শুক্রবার ● ২৭ আগস্ট ২০২১
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » মিরসরাইয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা
মিরসরাইয়ে স্কুল ছাত্রীর আত্মহত্যা
আকতার হোসেন (চট্টগ্রাম) মিরসরাই প্রতিনিধি :: মিরসরাইয়ে মোহনা বেগম (১৬) নামে একজন স্কুল ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।
গতকাল ২৬ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে উপজেলার মঘাদিয়া ইউনিয়নের ফকির পাড়া এলাকায় প্রেম ঘটিত বিষয় নিয়ে পারিবারিক কলহের জেরে শোবার ঘরে সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। সে ঐ এলাকার নুরুল আলম খোকনের মেয়ে এবং আবুতোরাব উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মোহনা বেগম ঘরের সিলিংয়ের সাথে গলায় দঁড়ি প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করে। শুক্রবার সকালে পরিবারের লোকজন তার রুমের দরজা ধাক্কালে সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙ্গে সিলিংয়ের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। আজ শুক্রবার ২৭ আগস্ট সকালে খবর পেয়ে মিরসরাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করেছে।
এবিষয়ে মিরসরাই থানার ওসি মজিবুর রহমান জানান, মঘাদিয়া ইউনিয়নের ফকিরপাড়া এলাকা থেকে এক স্কুলছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) পাঠানো হয়েছে। প্রেম ঘটিত কারণে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এবিষয়ে তদন্ত চলছে।
মিরসরাইয়ে সিএনজি অটোরিকশা চালককে পিটিয়ে হত্যা করলো শ্যালক
মিরসরাই :: মিরসরাইয়ে নুর উদ্দিন (৩৮) নামে সিএনজি অটোরিকশা চালককে পিটিয়ে হত্যা করেছে শ্যালক ও তার সাঙ্গরা।
গতকাল ২৬ আগষ্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের জয়পুর পূর্ব জোয়ার শুভপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন জালিয়াঘাট বালুমহাল এলাকায় শাহাদাত এর কলাবাগানে সিএনজি অটোরিকশা চালক নুর উদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে শ্যালক ও তার সাঙ্গরা। নিহত সিএনজি অটোরিকশা চালক হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের রসুলপুর গ্রামের রাঙ্গাটিলা এলাকার সিরাজ মিয়ার পুত্র। সে মেহেদীনগর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। নিহত সিএনজি অটোরিকশা চালক নুর উদ্দিন তিন পুত্র সন্তানের জনক এবং করেরহাট টু বারইয়াহাট সিএনজি অটোরিকশা চালক সমিতি (নং-২৪১১)’র সদস্য। নিহত নুর উদ্দিনের পুত্র মোহাম্মদ ঈমন (১৪) এবং তার শ্বাশুড়ির বক্তব্যের সূত্রে জানা যায়, ১৫ বছর আগে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার গোপাল ইউনিয়নের নিজকুঞ্জরা সমিতির বাজার এলাকার দরবেশের বাড়িতে বিয়ে করে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের রসুলপুর গ্রামের রাঙ্গাটিলা এলাকার সিরাজ মিয়ার পুত্র সিএনজি অটোরিকশা চালক নুর উদ্দিন। গত ৬মাস আগে নুর উদ্দিন এবং তার শালিকার অবৈধ সম্পর্কের ফলে শালিকা একটা মৃত সন্তান প্রসব করে।
এঘটনায় নুর উদ্দিন দোষী সাব্যস্ত হয়। উক্ত ঘটনায় নুর উদ্দিনকে পারিবারিক শালিশের মাধ্যমে ২ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করে এবং নুর উদ্দিন ১লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে সম্মত হয়। শালিসি বৈঠকের ৫ দিন পর তার শ্বশুর বাড়ি থেকে নুর উদ্দিনের শ্যালক সাহাব উদ্দিনের সিএনজি অটোরিকশা চুরির ঘটনা ঘটে। উক্ত ঘটনায় নুর উদ্দিনকে দোষারোপ করলেও সে সিএনজি অটোরিকশা চুরির বিষয়টি অস্বীকার করে। শালিকার সাথে অবৈধ সম্পর্কের মিমাংসার পাওনা ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা দীর্ঘ ৬ মাসে পরিশোধ না করা এবং সিএনজি অটোরিকশা চুরির বিষয়টি নিয়ে শ্যালক মিজানুর রহমান, সাহাব উদ্দিন ও তার শ্বশুর বাড়ির সাথে চরমে দ্বন্দ্ব এবং মনোমালিন্য চলছিল। গত ১ সপ্তাহ আগে নুর উদ্দিনের বড় ছেলে ঈমনকে তার শ্যালক মিজান শুভপুর বালুঘাটে বালু উত্তোলনের ড্রেজারে এক সপ্তাহ কাজ করার পর পারিশ্রমিক হিসেবে মাত্র ৫শ টাকা দেয়। এই নিয়ে নুর উদ্দিনের সাথে শ্যালক মিজান মুঠোফোনে বাকবিতন্ডা হয়।
এসব কারণে নুর উদ্দিনের উপর শ্যালক মিজান ক্ষিপ্ত ছিলেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুর বারোটা দিকে বারইয়াহাট পৌরসভার অলংকার স্টোরের সামনে থেকে থেকে একব্যক্তি রিজার্ভ ভাড়ায় সিএনজি অটোরিকশা চালক নুর উদ্দিনকে কৌশলে শুভপুর বালুমহাল নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে শ্যালক মিজান ও তার বন্ধু ইকবাল সহ ৫/৬ জনে মিলে নদীর ওপারে নিয়ে বেধড়ক মারধর করলে একপর্যায়ে নুর উদ্দিন হুঁশ হারিয়ে অচেতন হয়ে পড়লে তার সাঙ্গরা পালিয়ে গা ঢাকা দেয়। এমতাবস্থায় শ্যালক মিজান তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তান নগর নিয়ে আসলে মিজানের গতিবিধি সন্দেহ হলে হাসপাতাল থেকে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশ তাকে আটক করে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তান নগর থেকে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এবিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ নূর হোসেন মামুন বলেন, নিহত নুর উদ্দিনের মা লায়লা বেগম বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করেন এবং হত্যাকান্ডে জড়িত থাকায় অভিযুক্ত শ্যালক মিজানকে আটক করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।