শনিবার ● ১৭ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঘুষ বন্ধ করা পুলিশ অফিসার ওসি মিজানুর রহমানের বদলী
ঘুষ বন্ধ করা পুলিশ অফিসার ওসি মিজানুর রহমানের বদলী
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ সদর থানার সদ্য বিদায়ী ওসি মিজানুর রহমান। নিজের দপ্তর তো বটেই গোটা থানাকে ঘুষ মুক্ত করার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন তিনি। অবশেষে মানবিক এই পুলিশ কর্মকর্তা বদলী হলেন। অল্প দিনে হাজারো মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হলেন তিনি। ওসি মিজানুর রহমান ২০২০ সালের ফেব্রয়ারি মাসের ২৩ তারিখে ঝিনাইদহ সদর থানায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই সদর থানা এলাকায় আইনি সেবা ও নিরাপত্তায় মানুষের আস্থা অর্জন করেন। সাধারণ মানুষের পুলিশি সেবা পাওয়ার রাস্তা সহজ করে দেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি সাধনে রাত দিন কাজ করেন। উজ্জ্বল করেন পুলিশের ভাবমূর্তি। ঝিনাইদহ সদর থানা এলাকার হাটগোপালপুর, বেতাই চন্ডিপুর, নারিকেলবাড়িয়া, ডাকবাংলা, কাতলামারী পুলিশ ফাঁড়িতে সিসি ক্যামেরা ব্যবস্থা করেন। ডাকবাংলা বাজার দোকানমালিক ও রাইচ মিল মালিক সমিতি হাটগোপালপুর বাজার দোকান মালিক সমিতির সৌজন্যে পুলিশের জন্য উপহার হিসাবে পেয়েছেন ২টি গাড়ি। শহরের বেশির ভাগ ওষুধের দোকানে এসি লাগাতে বাধ্য করেন। সদর থানা এলাকায় বৃদ্ধি করেছেন টহল টিম। বিট পুলিশিং সাংগঠনিক অবকাঠামোর মাধ্যমে সেবা পৌছিয়ে দিয়েছেন মানুষের দোর-গোড়ায়। সকল মানুষের জন্য থানা ছিল উন্মুক্ত। তিনি দায়িত্ব পালনকালে ঝিনাইদহে হিজড়াদের বেপরোয়া চাঁদাবাজি বন্ধ করে হিজড়াদের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্ব নিরসন করে বার বার করেছেন ত্রাণের ব্যবস্থা। করোনা কালীন সময়ে দায়িত্বে এসে তিনি নিজ উদ্যোগে দরিদ্র মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ,গ্রাম পুলিশের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ ও আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম’র লাশ দাফনকারী দলের মধ্যেও ত্রাণ বিতরণ করে উৎসাহ প্রদান করেছেন। তিনি থানায় যোগদান করার পরে গত ৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ওয়ারেন্টের আসামি গ্রেফতার, মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করেন। জিডি করে হারানো মোবাইল ও মোটরসাইকেল ফিরে পেয়েছেন অসংখ্য মানুষ। অভিযোগ পেয়ে পাওনা টাকা আদায় করে দিয়েছেন মানুষকে। এলাকায় সুদ কারবারি মহাজনদের করেছেন নিস্ক্রিয়। করোনাকালীন সময়ে পরিবার থেকে ত্যাগ করা প্রতিবন্ধীকে উদ্ধার করে নিজ দায়িত্বে করেছেন চিকিৎসার ব্যবস্থা। শিশু উদ্ধার করে নিঃসন্তান দম্পতির হেফাজতে প্রদান, অজ্ঞাত বৃদ্ধ মহিলাকে উদ্ধার করে বৃদ্ধাশ্রমে থাকার ব্যবস্থা। রাতে খবর পেয়ে পুলিশের টহল গাড়িতে প্রসূতি রোগীকে হাসপাতালে নেওয়া। মধ্যরাতে পুলিশের গাড়িতে করে অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে পৌছে দেওয়াসহ অসংখ্য মানবিক কাজের স্বাক্ষী ঝিনাইদহ সদর থানা এলাকার মানুষ। তার যোগদানের পর থেকে জিডি, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ও মামলা করতে কাউকে টাকা দিতে হয়নি। সবার আন্তরিক প্রচেষ্টায় ঝিনাইদহ সদর থানা হয়ে উঠেছিল মানবিক পুলিশ টিম। গত ১৫ জুলাই মানবিক পুলিশ অফিসার খ্যান সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান চার্জ হস্তান্তর করে ঝিনাইদহ ত্যাগ করেছেন। তার এই চলে যাওয়াও ছিল অতি সন্তর্পে। বিদায়ী ওসি মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান, পুলিশ সুপার মুনতাসিরুল ইসলাম ও সদর সার্কেল আবুল বাশার স্যারের নির্দেশনায় বিভাগীয় অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পেরে আমি ধন্য। আমি চেষ্টা করেছি আমার থানাকে দুর্নীতি মুক্ত রাখতে। মানুষের প্রয়োজনে ছুটে গেছি। আমার অফিসারেরা আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন। করোনাকালীন সময়ে কাজ করতে গিয়ে অনেক পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু বরণ করেছেন।
ঝিনাইদহে করোনা ও উপসর্গে ২৪ ঘন্টায় ৮ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ২৩৬
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ও উপসর্গ নিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় মারা গেছে ৮ জন। এছাড়া নতুন করে জেলায় আক্রান্ত হয়েছে ২’শ ৩৬ জন। সিভিল সার্জন ডা: সেলিনা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত সদর হাসপাতালে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২ জন ও উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৪ জন। এছাড়াও শহরের ইসলামীয়া হাসপাতালে ও চাকলাপাড়ায় উপসর্গ নিয়ে মারা গেছে আরও ২ জন। এদিকে শুক্রবার সকালে আসা ৭১০ টি নমুনার ফলাফলে ২’শ ৩৬ জনের করোনা পজেটিভ এসেছে। আক্রান্তের হার ৩৮ দশমিক ২ ভাগ। এ নিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাড়ালো ৬ হাজার ২’শ ৭৫ জনে। গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছে ৩০ জন।
ঝিনাইদহে ইউএনও’র নাম ভাঙিয়ে ড্রেজার মেশিন দিয়ে লাখ লাখ টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রয়ের অভিযোগ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ সদর উপজেলা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে সদরের সুরাট ইউনিয়ন এর হামদরডাঙা গ্রামে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে নয়ন,আশরাফ ও খাইরুলের বিরুদ্ধে। বালু উত্তোলনের কারণে পুকুরের গভীরতা সৃষ্টি হয়ে স্থানীয়,রাস্তা, বাড়িঘর,ফসলি জমি ভাঙন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মারাত্মক আশঙ্কা রয়েছে বলে গ্রামবাসিরা জানায়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ও জানা গেছে, অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘ ৪/৫ বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে এই নয়ন বাহিনী। এলাকায় তাদের যথেষ্ট রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে। যার কারনে স্থানীয় নিরীহ মানুষ ভয়ে মুখ খুলতে পারছেনা। বালু উত্তোলন বন্ধের ব্যাপারে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করে হামদরডাঙা গ্রামের বাসিন্দা আকমল হোসেন মোল্লা,মোক্তার হোসেন,ওলিয়ার রহমান,সাবরিনা খাতুন,রিনা খাতুন,সহ এলাকাবাসী বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে বাড়িঘর, ফসলি জমি ভাঙন ও পরিবেশ বিপর্যয় দেখা দেয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মানুষের দু:খ-দুর্দশার কথা চিন্তা না করে ব্যক্তি মুনাফার জন্য পরিবেশ নষ্ট করে জনগণের মুখের গ্রাস ও বসতবাড়ি ধ্বংসের লীলায় মেতে উঠেছেন এই নয়ন বাহিনী। এ ব্যাপারে নয়ন হোসেন বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)অবগত। সরকারি কাজের জন্য বালু উত্তোলন করছি। ইউএনও সাহেব আমাকে বালু উত্তোলনের লিখিত অনুমতি দিয়েছেন। তবে নয়ন অবৈধ ভাবে বালি উত্তলনের কোনো প্রকার অনুমতি পত্র সাংবাদিকদের দেখাতে পারেনি।ঝিনাইদহ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম শাহিন অবৈধ বালু উত্তোলনের ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি কাউকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অনুমতি দেয়নি। খোঁজখবর নিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে সাংবাদিকদের জানান।