শুক্রবার ● ২৩ জুলাই ২০২১
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » মহালছড়িতে আষাঢ়ী পূর্ণিমা উদযাপনের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাবাস শুরু
মহালছড়িতে আষাঢ়ী পূর্ণিমা উদযাপনের মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাবাস শুরু
মহালছড়ি প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির মহালছড়িতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের প্রতিটি গ্রামে এবং প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনাড়ম্বর আনুষ্ঠানিকতায় আষাঢ়ী পূর্ণিমা উদযাপিত হয়েছে। আজ ২৩ জুলাই শুক্রবার সকাল থেকেই আষাঢ়ী পূর্ণিমা দিনটিতে নারী-পুরুষ সকলে বিহারে উপস্থিত হয়ে পঞ্চশীল গ্রহন, সংঘদান, অষ্ট পরিক্খার দান, ধর্মীয় দেশনা ও বিশ্ব শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা করেন ধর্মপ্রাণ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। এ আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের আগামি ৩ মাস পর্যন্ত বর্ষাব্রত পালন শুরু হয়। এ তিন মাস ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত পালনকেই বৌদ্ধরা বর্ষাবাস বলে থাকেন। আষাঢ়ী পূর্ণিমার এ দিনটিতে বাবুপাড়া আম্রকানন বৌদ্ধ বিহার ও সিঙ্গিনালা মহামুনি বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি ছাড়াও দায়ক-দায়িকাগণ বাড়িতে বিভিন্ন ধরণের মুখ রোচক খাবার তৈরী করে বিহারে গিয়ে বুদ্ধকে উদ্দেশ্য করে দান করছেন। সিঙ্গিনালা মহামুনি বৌদ্ধ বিহারের এক দায়ক আনুমং মারমা বলেন, আষাঢ়ী পূর্ণিমার এ তিথিতে দিনব্যাপী অনুষ্ঠান সূচীর মধ্যে সকালের পর্ব ছাড়াও সন্ধ্যায় হাজার বাতি দান, প্রদীপ পূজা ও চুলামনি চৈত্যকে উদ্দেশ্য করে ফানুস উত্তোলন করা হবে।
উল্লেখ্য, প্রথমত: এই আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে গৌতম বুদ্ধ সিদ্ধার্থরূপে মায়াদেবীর গর্ভে প্রতিসন্ধি গ্রহন করেন। দ্বিতীয়ত: জন্ম, জরা, ব্যাধি, মৃত্যু ও সন্ন্যাসী এ চার নিমিত্ত দর্শনের পর রাজকুমার সিদ্ধার্থ আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে সংসারের মায়া-মোহ ত্যাগ করে বুদ্ধত্ব লাভের মহিমায় গৃহত্যাগ করেন। তৃতীয়ত: ৬বছর কঠোর তপস্যার পর বুদ্ধত্ব লাভ করে তিনি আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিতে সারনাথের ঋষিপতন মৃগদাবে প্রথম ধর্মচক্র প্রবর্তনসূত্র দেশনা করেন এবং পরবর্তীতে মায়ের মৃত্যুর পর একই পূর্ণিমা তিথিতে তিনি মায়া দেবীকে সদ্ধর্ম দেশনার জন্য তাবতিংস স্বর্গে গমন করেন। তাই এ দিনটি স্মৃতি বিজরিত কয়েকটি কারণে বৌদ্ধদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।