বৃহস্পতিবার ● ২৬ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » বরিশাল বিভাগ » ভোলা টাইমস অফিসে পুলিশী তল্লাশী : মাদকসহ সম্পাদক রাজিব গ্রেফতার
ভোলা টাইমস অফিসে পুলিশী তল্লাশী : মাদকসহ সম্পাদক রাজিব গ্রেফতার
ভোলা প্রতিনিধি :: ভোলায় পত্রিকা বিপনন কর্মী (হকারের) মাকসুদের উপর হামলা, পিটিয়ে হাত ভেঙে দেয়ার ঘটনায় পত্রিকা ভোলা টাইমস সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জিন্না (রাজিব)কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রাজিবের বিচার দাবিতে গতকাল বুধবার মানববন্ধন বিক্ষোভ মিছিল করেছে জেলা সংবাদপত্র হকার্স ইউনিয়নের সদস্যরা। আহত হকার্স মাকসুদের দায়ের করা মামলায় পুলিশ মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টায় রাজিবকে গ্রেফতার করে। একই সঙ্গে রাজিবের বিরুদ্ধে ভিওআইপি ব্যবসা, মাদকসহ নানা অভিযোগ থাকায় পুলিশ বুধবার আদালতের সার্চ ওয়ারেন্টের আদেশে বিকালে রাজিবের বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে বিদেশি মদের বোতল, চোলাই মদ ও ইয়াবা সেবনের সরঞ্জাদি জব্ধ করে।
এ সময় জব্ধ করা হয় চারটি ল্যাবটপ, দুটি মনিটরসহ বিপুল পরিমান ইলেকট্রনিকস যন্ত্রাংশ। এ ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে আরো একটি মামলা করা হয় বলে জানান ওসি এনায়েত হোসেন। এদিকে রাজিবের এমন অপকর্মের দায় নিতে নারাজ ভোলার সংবদপত্র সম্পাদক পরিষদ। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোন অপরাধীর পক্ষে তারা নেই। যারা সংবাদ পত্রের জগত কুলষিত করে। তাদের শাস্তি হওয়া প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন।
এর আগে রাজিব তার বাবা ও মা’কে মারধর করে চার তলা বিশিষ্ট বাড়ি থেকে বের করে দেয়। এমন অভিযোগ তুলে ধরে রাজিবের বাবা শহরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সোলায়মান বাচ্চু পুলিশ সুপার বরাবর বিচার চেয়ে ছিলেন, বলে জানান পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার। ভোলা থানার ওসি এনায়েত হোসেন ও রাজিবের ঘনিষ্টজনরা জানান, রাজিবের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরে নানা অভিযোগ ছিল। বিদেশে (কুয়েতে) থাকা অবস্থায় অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসায় জড়িত থাকা, মাদকাষক্ত হওয়ায় জেল খাটা, ইয়াবাসহ আটক হওয়া এসব সব বিষয় পুলিশ তলিয়ে দেখছে। রাজিব দেশে এসে ভোলা টাইমস নামে একটি পত্রিকার সম্পাদক হয়ে প্রকাশনা শুরু
গতকাল সংবাদপত্র হকার্স সমিতির সভাপতি মোকলেসুর রহমান সুমন, ওই সংগঠনের সম্পাদক মো. মনির সংবাদ সম্মেলন করে জানান, স্থানীয় অনিয়মিত একটি পত্রিকার সম্পাদনার আড়ালে অবৈধ ব্যবসা করা হতো ওই অফিসে। বাড়ির মধ্যেই তার অফিস। রাত হলে সেখানে আসর বসে। অপরাধ জগতের লোকজন ওই আসরে যোগ দেয়। আহত মাকসুদ জানান, তার প্রস্তাবিত অবৈধ কাজ করতে রাজি না হওয়ায়, তাকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়।
এদিকে রাজিবের এমন ঘটনায় তার পক্ষে অবস্থান নেননি স্থানীয় ভাবে প্রকাশিত অপর ৪টি পত্রিকার সম্পাদকরা। তারা জানান, কোন অপকর্মের দায় তারা নিতে পারেন না। অনেকে যোগ্যতা ছাড়াই পত্রিকা প্রকাশ করেন, তা বন্ধ করারও দাবি জানান সম্পাদক পরিষদ। দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক মুহাম্মদ শওকাত হোসেন জানান সন্ত্রাসী ও অপরাধীর বিচার হওয়া প্রয়োজন । রাজিব সম্পাদক হওয়ার যোগ্যতা রাখে না। একই কথা জানান, দৈনিক বাংলার কন্ঠের সম্পাদক প্রেসক্লাব সভাপতি এম. হাবিবুর রহমান। এডভোকেট মো. সাহাদাত হোসেন শাহীন জানান, সাংবাদিক ও সংবাদ পত্রের আড়ালে কেহ অপরাধ জগতের সঙ্গে জড়িত থাকলে ওই ব্যক্তিই তার অপরাধের জন্য দায়ি থাকবেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রকৌশলী জানান, রাজিব তাকে প্রায় হুমকী দিয়ে মাসিক চাঁদা দেয়ার জন্য চাপ সৃস্টি করে ছিল।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে রাজিব গ্রেফতার হওয়ার পর সকাল পর্যন্ত তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আলোচিত মাদক চক্রের কয়েকজন তদবির চালিয়ে ছিল। এরা সংবাদপত্র হকার্সদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করে।
এদিকে রাজিবের বাড়ি ও অফিস তলাশীকালে অবৈধ জিনিসপত্র জব্ধ করার সময় পুলিশ তার স্ত্রীর বক্তব্য রেকর্ড করেন। রাজিব জানান, হাকার মাকমসুদ তার পত্রিকা বিক্রির টাকা না দেয়ায়, তাকে গালমন্দ করা হয়ে ছিল, মারধর করা হয়নি।