বৃহস্পতিবার ● ৮ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » কৃষি » ফুলে-ফলে শোভা দিচ্ছে হাজেরা রহমানের শখের ছাদবাগান
ফুলে-ফলে শোভা দিচ্ছে হাজেরা রহমানের শখের ছাদবাগান
আমির হামজা :: সবুজ সুন্দরে ভরা চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) ক্যাম্পাস। এখানের ১৭১ একর আয়তনে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ডানা মেলে আছে। বিস্তৃত পরিসরে সবুজে ঘেরা আবাসিক এলাকায়ও আছে নান্দনিক অনেক কিছু। তেমন একটি সৌন্দর্যের পসরা দেখা যায় মিসেস হাজেরা রহমান-এর ছাদবাগানে। মিসেস হাজেরা রহমান একজন হাউসমেকার। তাঁর আরেকটি পরিচয় তিনি চুয়েট এর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ফজলুর রহমান-এর স্ত্রী। স্বামীর কর্মসূত্রে তাঁর চুয়েটে বসবাস। ক্যাম্পাসের আবাসিক কোর্য়াটার এর বাসার ছাদে তিনি আর স্বামী ফজলুর রহমান মিলে গড়ে তুলেছেন দৃষ্টিনন্দন ছাদবাগান। যেখানে দেশী-বিদেশী অনেক ফুল, ফল ও ঔষধি গাছের সমাহার দেখা গেছে। পাশাপাশি নানা জাতের সবজির গাছ লাগিয়েছেন তিনি। এরই মধ্যে ছাদ বাগানে ফল-ফুল ও সবজিতে হেসে উঠেছে। মি. ফজলুর রহমান এমনিতেই প্রকৃতি বান্ধব ব্যক্তিত্ব। পাখি ও বৃক্ষের প্রতি তাঁর অগাধ ভালোবাসা আছে। চুয়েট বার্ড ক্লাবের প্রধান সংগঠক হিসেবে তিনি এরইমধ্যে পাখিদের জন্য হাঁিড়বাসা স্থাপনসহ নানা উদ্যোগের মাধ্যমে সকলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিসেস হাজেরা রহমানও স্বামীর এই প্রকৃতিমুখী চিন্তা-ভাবনার সাথে জড়িত। সেই চিন্তার ফসল হিসেবে ছাদ বাগানের মতো সৃষ্টিশীল কাজে জড়িত হয়েছেন তিনি। তিন সন্তানের জননী হাজেরা রহমান নিজের বড় দুই সন্তান আফশিন আনাউম এবং ইবনা আনাউমকেও ছাদবাগানের কাজে জড়িত করে যেন প্রকৃতির পাঠশালায় পড়িয়ে যাচ্ছেন। আর ছোটজন মোহাম্মদ সাহিল আল রহমান-এর কাছে একেকটি গাছ যেন খেলার সাথী কিংবা নতুন কোন পরিচয়। ছাদ বাগান সম্পর্কে মিসেস হাজেরা রহমান বলেন, প্রথম দিকে ছাদবাগান সৃজনে একটু কষ্ট পেতে হয়। কিন্তু একবার যদি গড়ে তোলা যায়, তাহলে মায়া এসে যায়। গাছগুলো বন্ধুর মতো হয়ে যায়। গাছের সুখ দুংখও আঁচ করা যায়। এইকাজে সময় দিতে পেরে আতœতৃপ্তিও জাগে। বর্তমান ডিজিটাল জোয়ারের সময়ে এমন কাজগুলো সত্যিই নতুন প্রাণস্পন্দন এনে দেয়। এ সম্পর্কে মি. ফজলুর রহমান বলেন, চুয়েট তো এমনিতেই অনেক সুন্দর। এখানকার সবুজ প্রকৃতির নানা দৃশ্য যে কাউকে মোহিত করবেই। সেখানে ছাদবাগান সৃজনের মাধ্যমে সবুজ সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে তোলা যায়। আমাদের এখানে সবুজে চলার মতো আরো অনেক সুযোগ আছে। আশার কথা এই যে, এই ক্যাম্পাসের অনেকেই সবুজমুখী তথা প্রকৃতিবান্ধব। অনেকেই যে যার অবস্থান থেকে অবদান রেখে চলেছেন। ফলে এখানে প্রকৃতিবান্ধব নানা উদ্যোগ দেখে আমরা আনন্দিত। মিসেস হাজেরা রহমান-এর ছাদ বাগানে গিয়ে দেখা যায়, তাঁদের সখের ছাদ বাগানে লাগানো হয়েছে বারোমাসি আম, সরিফা, আতা, মিষ্টি আমড়া, বারোমাসি আপেল কুল, পেঁপে, চাইনিজ কমলা, ডালিম, দেশি পেয়ারা, থাই পেয়ারা, লাল আঙ্গুর, সবুজ আঙ্গুর, সফেদা ও লেবু জাতীয় ফলের গাছ। সবজিতে রয়েছে, দেশি করল্লা, কাকরল, বেগুন, লাউ, শিম, ক্যাপসিকাম, টমেটো, লেটুস, ভেট বেগুন, লাল শাক, পাট শাক, কচু শাক, পুইশাক। ঔষধি গাছের মধ্যে রয়েছে, দেশি নিম গাছ, সবুজ ও বেগুনি তুলসি গাছ, পাথরকুচি পাতা, মেহেদী পাতা, ডায়াবেটিস গাছ ও নানা জাতের ক্যাকটাস। এছাড়ও রয়েছে কারিপাতা, এলাচ গাছ, দারুচিনি, তেজপাতা, পোলও পাতা, স্যুপ পাতা পুদিনাপাতা, থানকুনি পাতা, ধনে পাতা, বিলাতি ধনে পাতা, দেশী মরিচ, কুমিল্লার মরিচ, ধান মরিচ, কৌটা মরিচ, বেগুনি মরিচ, হাইব্রিড মরিচ ও হলুদ। ফুল গাছে রয়েছে লাল গোলাপ, কালো গোলাপ, সহ কয়েক রকমের গোলাম, জবা ফুল, ধুন্দল, করমচা, কামিনী, নিশিগন্ধা, বেলী ফুল, মিনি স্টার, টগর, কাঠঁলিচাপা, মাধবী লতা, দোলনচাঁপা, গাঁদা ফুল, বনলতা, বাগান বিলাস ও জুঁই ফুল সহ নানা রকমের নানা রঙের ফুল। বর্তমানে ফলে ও ফুলে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে তাঁদের ছাদ বাগানে লাগানো গাছ গুলোতে।