বুধবার ● ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » বান্দরবান » ৫৭ বিজিবি’র জন্য প্রস্থাবিত ভুমি পরিদর্শন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাবিবুর রহমান
৫৭ বিজিবি’র জন্য প্রস্থাবিত ভুমি পরিদর্শন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাবিবুর রহমান
হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি::১৬ সেপ্টেম্বর:
পার্বত্য বান্দরবানের আলীকদমে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র সদ্য প্রতিষ্ঠিত ৫৭ ব্যাটালিয়ন এর প্রস্তাবিত ভুমি পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ-পুর্ব রিজিয়ন এর কমান্ডার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাবিবুর রহমান৷ মঙ্গলবার বেলা এগারটায় তিনি ৫৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন এর প্রস্তাবিত ভুমি ও একই জায়গায় তিন দিন ব্যাপী বিনামূলে চিকিত্সা সেবা প্রদান ক্যাম্প পরিদর্শন করেন৷ এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি বান্দরবান সেক্টর এর সেক্টর কমান্ডার কর্ণেল অলিউর রহমান, ৫৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল রেজা, আলীকদম উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কালাম, ১নং আলীকদম ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন, মাতামুহুরী রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুদ আলম, আলীকদম ফরেষ্ট রিজার্ভ হেডম্যান উক্যাজাই মার্মা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি কফিল উদ্দিন প্রমুখ৷
৫৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন এর জন্য প্রস্তাবিত জায়গার পরিমান ২৫ একর৷ লামা বন বিভাগের মাতামুহুরী রেঞ্জ এর রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুদ আলম প্রস্তাবিত এই যায়গা মাতামুহুরী রিজার্ভের বলে দাবি করেন৷ দীর্ঘদিন যাবত বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও বন বিভাগের সাথে চলছে মৌন দ্বন্দ৷ পরবর্তীতে এই দ্বন্দ গড়ায় কোটের বারান্দা পর্যন্ত ৷
চট্টগ্রাম দক্ষিণ-পুর্ব রিজিয়ন এর কমান্ডার চট্টগ্রাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় আলীকদম উপজেলার সাথে পার্শ্ববর্তী মায়ানমারের সীমানা সম্পুর্ণ অরক্ষিত৷ তাই সরকার এই বিষয়ের উপর গুরুত্ব আরোপ করে বান্দরবান সেক্টরের অধীনে আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া এলাকায় ৫৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেন৷ব্রিগেডিয়ার বলেন, আমি মনে করি আলীকদমে সীমানা সুরক্ষিত রাখতে হলে বিজিবির ৫৭ ব্যাটালিয়নের কার্যক্রম দ্রুত শুরু করা উচিত্৷ তিনি আরো বলেন, এখানে বিজিবি ব্যাটালিয়ন স্থাপিত হলে এলাকার শিক্ষা , চিকিত্সা, যোগাযোগ সব দিক থেকেই উন্নতি হবে৷
জানা যায়, ১৮৮০ সালের ১৭ই নভেম্বর তত্কালীন ব্রিটিশ সরকার এক লৰ দুই হাজার একর জমি নিয়ে আলীকদম মাতামুহুরী রিজার্ভ ফরেষ্ট এলাকা ঘোষনা করেন৷ পরবর্তীতে ১৯৫৪ সাল থেকে এই রিজার্ভ ফরেষ্টে শুরু হয় বনায়ন৷ অনাকাঙ্খিত হলেও ৯০ এর দশকের দিকে এসে থমকে দাড়ায় সেই বনায়নের কার্যক্রম৷ ধ্বংশ হতে শুরু করে বন৷ বিশেষ করে স্থানীয় কঠ পাচারকারী সিন্ডিকেট বন বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার সাথে আতাত করে এই রিজার্ভ ফরেষ্টে ধ্বংসের খেলায় মেতে উঠে৷ যা আজো অব্যহত আছে৷ বেড়ে চলেছে কাঠ পাচার কারীদের দৌরাত্ম৷ পরবর্তীতে ২০০৩ সালে শুরু হয় স্থানীয়দের অংশগ্রহনে সামাজিক বনায়ন৷
১৯৮৬ সালের অসমাপ্ত জরিপে ভুল বসতঃ মাতামুহুরী রিজার্ভ থেকে চার দাগে ১৯৭ একর জমি তৈন রেঞ্জর নামে রেকর্ডভুক্ত করে৷ উক্ত চারটি দাগের মধ্যে দুটি দাগের ২৫ একর জমি ৫৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের জন্য নির্ধারণ করা হয়৷ উলেখ্য যে, লামা বন বিভাগের তৈন রেঞ্জ সম্পূর্ণ মাতামুহুরী রিজার্ভের আওতামুক্ত৷
মাতামুহুরী রেঞ্জ কর্মকর্তা মাসুদ আলম জানান, এবিষয়ে বান্দরবান জেলা যুগ্ন জর্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়৷ যার মামলা নং- ০২/১৪৷ যা গত ২২ মার্চ ২০১৫ ইং তারিখ খারিজ হয়ে যায়৷ পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে ওই মামলার আপীল করা হয়৷ যার আপীল মামলা নং- ০৫/২০১৫৷ তিনি আরো বলেন, আমরা শুধু ২৫ একরের জন্য মামলা করিনি৷ আমরা মামলা করেছি, চার দাগের ১৯৭ একর জমির জন্যই৷ বন বিভাগও সরকারের, আর বিজিবিও সরকারের৷ সুতরাং সরকারের উপর মহল থেকে যদি বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে আসে, তাহলে আর কোন জটিলতা থাকেনা৷