মঙ্গলবার ● ১৭ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ঝিনাইদহে হাসপাতালের মাটি কেটে চিকিৎসকের বাড়ি নির্মাণ
ঝিনাইদহে হাসপাতালের মাটি কেটে চিকিৎসকের বাড়ি নির্মাণ
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহে সদর হাসপাতালের মাটি কেটে নিজ বাড়ি নির্মাণ করছেন এক চিকিৎসক। সরকারি সম্পত্তি নিজের বাড়ি নির্মাণে ব্যবহার করার বিষয়ে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে। একজন চিকিৎসক কারো অনুমতি না নিয়ে মাটি কেটে ট্রলি ভরাট করে নিজের বাড়ির গর্ত ভরছেন এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলার সচেতন মহল। ঘটনাটি ঘটিয়েছে সদর হাসপাতালের জুনিঃ কনসালটেন্ট (শিশু) প্যাথলজি পদের বিপরিতে কর্মরত ডাঃ মোঃ হুমায়ুন শাহেদ। মঙ্গলবার দুপুরে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের নব-নির্মিত ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের জরুরী বিভাগের পাশে কোয়ার্টারের পাশের মাটি কেটে ট্রলি ভরা হচ্ছে। মাটি কাটা শ্রমিক আইনাল হোসেন বলেন, হাসপাতালের শিশু ডাক্তার হুমায়ুন আমাদের মাটি কাটতে বলেছেন। তাই আমরা মাটি কেটে ট্রলি ভরাট করে দিচ্ছি। এই মাটি হামদহ দিশারী পলিটেকনিকের পাশে যাচ্ছে। সেখানে ডাক্তার বাড়ি করছেন সেখানে ভরাট করা হচ্ছে।
নির্মাণাধীন বাড়িতে কর্মরত এক নির্মাণ শ্রমিক বলেন, এই বাড়ি হুমায়ন শাহেদের বাড়ি করা হচ্ছে। কয়দিন আগে বলেছিল মাটি কিনব। আজ ট্রলি করে মাটি আসছে। ৩ গাড়ি আসছে বাকি আরও মাটি আসছে। এদিকে হাসপাতালের মাটি কেটে নিজ বাড়ির গর্ত ভরাট করলেও কিছু জানেন না হাসপাতালের তত্বাবধায়ক। সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: হারুন অর রশিদ বলেন, হাসপাতালের মাটি ঠিকাদারের সরানোর কথা ছিল। সেটি এখনও সরানো হয়নি। ডা: হুমায়ুন শাহেদ মাটি কেটে নিচ্ছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এর কিছু জানিনা। তিনি আমার কাছে কিছু শোনেনি। এ ব্যাপারে হাসপাতালের ঠিকাদার টিপু মল্লিক বলেন, হাসপাতাল নির্মাণের সময় মাটি যা লেগেছিল তা ব্যবহার করে বাকি মাটি নিরাপদ দুরত্বে রাখা হয়েছে। এটি হাসপাতালের সম্পত্তি। ডা: হুমায়ুন শাহেদ মাটি কেটে নিতে পারেন না। যদি আমার সরানোর ও কথা থাকতো তবুও তিনি আমার কাছে কিছু শোনেন নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, একটি সরকারি দপ্তরের মাটি কেটে একজন চিকিৎসক কিভাবে তার বাড়ি ভরাট করে। কাউকে না জানিয়ে আইন বর্হিভূতভাবে তিনি কিভাবে মাটি কেটে নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে ডা: হুমায়ুন শাহেদ বলেন, আপনি হাসপাতালের সুপার সাহেবের সাথে কথা বলেন। ‘হাসপাতালের তত্বাবধায়ক কিছু জানেন না’ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, হাসপাতালে আসেন এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন।
হত্যা মামলার স্বাক্ষীকে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে শিশু আলামিন হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষি তরিকুল ইসলাম পলাশকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। হত্যা মামলার সাক্ষি হওয়ার কারণেই আসামীরা তাকেও হত্যার ছক আঁটে। আহত পলাশ পুলিশের উপর হামলা মামলারও স্বাক্ষী। মঙ্গলবার সকাল ৮ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত তরিকুল ইসলাম পলাশ কালীগঞ্জ উপজেলার আড়পাড়া গ্রামের মৃত জালাল উদ্দিন বিশ^াসের ছেলে। আহত পলাশ বলেন, আড়পাড়া এলাকার শিশু আলামিন হত্যা ও পুলিশের উপর হামলা মামলার স্বাক্ষী তিনি। আর এই স্বাক্ষী হওয়ার কারণে মঙ্গলবার সকালে আসামী শওকত আলী বিশ^াস, তার ছেলে অপু বিশ^াস ও ভাই লিটন বিশ^াস অতর্কিত হামলা চালায়। হামলাকারীরা সবাই পুলিশের উপর হামলা মামলার আসামি। তিনি অভিযোগ করে সাক্ষি হওয়ার পর থেকেই আসামীরা তার উপর ক্ষুদ্ধ। বিভিন্ন সময় হুমকি দিয়ে আসতো আসামিরা। পলাশের ভাই মোশাররফ হোসেন জানান, এর আগে তার মা ও বোনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, এ ব্যাপারে এখনো কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিব। কারণ সাক্ষিদের সুরক্ষার দায়িত্ব পুলিশের। জানা গেছে, ২০২০ সালের ৩০ নভেম্বর আড়পাড়া এলাকায় বাড়ির পাশে ওয়াজ শুনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মাদ্রাসাছাত্র শিশু আলামিন। ৪ ডিসেম্বর আড়পাড়া এলাকার একটি ৪ তলা ভবনের পিছন থেকে আল আমিনের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় শিশু আলামিনের পিতা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা তদন্ত করতে এসে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের সদস্যরা হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের এসআই সোহেল রানা। হত্যা ও পুলিশের উপর হামলা মামলার সাক্ষি হন হামলায় আহত তরিকুল ইসলাম পলাশ।
পৃথক স্থানে সাপের কামড়ে তিন জনের মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: মা ও ছেলে দু,জনেই সাপের দংশনে মারা গেলে। এমন ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহ মহেশপুর এলাকায়। সোমবার রাতে শাওন (১৭) ঘরে ঘুমিয়ে ছিল এসন সময় বিষধর সাপ তার পেটে দেয়। সে মহেশপুর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের যুগিহুদা গ্রামের নুর চাঁদের পালিত সন্তান। মাত্র ১৭ বছরের ব্যবধানে মা ও ছেলে দু,জনে সাপের কামড়ে মারা গেল। প্রতিদিনের ন্যায় নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন শাওন। কিন্তু রাত সাড়ে ১২ টার দিকে ঘুতন্ত অবস্থায় বিষধর সাপে কামড় দেয় শাওনকে। পরে তাকে প্রথমে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি ঘটলে বাগানমাঠ কবিরাজের বাড়ীতে নিয়ে গেলে কবিরাজ শাওনকে মৃত ঘোষনা করেন। পরে নিজ বাড়ীতে আবারও কবিরাজ দিয়ে চলে ঝাড় ফুক। একপর্যায়ে মঙ্গলবার ১০টার দিকে কবিরাজ মৃত ঘোষনা করে চলে যান। শাওনের বাবা নুর চাঁদ জানান, ১৭ বছর পুর্বে শাওনের বয়স যখন সাড়ে ৩মাস তখন শাওনের মা জরিনা বেগম সাপের কামড়ে মারা যায়। এদিকে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার জামাল ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামে সাপের কামড়ে আশা মিয়া (১৬) নামের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। মৃত আশা ওই গ্রামের মাসুম মিয়ার ছেলে। সে গোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ছিল। গোপালপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুল মালেক মোল্লা জানান, রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিল আশা। রাত ১২ টার দিকে বিষধর সাপ তাকে ছোবল দেয়। শরীরে জ্বালাযন্ত্রনা শুরু হলে পরিবারের লোকজনকে ডাকে। প্রথমে তাকে স্থানীয় ওঝাদের কাছে ঝাড়-ফুক করানো হয়। সেখানে তার শারিরীক অবস্থার অবনতি হলে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে ভোরে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে নারীর জমি দখল
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে জোর করে অবৈধভাবে জমি দখলের অভিযোগ করেছেন আনোয়ারা বেগম নামে এক নারী। এ নিয়ে নালিশী জমির উপর আদালত ১৪৪ ধারা জারী করলেও প্রতিপক্ষরা মানছেন না। জোর করে তারা জমিতে চাষ দিয়ে দখলের চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ঝিনাইদহ শহরের পূর্ব কাঞ্চননগর এলাকার এইচএসএস সড়কের একেএম ফয়জুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। আদালত ও পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ১৫৯ নং পবহাটী মৌজার খারিজ ১৪০৯, হোল্ডিং ৪৪৮১, এসএ ১৭৮৭ নং দাগে ১৯ শতক জমির মধ্যে ৪.৩৪ শতক জমি মোছাঃ আনোয়ারা বেগম রেকর্ড মূলে মালিক হয়। এরপর জমিটির দির্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছেন তিনি। আনোয়ারার মালিকানাধীন জমি প্রতিবেশী আনারুল বিশ^াস, আনিচুর রহমান, সাফিয়ার রহমান, আতিয়ার রহমান, সুমন মোল্ল্যা ও মোঃ রাজন আলী জমিটি তাদের দাবি করে জোরপূর্বক ভোগ দখলের পাঁয়তারা করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে আদালত যায় আনোয়ারা বেগম। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত উভয় পক্ষকে জমিতে যাওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য নির্দেশ জারি করে। কিন্তু ১৫ আগষ্ট অফিস বন্ধের দিন ভোরে আনারুল বিশ^াস, আনিচুর রহমান, সাফিয়ার রহমান ও আতিয়ার রহমান জমিটি ট্রাক্টর দিয়ে চাষ করে গাছ লাগিয়ে দখল করেন। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি (তদন্ত) এমদাদ হোসেন জানান, জমিটি নিয়ে আগেই আদালত ১৪৪ ধারা জারি করেছিল। সর্বশেষ এক পক্ষের জোর করে দখল নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। এখন তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মহেশপুরে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় ৭ জন আটক
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুরে সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার সময় ৭ জনকে আটক করেছে বিজিবি। সকালে মহেশপুর উপজেলার পারগোপালপুর গ্রামের মসজিদের পাশ থেকে যাদবপুর বিওপির সদস্যরা তাদেরকে আটক করে। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম খান জনান, তারা নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন একদল লোক অবৈধভাবে ভারতে যাওযার চেষ্টা করছে। খবর পেয়ে যাদবপুর বিওপির সদস্যরা নারী ও শিশু সহ ৭ জনকে আটক করে। আটককৃতদের অবৈধভাবে বাংলাদেশ হতে ভারতে গমনের চেষ্টা করার অপরাধে পাসপোর্ট অধ্যাদেশ ১৯৭৩ এর ১১(১) (গ) ধারায় ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর থানায় মামলা দায়ের ও সোপর্দ করা হয়েছে।