রবিবার ● ২২ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই বিয়াইয় শ্রীঘরে
অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই বিয়াইয় শ্রীঘরে
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নারী সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শনিবার (২১ আগস্ট) মারা গেলে তার লাশ অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে রাতভর ঘুরাঘুরি করা হয়।
পরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে বিশ্বনাথের লামাকাজি এলাকার স্থানীয় জনতা আটক করে পুলিশে খবর দিলে আজ রবিবার ২২ আগস্ট সকালে গিয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে।
এর আগে শুক্রবার (২০ আগস্ট) রাতে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় সে রাতেই দুজনকে আটক করে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ।
লামাকাজি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সদস্য (ইউপি মেম্বার) আবুল কালাম সাংবাদিকদের জানান, তাঁর ওয়ার্ডের মির্জারগাঁওয়ে বাবার বাড়িতে একা থাকতেন মখলিছুন বেগম (৩২) নামের ওই নারী। আগে তার এক বিয়ে হয়েছিলো। সেই স্বামীর ঘরে দুই সন্তানও রয়েছে। তিনি মানুষের বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর বাবা আবদুস সালাম চাকরিসূত্রে সিলেট শাহপরাণ এলাকায় থাকেন।
আবুল কালাম আরোও জানান, গত শুক্রবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যারাতে স্থানীয়দের সূত্রে মখলিছুনের বাবা আব্দুস সালাম খবর পান তার মেয়ে গুরুতর অসুস্থ। খবর পেয়ে তিনি বাড়িতে গিয়ে দেখেন মখলিছুন বেগম বিবস্ত্র ও রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরে পড়ে আছেন। আব্দুস সালাম তাকে (স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম) খবর দিলে রাত ১০টার দিকে পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান তিনি।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে স্থানীয় রইছ আলী নামে এক বয়স্ক ব্যক্তি মখলিছুন বেগমকে দেড় মাস আগে বিয়ে করেছেন বলে জানান। তবে মখিলছুন বেগম ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কীভাবে হলেন সেটি তিনি জানেন না বলে পুলিশকে বলেন।
এসময় বিশ্বনাথ থানা পুলিশ রইছ আলী ও স্থানীয় কমলা মিয়া- এ দুজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং মখিলছুন বেগমকে ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এদিকে, শনিবার (২১ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে মখলিছুনের বাবা আব্দুস সালাম ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম মামলা দায়েরের জন্য বিশ্বনাথ থানায় অবস্থানকালে হঠাৎ খবর পান- লামাকাজিতে একজন নারীর লাশ নিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্স অনেকক্ষণ ধরে ঘুরাঘুরি করছে। পরে সেটি স্থানীয় জনতা আটক করে রাখেন।
খবর পেয়ে মখলিছুনের বাবা আব্দুস সালাম ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার আবুল কালাম লামাকাজিতে গিয়ে মখলিছুনের লাশ শনাক্ত করেন।
ঘটনাস্থলে থাকা বিশ্বনাথ থানার এস.আই অলক দাস সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমানে আমরা লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করছি। ওসমানী হাসপাতাল থেকে ওই নারীর লাশ এখানে কীভাবে এলো, সে বিষয়ে এখনও বিস্তারিত বলতে পারছি না।
তিনি বলেন, ওই নারীকে শুক্রবার রাতে তার বাবার ঘরে রক্তাক্ত ও বিবস্ত্র অবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় স্থানীয় রইছ আলী ও কমলা মিয়া নামের দুজনকে শুক্রবার রাতেই আটক করি আমরা। এর মধ্যে রইছ আলী নিজেকে ওই নারীর স্বামী দাবি করছে বলে তিনি জানান।
এব্যাপারে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, এঘটনায় দুই জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
বিয়ে করে জানলেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা, অতঃপর দুই বিয়াইয়ের কাণ্ড
বিশ্বনাথ :: দুই বিয়াই কমলা মিয়া ও রইছ আলী স্বামী পরিত্যক্তা নারী। বাবা দরিদ্র, তাই তিনি বেচে নেন ঝিয়ের কাজ। বাসায় বাসায় কাজ করেই দুই সন্তানের মুখে আহার যোগাতেন তিনি। একপর্যায়ে কাজ নেন সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি বাজারের নৈশপ্রহরী কমলা মিয়ার বাসায়।
কমলা মিয়া লামাকাজি ইউনিয়নের মির্জারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা। তার বাসায় বেশ কিছুদিন কাজ করেন ওই নারী। এর সুবাধে কমলা মিয়া তার সত্তরোর্ধ্ব বিয়াই উপজেলার সত্তিশ গ্রামের রইছ আলীর সঙ্গে তাকে বিয়ে দেয়ার ফন্দি আটেন। নানা প্রলোভন দেখিয়ে বৃদ্ধের সঙ্গে বিয়ে দেয়া হয় তাকে।
বিয়ের চার দিনের মাথায় রইছ আলী জানতে পারেন, তার নব-বিবাহিতা স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। পরে দুই বিয়াই মিলে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গর্ভপাত করান তার। হাসপাতাল থেকে ফেরার পর রইছ আলী ওই নারীকে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এতে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
এদিকে নারীর শারীরিক অবস্থা আরও নাজুক হয়ে যায়। পরে গত ২০ আগস্ট শুক্রবার তাকে উদ্ধার করে পুলিশের সহায়তায় ফের হাসপাতালে পাঠান তার বাবা। ওইদিন রাতেই কমলা মিয়া ও তার বিয়াই রইছ আলীকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। জনসাধারণের প্রশ্ন, ওই নারীর এ অবস্থার জন্য দায়ী কে?
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ থানার ওসি গাজী আতাউর রহমান বলেন, পুলিশের সহায়তা ভিকটিমকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
অভিযুক্ত দুই বৃদ্ধ কমলা মিয়া ও রইছ আলীকে আটক করা হয়েছে। ভিকটিমের জবানবন্দি নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
বিশ্বনাথে পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তি না হওয়ায় হাইকোর্টের রুল জারি
বিশ্বনাথ :: বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তি না হওয়া গ্রামগুলোকে কেন পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তি করা হবে না এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট ৪ সপ্তাহের রুল জারি করেছে।
স্থানীয় সরকার পৌরসভা আইন ২০০৯ এর শর্তাবলী পূরণ করা স্বত্বে কেন ওই গ্রাম সমূহকে বিশ্বনাথ পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তি করা হবে না মর্মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় সচিব, সিলেটের জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালকসহ অন্যান্য বিবাদীদের উপর ৪ সপ্তাহের রুশ নিশি জারি করেছেন।
রিট পিটিশন শুনানিতে অংশ গ্রহন করেন সাবেক এর্টনি জেনারেল ও সিনিয়র আইনজীবি এ জে মোহাম্মদ আলী এবং ব্যারিষ্টার মোহাম্মদ আব্দুল হালিম কাফি।
এদিকে, বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়ন ও অন্যান্য ইউনিয়নের কতেক গ্রাম নিয়ে পৌরসভা গঠন সংক্রান্তে প্রকাশিত গেজেট তারিখ ৫-১২-২০১৯ইং কে চ্যালেঞ্জ ও সদর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের রজকপুর গ্রাম ৫নং ও ৬নং ওয়ার্ডের সকল সকল গ্রাম, পশ্চিম শ্বাসরাম, সরুয়ালা, সজন ভরত, একাভীম, ধীতপুর, কাইয়া কাইড়, আতাপুর, রহিমপুর, ভাটশালা, ইকবালপুর গ্রামের অধাংশ কাইয়া কাইড় বাজার বিশ্বনাথ পৌর সভায় অন্তর্ভুক্তির জন্য শেখ মো. আজাদ, সাহিদুর রহমান, ইউপি সদস্য শাহনেওয়াজ চৌধুরী সেলিম, শামীম আহমদ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে রীট পিটিশন নং ৪৯৪৬/২০২১ দায়ের করেন।
রীট পিটিশনটি গত ১২ আগস্ট ২০২১ইং বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লা’র কোর্টে শুনানী হয়।
শুনানী শেষে বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্তি না হওয়া গ্রামগুলোকে পৌরসভায় অন্তর্ভুক্তি করার জন্য রুল নিশি জারি করা হয়।