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কষ্ট হবে। আগামীতে কী হবে, তা ভাবতেই ভয় লাগছে। তবুও মানুষ সচেতন হচ্ছে না। এমনকি লকডাউনও মানছে না অনেকে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর-রশিদ জানান, হাসপাতালে প্রতিদিন নতুন নতুন করোনায় আক্রান্ত রোগী হওয়ায় চিকিৎসক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতো মানুষকে একসঙ্গে চিকিৎসা দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, স্বাস্থ্য অধিদফতরে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও বেশ কয়েকজন মেডিকেল কর্মকর্তা চেয়ে আবেদন করা হলে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি এখনও কাজে যোগদান করেননি। হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আরও বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালে ১ হাজার ৫০০ লিটার তরল অক্সিজেন রয়েছে। এটা দিয়ে আগামী দুই দিন চলবে। তবে রোগীদের অবস্থা বেশি খারাপ হলে এর আগেই অক্সিজেন শেষ হয়ে যেতে পারে। তিনি বলেন, ‘রোগী বাড়তে থাকলে হাসপাতালের অবস্থা আরও প্রকট হতে পারে। হয়তো অন্যান্য সেবা বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। এ বিষয়েও স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
পানির ট্যাংকিতে বিষ দিয়ে গোটা শিক্ষক পরিবারকে হত্যাচেষ্টা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার উত্তর কচুয়া গ্রামে পানির টাংকিতে বিষ মিশিয়ে এক স্কুল শিক্ষকের গোটা পরিবারকে হত্যাচেষ্টা করা হয়। টের পেয়ে বিষ মিশ্রিত পানি ব্যবহার বন্ধ করে দেন ওই পরিবারটি। পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা গেছে, ২৩ জুন সন্ধ্যার দিকে শৈলকুপার বেনীপুর হাইস্কুলের শিক্ষক দেবাশীষ কুমার বিশ^াস ও তার ভাই আশীষ কুমার বিশ^াসের পানির টাংকিতে উচ্চমাত্রার বিষ প্রয়োগ করে। পানির ট্যাপ ছাড়ার পরই বিষ মিশ্রিত দূর্গন্ধ পানি বের হজতে থাকে। বিষয়টি পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও দেখেন। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন জোয়ার্দ্দার মামুন ও কচুয়া তদন্ত পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তাকে। তারা সরেজমিনে ঘটনা পরিদর্শন করেন। পরিবারটির অভিযোগ ২০০১ সাল থেকেই একটি প্রভাবশালী মহল তাদের সহায়-সম্পত্তি ভোগ দখল করার জন্য নানা ভাবে অত্যাচার করে যাচ্ছে। তার অংশ হিসেবে গোটা পরিবারকে হত্যার ছক কষা হয়। পরিবারটি তৎকালীন জাসদ গণবাহিনীর একটি গ্রুপের দ্বারা উপর্যুপরি নির্যাতনের শিকার হয়েছিল বলেও জানা যায়। বর্তমানে ৬ সদস্যের পরিবারের সবাই চরম নিরাপত্তাহীনতায় সময় পার করছেন। স্কুল শিক্ষক দেবাশীষ কুমার জানান, তাদের দেশত্যাগে বাধ্য করতে দূর্বৃত্তরা এধরনের অপকর্মে লিপ্ত বলে মনে করি। এ ব্যাপারে ৫নং কাঁচেরকোল ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন জোয়ার্দ্দার মামুন জানান, বিষয়টি দুঃখজনক। পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার সত্যতা মিলেছে। শৈলকুপা থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, বর্বরোচিত এ ঘটনায় জড়িতদের সনাক্ত করতে সব ধরনের প্রশাসনিক তৎপরতা চালানো হচ্ছে। তিনি বলেন, উত্তর কচুয়া গ্রামের ঐতিহ্যবাহী এ পরিবারটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করতে পুলিশ কাজ করছে।