মঙ্গলবার ● ১০ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে দুই সাংবাদিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঝিনাইদহে দুই সাংবাদিকসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহের একটি আদালতে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক মতিউর রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার কালীগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার। যার মামলা নং কালী সিআর-৮৬/২১। মামলার অন্য দুইজন আসামী হলেন প্রথমআলো পত্রিকার ঝিনাইদহের নিজস্ব প্রতিবেদক জেলার সিনিয়র সাংবাদিক আজাদ রহমান ও কালীগঞ্জ সরকারী মাহতাব উদ্দীন কলেজের অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান। ভার্চুয়াল আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদীদের প্রতি সমন জারী করেছেন এবং আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য্য করেছেন। এদিকে সাংবাদিকদের নামে সংসদ সদস্যের মানহানী মামলা করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঝিনাইদহের সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানিয়েছেন। বাদী সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার তার নালিশীর বিবরণে উল্লেখ করেছেন, গত ৬ আগষ্ট দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার প্রথম পাতায় “মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ নিয়ে সাংসদের আপত্তি, ১৪ মাস বেতন বন্ধ শিক্ষকদের” শিরোনামে ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশ করেন। এতে তার রাজনৈতিক, সামাজিক ও ব্যক্তি জীবনের ব্যাপক সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে যা অর্থ দ্বার পুরণ যোগ্য নয়। উপরোক্ত বাদীর ৫ কোটি টাকার মানহানী হয়েছে বলে দাবী করা হয়। সংসদ সদস্যের দাবী, তথ্য যাচাই বাছাই না করেই তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিবাদীরা এহেন সংবাদ প্রকাশ করেছেন। এমপি আনার মামলার আরজিতে আরো উল্লেখ করেন ২০১৮ সালের ২৭ আগষ্ট থেকে এই ৩৫ মাস তিনি অফিসিয়াল বা আন-অফিসিয়ালি কলেজের সঙ্গে যুক্ত নয়। ফলে অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমানকে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া বা কলেজে প্রবেশে বাধা প্রদান করার খবরটি সত্য নয়। তাছাড়া খবরে ২০ জনকে অবৈধ ভাবে নিয়োগ প্রদানের বিষয়টিও অসত্য ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। মামলার বিষয়ে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আজাদ রহমান জানান, সংবাদটি উপযুক্ত তথ্য প্রমানের ভিত্তিতে করা হয়েছে। কোন অসৎ উদ্দেশ্য বা সাংসদের মানহানী করার জন্য নয়। সংবাদে যথারীতি ভাবে সাংসদ আনোয়ারুল আজীম আনারের বক্তব্য সুস্পষ্ট ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তারপরও তিনি পত্রিকায় কোন প্রতিবাদ না পাঠিয়ে আদালতে মানহানী মামলা করেছেন যা হয়রানীর নামান্তর মাত্র।
গভীর রাতে ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা, থানায় অভিযোগ দায়ের
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকূপায় হালিম (২৮) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে ১০ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা শৈলকুপা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার গভীররাতে উপজেলার দুধসর ইউনিয়নের ত্রিপুরাকান্দি গ্রামে। জানা গেছে, ত্রিপুরাকান্দি গ্রামের মেয়ে ১০শ্রেণীর ছাত্রীকে গভীর রাতে একা পেয়ে ধর্ষণ চেষ্টা করে প্রতিবেশী সাব্দার এর ছেলে হালিম। এ ঘটনারপর থেকে হালিম এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। আরো জানা যায়,হালিম বিবাহিত এমন অপকর্ম এর আগেও করেছে। সঠিক বিচার না হওয়ায় ঘরে স্ত্রীকে রেখে দিনদিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ওই শিক্ষার্থীর মা জানায়, তার মেয়ে সাইন্স এর ১০ম শ্রেণীর ভালো ছাত্রী, রাত জেগে পড়া লেখা করে। শনিবার মধ্যরাতে তার মেয়ে প্রকৃতির ডাকা সাড়া দিতে বাইরে গেলে আগে থেকে ওৎ পেতে থাকা প্রতিবেশী সাবেক মেম্বর সাব্দার এর লম্পট ছেলে হালিম ধর্ষণের উদ্দেশ্য তার মেয়েকে ঝাপটে ধরে। এসময় তার মেয়ের চিৎকারে তার বাবা বেড়িয়ে আসলে হালিম সেখান থেকে পালিয়ে যায়। তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন। শৈলকূপা থানার অফিসার ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম জানান, স্কুল ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে ওই ছাত্রীর বাবা লিখিত অভিযোগ করেছে। তদন্তে সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভাই হত্যার দায়ে বোন গ্রেফতার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাজিপোতা গ্রামের এহতেশামুল মাহমুদ রাতুল হত্যার দায়ে বড় বোন মাহমুদা মমতাজ মিমকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভাই এহতেশামুল মাহমুদ রাতুল হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মিমকে শনিবার যশোর ডিবি কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার দেখানো হয়। এর আগে হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী দুলাভাই শিশিরকে চট্রগ্রামের পতেঙ্গা থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে দোষ স্বীকার করে নেয়। শ্বশুরের উপর প্রতিশোধ নিতেই সে শ্যালককে হত্যা করে বলে পুলিশকে জানায়। মহেশপুর ও যশোর পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, গত ১১ জুলাই বাড়ি থেকে ঘুরতে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেনি রাতুল। এরপর ১২ জুলাই চৌগাছা থানাধীন লস্করপুর শ্মশান মাঠে পাটক্ষেত থেকে মুখে স্কসস্টেপ মোড়ানো অবস্থায় রাতুলের লাশ অজ্ঞাত হিসেবে উদ্ধার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি দেখে লাশটি রাতুলের বলে সনাক্ত করে স্বজনরা। এ ঘটনায় রাতুলের পিতা মহেশপুরের বাজিপোতা গ্রামের মোঃ মহিউদ্দীন যশোরের চৌগাছা থানায় অজ্ঞাত আসামীদের নাম উল্লেক করে মামলা করেন। মামলাটি চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস হওয়ায় যশোর ডিবি পুলিশের উপর তদন্ত ভার ন্যাস্ত করেন পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার। যশোর ডিবি পুলিশের এসআই মোঃ শামীম হোসেন মামলার তদন্ত ভার হাতে নিয়ে নিহত রাতুলের ভগ্নিপতি শিশির আহম্মেদকে গত ১৭ জুলাই চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে গ্রেফতার করে মোটিভ ও ক্লু উদ্ধার করেন। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক ভিকটিমের বোন মাহমুদা মমতাজ মীমকে গত শনিবার (৭ আগষ্ট) পিতা মহিউদ্দিনের মাধ্যমে ডিবি কার্যালয়ে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদে তার সংশ্লিষ্টতা আছে বলে প্রমানিত হয়। জিজ্ঞাসাবাদে মাহমুদা মমতাজ মীম ডিবি পুলিশকে জানায় ফেসবুকের পরিচয়ে শিশিরের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। এরপর তারা পালিয়ে বিয়ে করে। জামাই শিশির শ্বশুর শাশুড়ির সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখার জন্য যোগাযোগের চেষ্টা করলে শিশিরকে বিভিন্নভাবে অপমান করেন শ্বশুর। অপমানের প্রতিশোধ নিতেই শিশির ও মীম পরস্পর যোগসাজসে রাতুলকে হত্যার ছক আঁটে।
এলসি আতঙ্কে ঝিনাইদহে কমেছে মিলারদের চাল বিক্রি
ঝিনাইদহ :: এলসি আতঙ্কে ঝিনাইদহের মিলারদের চাল বিক্রি কমে গেছে। গেল দশ দিনে বিক্রির পরিমাণ কমেছে গড়ে ৭০ ভাগ। চালের দামও মোটা-চিকোন ভেদে কমেছে গড়ে দুই টাকা। ফরিদপুর, বরিশাল সহ বিভিন্ন স্থানে বড় বড় মোকাম মালিকরা এসব স্থান থেকে চাল কেনা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে লোকসানের শঙ্কায় রয়েছে ব্যাবসায়ীরা। সারা বাংলাদেশে চাল উৎপাদনে অন্যতম স্থান দখল করে আছে ঝিনাইদহ জেলা। এখানে ৬ উপজেলায় ১৫ টি অটো রাইস মিল এবং পাচ শতাধীক হাস্কিং মিল রয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলার ডাকবাংলা ত্রিমোহনী এলাকায় রয়েছে সব থেকে বেশী চাল মিল। এসব মিল থেকেই প্রতিদিন হাজার হাজার টন চাল যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। কিন্তু গেল বেশ কিছুদিন কমে এসেছে চাল বিক্রির পরিমান। সরকারের খাদ্য মন্ত্রনালয়ের চালের বাজার দর নিয়ন্ত্রণে এলসি’র মাধ্যমে চাল আমদানী করা হবে এমন আতঙ্কে বিভিন্ন এলাকার বড় বড় মোকাম মালিকরা আসছেন না এসব এলাকা থেকে চাল কিনতে। ফলে মিলারদের চাল বিক্রি কমেছে শতকরা প্রায় ৭০ ভাগ। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু মিল মালিকরা বলেন কেজি প্রতি চালের দাম ২ থেকে ৩ টাকা কমে আসলে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা সকলের জন্যই বাজারে ভারসাম্য ফিরে আসবে। ডাকবাংলা এলাকার অন্যতম ব্যবসায়ী মিল মালিক আক্তার হোসেন ভান্ডারী জানান, বেশ কিছুদিন ধরে ব্যবসা অত্যন্ত মন্দা যাচ্ছে। বেচা-বিক্রি অনেক কমেছে। তারপর যদি এলসি’র চাল দেশে ঢোকে তাহলে আমাদের লোকসান গুনতে হবে। জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, করোনার মধ্যে ব্যবসা এমনিতে মন্দা যাচ্ছে। অনেকেই বেশী দামে ধান কিনে রেখেছে। ফলে এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির শেষ থাকবে না। তিনি বলেন, যদি এলসি’র মাধ্যমে চাল আমদানী করে তাহলে যেন ব্যবসায়ীদের দিক বিবেচনা করা হয়।