শনিবার ● ১৭ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » কামারপড়ায় মন্দাভাব, আগুনে গরম লোহার পিটুনিতে টুংটাং শব্দ নাই
কামারপড়ায় মন্দাভাব, আগুনে গরম লোহার পিটুনিতে টুংটাং শব্দ নাই
উত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: আগামী ২১ জুলাই পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে প্রতিবারই ব্যস্ত সময় পার করেন নবীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার কামারপাড়ার ব্যবসায়ীরা। তবে এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে তাদের চিন্তা ও উৎকন্ঠা । প্রতিবারের মতো আংরার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটা পিটিতে টুং টাং শব্দ হচ্ছেনা কামারপাড়ায়। আগুনের শিখায় তাপ দেয়া হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে ঠিকই তৈরি হচ্ছে দা-বটি, চাপাতি ও ছুরি কিন্তু আশানুরুপ বিক্রি হচ্ছেনা তাদের। ঈদকে সামনে রেখে অনেক জিনিস তৈরী করে ষ্টক করলেও তুলনামুলক বিক্রি কম হওয়ায় অনেকগুলাে অবিক্রিত থাকবে বলে আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা। নবীগঞ্জ পৌর শহরের নতুন বাজারস্থ কামার পাড়ার ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপকালে এমনটাই জানান তারা। কামার পাগার সরেজমিন ঘুরে
সুকুমার চন্দ্র দেবের (কর্মকার) সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিনিধি প্রেসক্লাব সভাপতিকে জানান, গত বছরের মতো এ বছর বিক্রি হচ্ছেনা, লকডাউনের কারনে পর্যাপ্ত পরিমানে জিনিস বানাতে পারিনাই । যা তৈরী করেছি সেগুলোই এখন পর্যন্ত তেমন একটা বিক্রি হচ্ছেনা। ঈদের আগ পর্যন্ত এই কয়েকদিন বিক্রি হবে বলে আশা করছি। কোম্পানীর কারণে সামান্য লাভে জিনিস বিক্রি করতে হচ্ছে। আগে যে পণ্য একশত পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম এখন সেই পণ্যই নরমাল কোয়ালিটিতে পঞ্চাশ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। সারা বছর কাজের চাপ থাকে না। যা লাভ এই ঈদ মৌসুমেই হয়। তবে এবার সেই লাভটুকু হচ্ছেনা।
রাখাল দেব নাম কামার ব্যবসায়ী জানান, লকডাউন আর বৃষ্টির কারনে আমাদের ব্যাবসায় ভাটা পড়েছে। ঈদকে সামনে রেখে অন্যন্যবারের মতো জিনিস বানাতে না পারলেও সামান্য পরিমাণ জিনিস বানানো হয়েছে। যা বানানো হয়েছে তাও বিক্রি হচ্ছেনা।
মনসুর মিয়া নামে এক ক্রেতা জানান, প্রবাস থেকে ছোটভাই কোরবানির পশু কিনার জন্য কম পরিমানে টাকা দেওয়ায় একটি পশু ক্রয় করেছি। শুধূ একটি ছোট চুরি ক্রয় করেছি এবং পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়েই এবার কুরবানির পশু জবাই করে নেব।
কামার দোকানদারদের অভিযোগ কোরবানির ঈদ উপলক্ষে আংরা,লোহাসহ সকল জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। অপরদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ ঈদ উপলক্ষে দাঁ, চাপাতি ও ছুরির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। ছুরি শান দেওয়ার জন্য ৫০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ১ শত ৫০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কামারদের ব্যস্ততা দ্বিগুণ বাড়লেও বেচা-বিক্রি সেই আগের মতো স্বাভাবিকই রয়ে গেছে। যার ফলে পণ্য তৈরী করে এখন ব্যবসায়ীরা অনেকটা বিপাকেই আছেন তারা।