রবিবার ● ১ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » নওগাঁ » গেটকিপার দুই বন্ধুর মাঝে উপহার নিয়ে হাজির ব্যবসায়ী
গেটকিপার দুই বন্ধুর মাঝে উপহার নিয়ে হাজির ব্যবসায়ী
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: নওগাঁর আত্রাইয়ে রেলক্রসিংয়ে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা করতে স্বেচ্ছায় গেটকিপারের দায়িত্বপালন করা আলোচিত সেই দুই বন্ধুর মহৎ এ কর্মকান্ডে খুশি হয়ে তাদের মাঝে উপহার সামগ্রী তুলে দিলেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ।
রবিবার সকালে উপজেলার শাহাগোলা ও মাধাইমুড়ি মাঝামাঝি স্থানে নব-নির্মিত রেলগেটে স্বেচ্ছায় গেটকিপারের দায়িত্বপালন করা আলোচিত দুই বন্ধুর মাঝে উপহার সামগ্রী হিসেবে টি-শার্ট, ক্যাপ, করোনা প্রতিরোধক ম্যাক্স, হ্যান্ড সানিটেরাজার, বিস্কুট ও জুস তুলে দেন উপজেলার ভবানীপুর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ।
জানা যায়, সাম্প্রতি উপজেলার শাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম পাশ দিয়ে তৈরি নবনির্মিত “আঞ্চলিক মহাসড়ক” বিনোদন প্রেমীদের নতুন স্পটে পরিণত হয়েছে। যার ফলে প্রতিদিন এ মহাসড়কে শত শত বিনোদন প্রেমীরা ঘুরতে আসে। আবার তারা অনেকেই রেল লাইনের পূর্ব পাশে দর্শনীয় বেরাহোসন বড় মসজিদ দেখতে এবং এ সড়কের সাথে সম্পৃক্ত বেরাহোসন, শিমুলিয়া, পোতা, তেঘর, জামগ্রাম, তিলাবাদুরি, ভোঁপাড়া গ্রামের হাজার হাজার লোকের শাহাগোলা রেলওয়ে স্টেশন ও আত্রাই উপজেলা সদরসহ নওগাঁ-শান্তাহার শহরের সাথে যোগাযোগের এক মাত্র সংযোগ সড়ক। আর এ সড়ক দিয়ে রেল লাইন পারাপারে এক মাত্র পথ হওয়ায় এবং এ স্থানে কোন রেলগেট না থাকায় যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দেয়। ঠিক এ দুঃসময়ে শিমুলিয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও পাশর্^বর্তী বেরাহোসন গ্রামের মামুন তারা দুই বন্ধু নিজ উদ্যোগে নিজ খরচে রেল লাইনের দুর্ঘটনা এড়াতে রেললাইনের দু‘পাশে বাঁশ দিয়ে গতিরোধক ব্যারিয়ার তৈরি করে রোদ বৃষ্টির মাঝে তারা স্বেচ্ছাশ্রমে গেটকিপারের এ মহৎ কাজ করে চাচ্ছে বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত হওয়ার পর তাদের এ কর্মকান্ডে খুশি হয়ে তাদের মাঝে উপহার সামগ্রী নিয়ে হাজির হন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ।
এ বিষয়ে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ বলেন, পথচারীদের রক্ষা করতে স্বেচ্ছাশ্রমে নিরলসভাবে কাজ করা আনোয়ার ও মামুন দরিদ্র পরিবারের ছেলে হয়েও পরিবারের হাল ধরার পাশাপাশি তাদের এ অদ্যমতা দেখে আমি হতবাক হয়ে পরি। তাদের এ নিজ উদ্যোগে ব্যারিয়ার নির্মাণ করে স্বেচ্ছাশ্রমে গেট কিপারের দায়িত্বপালন করতে দেখে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। সেখানে স্থায়ী একটি রেলগেট প্রয়োজন বলেও তিনি মনেকরেন। তিনি আরো বলেন তাদের দুই বন্ধুর পছন্দের এই চাকরিটা স্থায়ী হলে দরিদ্র পরিবারের দুঃখ লাঘব হতো। তাই আমি রেল ডিপার্টমেন্টের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এ বিষয়ে আনোয়ার হোসেন বলেন, মাঝে মধ্যেই পত্র-পত্রিকায়সহ গণমাধ্যমে আমরা শুনতে পায় রেল লাইন পারাপারে একের পর এক দুর্ঘটনার কথা। এ কথা মাথায় রেখেই আমরা দুই বন্ধু নিজ অর্থায়নে রেলগেট তৈরি করে নিয়মিত গেটকিপারের দায়িত্ব পালন করছি। বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মামুনুর রশিদ ভাই আমাদের পাশে এসে দুই মাঝে উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়ার জন্য আমরা দুই বন্ধু অত্যন্ত খুশি।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের শান্তাহার সিনিয়র সাব-এসিষ্টেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মো. আফজাল হোসেন বলেন, শাহাগোলা-মাধাইমুড়ি মাঝামাঝি স্থানে রেল লাইন পারাপারের জন্য জনগণের সুবিধার জন্য একটি অস্থায়ী রেলগেট নির্মাণ করা হয়েছে। তবে স্থানীয় সরকারের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ে বরাবর একটি আবেদন করলে সেখানে স্থায়ী রেলগেট নির্মাণ করা সম্ভব বলে তিনি জানান ও এ ব্যাপারে তিনি তার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার কথাও বলেন।